লুটপাটকারী ফ্যাসিবাদী সরকারের দোষরদের দখলে চাম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১২ টির বেশি দোকান ঘর।বান্দরবানের লামা উপজেলার আজিজনগর ইউনিয়নের সুনামধান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান চাম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষা,সাংস্কৃতি, খেলাধুলা সর্বক্ষেত্রে এগিয়ে থাকা প্রতিষ্ঠানটি ১৯৬০ সালে গুটিকয়েক শিক্ষানুরাগী ব্যক্তির হাতে গড়ে উঠে বিদ্যালয়টি। ৩০৭ নং চাম্বি মৌজার ১৮ নং খতিয়ানের দাগ নং ১৯২,১৯৩ দাগাদির আন্দর ০.৯৮ শতক জমির উপর তৈরি করা হয়েছিল বিদ্যালয়টি,বর্তমানে ১৫০০জনের বেশি ছাত্রছাত্রী ও ১৪ জনের শিক্ষক মন্ডলী নিয়ে চলছে এই বিদ্যালয়।
যুগের পরিবর্তনের সাথে তালমিলিয়ে আজ বহুতল ভবনে ভরপুর বিদ্যালয়টি। বহুতল ভবন আর শিক্ষকের পরিবর্তন হলেও বিদ্যালয়ের জমির উপর নির্মিত পাকা, সেমিপাকা জবর-দখলকৃত দোকানঘরগুলো আজও ফ্যাসিবাদী সরকারের দোষর আওয়ামিলীগ নেতা সাবেক চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিনের ভগ্নিপতি এইচ এম আবু জাহাঙ্গীর চৌধুরী প্রকাশ( কালা জাহাঙ্গীর) এর দখলে।৫ আগস্টের পর চেয়ারম্যান জসিম উদ্দিন পলাতক হলে ও উদ্বার হয়নি বিদ্যালয়ের জমি।
বিদ্যালয় সূত্রে জানাযায়,দখলকৃত জমি উদ্ধারের জন্য প্রধান শিক্ষক মরহুম ইকবাল আহসান সাহেব বাদী হয়ে ৯৬/৯৭ সালে একটি বে-দখল উদ্ধারের মামলা করেন। তিনি মারা যাওয়ার পর বর্তমান দায়িত্বরত প্রধান শিক্ষক সাবিনা ইয়াসমিন মামলা পরিচালনা করে আসছিলেন। ভাগ্যের পরিহাস, রাজনৈতিক অকপট, আর বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির রোষানলে শেষ পর্যন্ত মামলাটি বিজ্ঞ আদালত খারিজ করে দেয়। সভাপতির নেত্রীত্বে তৈরি করা হয় দোকান।
হাল ছাড়েনি বর্তমান প্রধান শিক্ষক, বিদ্যালয়ের জমি উদ্ধারের জন্য তাহার তদবির চলছে বিভিন্ন দপ্তরে। উপজেলা, জেলা শিক্ষা অফিস, প্রশাসনিক কর্মকর্তাসহ সকলেই বিষয়টি অবগত আছেন- কিন্তু সবাই যেন দখলবাজদের কাছে জিম্মি। তাই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জমি দখলবাজদের হাত থেকে উদ্ধার করে প্রতিষ্ঠানের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া এলাকার জনগণ ও প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন প্রধান শিক্ষিকা।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা বলেন, বিদ্যালয়ের প্রায় ০.৩০ শতক জমি দখলদারদের হাতে। তাহারা দোকান তৈরি করে তাতে ব্যবসা করছে। দখলদারদের ৩/৪ জন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সামান্য ভাড়া দিত কিন্তু ৮/৯ বছর থেকে আর কোনো ভাড়া দেয়নি সবার সাথে বিদ্যালয় কতৃপক্ষের চুক্তিনামা রয়েছে। বাকিরা কখনও ভাড়া দেয়নি। জসিম উদ্দিন চেয়ারম্যান সভাপতি থাকাকালে তাহার বোন জামাই আবু জাহাঙ্গীর ৪টি প্লট দখল করে দোকান তৈরি করে। তাছাড়া যুবলীগের অফিস, আব্দুল লতিফ, নুরুল আবছার,ইসহাক ভুঁইয়াগং দখলে আছেন।
চাম্বি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জায়গায় নির্মিত দোকান সমূহের মালিক/উপ মালিকের বর্তমান ভাড়াটিয়ারা হলো ০১/মোঃ কামাল হোসেন (স্কুল কতৃপক্ষের)০২/এইচ এম আবু জাহাঙ্গীর চৌধুরী(চার দোকান)ভাড়াটিয়ারা হলো ১/মোঃ আবুল কাশেম,২/মোঃ শাহ আলম,৩/দেলোয়ার হোসেন,৪/মোঃ হারুন)০৩/জাহানারা বেগমের ভাড়াটিয়া মোঃ ফেরদৌস,০৪/যুবলীগ/যুব উন্নয়ন সমিতির অফিসের ভাড়াটিয়া মোঃ ফেরদৌস,মোতালেব হোসেন,০৫/
মো,জকরিয়া(নিজ)০৬/আব্দুল লতিফ ও তারভাড়াটিয়া মো, লকিয়ত উল্লাহ,০৭/মোঃ নাজিম উদ্দিনের ভাড়াটিয়ারা লকিয়ত উল্লাহ
০৮/রফিক আহমদের স্ত্রী আরেফা খাতুনের ভাড়াটিয়া মোঃ জহিরুল ইসলাম,০৯/বিএনপি'র কার্যালয় পরিত্যক্ত অবস্থায় আছে।
দখলদার আব্দুল লতিফ জানান,দীর্ঘ বছর আগে খালি জায়গায় আমরা দোকান ঘর নির্মাণ করে দখলে আছি এগুলো অনেক লম্বা কথা পরে বলবো।
প্রধান শিক্ষকের আবেদনের জেরে লামা পরিসংখান কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম জানান, তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পর সরেজমিনে বিদ্যালয়ের জবরদখলের তদন্ত কাজ শেষ করেছি তাতে জবর দখলের সত্যতা মিলেছে আমি তদন্ত রিপোর্ট উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন এইচ এম আবু জাহাঙ্গীর চৌধুরী প্রকাশ( কালা জাহাঙ্গীর)বিএনপির সময়ে বিএনপি পরিচয় আর আওয়ামিলীগের সময়ে আওয়ামিলীগ পরিচয়ে বিদ্যালয়ের দোকান ঘর দখলে আছেন।
প্রধান শিক্ষিকা সাবিনা ইয়াছমিন জানান, দীর্ঘ ৩০ বছরেও উদ্বার হয়নি বেদখল হওয়া বিদ্যালয়ের জমি, মামলা, অভিযোগ আর কত দিবো প্রভাবশালীদের হুমকি আর ভয়ভীতির কাছে আমরা অসহায়।
লামা উপজেলার নির্বাহী অফিসার (অ:দা:) ও সহকারী কমিশনার(ভূমি) রুপায়ন দেব জানান, তদন্ত রিপোর্টে সত্যতা পাওয়া গেলে বিধিমোতাবেক জমি উদ্বারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/ এমএস