নীলফামারী জেলার ডোমার উপজেলার হরিনচড়া ইউনিয়নের আটিয়াবাড়ী গ্রামে জমি নিয়ে পারিবারিক কোন্দলের জেরে ছেলে অতুল চন্দ্র রায়ের (২৮) কোদালের আঘাতে গুরুতর আহত হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন বাবা অনিল চন্দ্র রায় (৬০)।
গত ২১ জানুয়ারি দুপুরে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই দুর্ঘটনা ঘটে। বাড়িতে একপর্যায়ে অনিল চন্দ্র ও তার ছোট ছেলে অতুল চন্দ্রের মধ্যে কথা-কাটাকাটি শুরু হয়। ঝগড়ার সময় অতুল কোদাল হাতে বাবার দিকে এগিয়ে যায়। অনিল চন্দ্র তাকে থামানোর চেষ্টা করলে অতুল মাথায় কোপ দেয়।
রক্তাক্ত অবস্থায় মাটিতে লুটিয়ে পড়েন অনিল। পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে উদ্ধার করে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করান। প্রায় ছয় দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর সোমবার (২৭ জানুয়ারি) রাত ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
অতুলের স্ত্রী নিপা রায় বলেন, আমি তখন ছাগলের বাচ্চা দেখতে বাইরে গিয়েছিলাম। ফিরে এসে দেখি ঘরের ভেতর শ্বশুর প্রচুর রক্তক্ষরণে মাটিতে পড়ে আছেন। স্বামী অতুল কোদাল হাতে দাঁড়িয়ে ছিল। অথচ আমি কিছু না করলেও আমাকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
অতুল চন্দ্র তার অপরাধ স্বীকার করে বলেন, বাবা প্রায়ই আমাকে অত্যাচার করতেন এবং বাড়ি থেকে বের হয়ে যেতে বলতেন। সেদিন সকালে আমাদের মধ্যে ঝগড়া হয়। বাবা আমাকে মারতে আসলে আমি হাতে থাকা কোদাল দিয়ে মাথায় আঘাত করি।
ঘটনার দিন রাতেই বড় ছেলে অনুকুল চন্দ্র রায় বাদী হয়ে ছোট ভাই অতুল ও তার স্ত্রী নিপা রায়কে আসামি করে থানায় হত্যা চেষ্টার মামলা করেন।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আঙ্গুর ইসলাম মিয়া জানান, প্রাথমিকভাবে মামলাটি হত্যাচেষ্টার অভিযোগে দায়ের করা হয়েছিল। তবে অনিল চন্দ্রের মৃত্যুর পর এটি হত্যা মামলায় রূপান্তরিত হয়েছে।
ইউপি চেয়ারম্যান রাসেল রানা বলেন, ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। বাবা-ছেলের এই মর্মান্তিক দ্বন্দ্ব সমাজের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শিক্ষা হয়ে থাকবে।
ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায়, রক্তমাখা কোদাল ঘরের এক পাশে পড়ে আছে। স্থানীয়রা এই ঘটনায় ক্ষোভ ও শোক প্রকাশ করেছেন।
কেকে/এএম