কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকের ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার অনন্তপুর বড়াইরতল এলাকার আন্তর্জাতিক সীমানা পিলার ৯৪৬-এর সাব পিলার ২ এর পাশেই।
সোমবার (২৭ জানুয়ারি) বিকেলে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, ওই এলাকার মৃত জমির উদ্দিনের ছেলে আব্দুল মালেক তার পৈত্রিক সূত্রে পাওয়া ৫ শতক জমিতে স্ত্রী, ছেলে দুলাল ও মিলনসহ দীর্ঘদিন ধরে খড়ের ঘর তুলে বসবাস করছিলেন। জীবিকার তাগিদে ঢাকার একটি গার্মেন্টস ফ্যাক্টরীতে কাজ করেন মালেক মিয়া। অনেক কষ্টে সঞ্চিত অর্থ দিয়ে তিনি একটি টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ শুরু করেন। এরই মধ্যে তিনটি কক্ষের ইটের গাথুনীর কাজ শেষের দিকে ছিল।
কিন্তু গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে ১৩৮ ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) ঝিকরী বিওপি’র সদস্যরা ঘর নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দেন। তাদের দাবি, নোম্যান্স ল্যান্ডে কোনো পাকা স্থাপনা নির্মাণ করা যাবে না।
মালেক মিয়া তার স্ত্রী, সন্তান, বাবা ও ছোট ভাইসহ জীবিকার জন্য ঢাকায় কাজ করলেও গ্রামের এই একমাত্র জমিতেই তাদের বসবাস। ঘরের নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে তারা খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
গার্মেন্টস কর্মী দুলাল মিয়া জানান, আমাদের বাড়ি করার মতো আর কোনো জমি নেই। অন্য কোথাও জমি কিনে ঘর করার সামর্থ্যও নেই। তাই কষ্টের টাকা দিয়ে টিনশেড ঘর তৈরি করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু বিএসএফ বাধা দেওয়ায় তা আর সম্ভব হচ্ছে না। শীতের এই দিনে আমরা অনেক কষ্টে ঝুপরি ঘরে দিন কাটাচ্ছি।
কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. মনিরুজ্জামান মানিক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের কারণে বিএসএফ ঘর নির্মাণ করতে দিচ্ছে না। আপাতত নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে।
এ বিষয়ে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি অনন্তপুর বিওপি’র নায়েক সুবেদার সফিকুল ইসলাম বলেন, সীমান্ত থেকে আনুমানিক ৭০ গজের ভেতরে ঘর নির্মাণ হওয়ায় বিএসএফ বাধা দিয়েছে। এ বিষয়ে আমরা বিএসএফের সঙ্গে পতাকা বৈঠক করেছি।
কেকে/এএম