বাণিজ্যমেলা নামের অধিক পরিচিত ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার মেয়াদ বৃদ্ধির জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানী উন্নয়ন ব্যুরো বরাবর আবেদন জানিয়েছে মেলায় অংশ নেয়া ২৫৬টি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের মালিকরা।
সোমবার (২৭ জানুয়ারী) প্রতিষ্ঠানের কর্ণধারদের স্বাক্ষর সম্বলিত এ সংক্রান্ত আবেদনটি মন্ত্রনালয়, ব্যুরো ও মেলা কতৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
মেলায় অংশ নেয়া বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলাপকালে জানা যায়, প্রথমদিকে বেশ কিছু দিনের টানা শৈত্যপ্রবাহসহ নানাবিধ কারনে আশানুরূপ ক্রেতা পাননি বলে দাবী করেছেন অনেক স্টল মালিক। তাদের দাবী ইপিবি আনুমানিক ৬০ লাখ দর্শক মেলায় আসবে বলে প্রচার করায় তারা উচ্চমূল্যে স্টল বরাদ্দ নিয়েছিলেন। কিন্ত বাস্তবে এক চতুর্থাংশ দর্শকও মেলায় এসেছে কিনা এ নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এই শ্রেনীর স্টল মালিকরা। তাদের দাবীর সূত্রধরে মেলায় টিকিট বিক্রীর দায়িত্বে থাকা ইজারাদার প্রতিষ্ঠানের একজনের সাথে কথা বলে এমন ব্যবসায়ীদের দর্শক কম হওয়ার তথ্যের সত্যতা পাওয়া যায়।
দরখাস্তকারীদের মতে বিভিন্ন গণমাধ্যম বাসামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যা কিছুই প্রকাশ করা হোক না কেন দুর্ভাগ্যজনকভাবে মেলায় সর্বসাকুল্যে ১৩ থেকে ১৪ লাখ লোকের সমাগম ঘটেছে। ফলশ্রুতিতে তারা সকলে বড় অংকের লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন এবং মুনাফা দূরে থাক মূলধন হারাতে বসেছেন। বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে মেলার মেয়াদ কমপক্ষে তিন সপ্তাহ বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছেন মেলায় অংশগ্রহণকারীরা ব্যবসায়ী সমাজ।
এক শ্রেনীর স্টল মালিক হতাশা প্রকাশ করে বলেন, কেবল শুক্রবার বা ছুটির দিনে দর্শকসমাগম থেকে এক শ্রেনীর সংবাদ মাধ্যম ও ইউটিউব ক্রিয়েটার ‘উপচে পড়া ভীড়’ কিংবা ‘বেচা-কেনা জমে উঠেছে’, এ জাতীয় কথা ছড়িয়ে প্রতি বছর স্টলের মূল্য বাড়িয়ে দেয়। তবে রবি থেকে বৃহস্পতিবারের ক্রেতাসমাগম বা বিক্রী নিয়ে কোন প্রতিবেদন বা রীল করে না। ফলে প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসে না।
তবে মেলায় বিআরটিসি’র বাস সেবা ও অনলাইন টিকেট সেবা নিয়ে সন্তষ্টি প্রকাশ করেছেন সাধারণ দর্শকরা। এর মধ্যে বিগত বছরগুলোতে বিআরটিসি বাস থাকলেও অনলাইন টিকেট সেবা এবারই প্রথম চালু হলো। ঘরে বসে অনায়াসে অনলাইনে টিকেট কাটতে সক্ষম হলেও মেলার প্রবেশ গেইটে এসে টিকেট কাটতে গিয়েই ঝামেলায় পড়ছেন অনেকে। এ বিষয়েটিকে ইজারাদারী প্রতিষ্ঠান ডজি ই-পে কর্তৃপক্ষের দাবী তাদের প্রযুক্তি একই সময়ে বহু ক্রেতার অনুরোধ রক্ষা করে যার যার মোবাইলে ই-টিকেট পাঠাতে সক্ষম। কিন্ত মেলা প্রাঙ্গনে বা আশেপাশে থাকা মোবাইল কোম্পানীর টাওয়ার সমূহ একই সময়ে একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক মোবাইল ফোন থেকে পাঠানো অনুরোধ গ্রহন করে সেবা দিতে পারে। ফলে ছুটির দিনে বিকাল থেকে মেলার সামনে দাঁড়িয়ে একযোগে সবাই অনলাইন টিকেট কাটার চেষ্টা করলে মোবাইল কোম্পানীর টাওয়ার তা গ্রহন করতে পারে না। তখন আর ইজারাদার কোম্পানীর কিছু করার থাকে না। সে জন্য সবাইকে বাসায় বসে অনলাইন টিকেটকরা ও তাদের জন্য লালগালিচা বিছানো ভিআইপি গেইট দিয়ে প্রবেশের অনুরোধ জানায় ডিজি-ই-পে কর্তৃপক্ষ।
কেকে/ এমএস