বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বাকৃবি) ‘ইন্টারডিসিপ্লিনারি পিএইচডি গবেষণার জন্য পরিকল্পনা ও প্রোটোকল তৈরি’ শীর্ষক পাঁচ দিনব্যাপী কর্মশালা শুরু হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৮ জানুয়ারি) সকালে বাকৃবির মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের কনফারেন্স রুমে কর্মশালার উদ্বোধনী অনুষ্ঠিত হয়।
ডেনমার্কের ডানিডার অর্থায়নে পরিচালিত ‘বাংলাদেশে কম বয়সী নারী ও বালিকাদের স্বাস্থ্যকর জীবনের জন্য জলবায়ু-সহনশীল জলজ খাদ্য ব্যবস্থা’ (একোয়াফুড) প্রকল্পের আওতায় এই কর্মশালা আয়োজিত হয়েছে। কর্মশালায় চারজন পিএইচডি ফেলোকে ইন্টারডিসিপ্লিনারি গবেষণার জন্য প্রস্তুত করা হবে, যাতে তারা মাঠ পর্যায়ের গবেষণা কার্যক্রম সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারেন।
মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মো. রফিকুল ইসলাম সরদারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বাকৃবির উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্র বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মো. শহীদুল হক, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক ড. জোয়ার্দ্দার ফারুক আহমেদ, বাউরেস-এর পরিচালক অধ্যাপক ড. এম. হাম্মাদুর রহমান এবং যুক্তরাজ্যের এবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. বাউকজে দে রুজ।
মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্পের প্রধান গবেষক ডেনমার্কের কোপেনহেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ড. নান্না রুজ। এ সময় বাকৃবির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক ও প্রকল্প সংশ্লিষ্ট গবেষকরা উপস্থিত ছিলেন।
বাকৃবির একোয়াকালচার বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাহফুজুল হক বলেন, বাংলাদেশে মৎস্য খাতের তিনটি প্রধান উপাদান অভ্যন্তরীণ ক্যাপচার ফিশারিজ, একোয়াকালচার এবং সামুদ্রিক ক্যাপচার ফিশারিজ জাতীয় জিডিপিতে ২ দশমিক ৮ শতাংশ অবদান রাখছে। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে উপকূলীয় এলাকার দরিদ্র জনগোষ্ঠী বিভিন্ন সমস্যায় পড়ছে, যার মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তাহীনতা ও অপুষ্টি উল্লেখযোগ্য।
তিনি বলেন, এই প্রকল্পের লক্ষ্য জলজ খাদ্য উৎপাদন এবং মানুষের পুষ্টি ও স্বাস্থ্য উন্নয়নের মধ্যে সম্পর্ক স্থাপন করা। এ উদ্দেশ্যে বাকৃবির একোয়াকালচার বিভাগ এবং নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মাৎস্যবিজ্ঞান বিভাগে চারজন পিএইচডি শিক্ষার্থীকে গবেষণার জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে।
বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, একসময় বাংলাদেশে দেশি মাছের প্রাপ্যতা বেশি থাকলেও বর্তমানে তা অনেক কমে গেছে। তিনি বলেন, সিনিয়র গবেষকদের দায়িত্ব হচ্ছে পিএইচডি শিক্ষার্থীদের জন্য গবেষণার সুযোগ তৈরি করা, যাতে তারা ভবিষ্যতে দেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি আরো বলেন, মাছের খাদ্যাভ্যাস, পুষ্টি এবং জৈব নির্দেশক পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলো নিয়মতান্ত্রিকভাবে গবেষণা করে উপস্থাপন করা প্রয়োজন। এই গবেষণা দেশের মৎস্য খাতের উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
কর্মশালাটি জলজ খাদ্যের উন্নয়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
কেকে/এএম