বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আমরা মনে করি গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয়, তাহলে সংকট আরো বাড়বে। এই সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্বাচিত একটি সরকার দরকার।
মঙ্গরবার (২৮ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নীলফামারীতে একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, সরকারের কাছে আমাদের প্রত্যাশা, যে অধিকার মানুষের ছিল না ভোটাধিকার, সেই অধিকার যত দ্রুত সম্ভব আমরা প্রত্যাশা করি ফেরত দিয়ে এ দেশে একটি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। রাস্তার আন্দোলনে যেটি আমাদের নেতা (তারেক রহমান) বলেছিলেন যে ফয়সালা হবে কোথায়। এই রাজপথেই ফয়সালা হয়েছে। ভবিষ্যতে আমরা মনে করি গণতন্ত্রের প্রত্যাশা যদি পূরণ না হয় তাহলে সংকট আরো বাড়বে। এই সংকটকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নির্বাচিত একটি সরকার দরকার।
তিনি আরো বলেন, আমাদের সরকারের কাছে চাওয়া। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে মধ্যে আনা, যেন মানুষ স্বাভাবিকভাবে জীবন ধারণ করতে পারে। আইনশৃঙ্খলা স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা। এ বিষয়গুলো আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। ভবিষ্যতে এটা মীমাংসা করা যায় কী করে বিএনপির সে দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায়। করতে চায় বলে আমরা রাস্তায় নেমেছিলাম।
দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রামের ক্ষেত্রে তিনি বলেন, আমরা দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম করেছি ১৬-১৭ বছর। গণতন্ত্রের পিপাসার প্রত্যাশায়, স্বৈরাচারকে পতন ঘটিয়ে, ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়ে বাংলাদেশে এখন জঞ্জাল মুক্ত হওয়ার পথে আছে। এই পরিস্থিতিতে আমরা চাইছি যাতে বাংলাদেশে সঠিক, স্বাভাবিক, গ্রহণযোগ্য ও অংশীদারিত্বমূলক একটি নির্বাচন হয়। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের জনগণ তার পছন্দের দল এবং প্রার্থীকে নির্বাচিত করবে এবং এই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক সরকার তৈরি হবে যারা দেশ পরিচালনা করবে।
দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, হাজার হাজার মানুষ গুম খুন নিখোঁজ হয়েছে এই দেশে গণতন্ত্রের প্রত্যাশায়। ‘৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে, নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থান হয়েছে, সর্বশেষ ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান। ছাত্র-জনতা রক্ত দিয়ে দেশকে ফ্যাসিবাদ মুক্ত করেছে। এখন বাংলাদেশের প্রত্যাশা মানুষের সুখ স্বাচ্ছন্দের। কৃষক শ্রমিক মেহনতি মানুষ একটু স্বস্তির সঙ্গে বসবাস করতে চায়, শ্রমিক তার অধিকার চায়, সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে জীবন যাপন করতে চায়। সেই জায়গায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল তার নেতা জনাব তারেক রহমান সংগঠনকে মানুষের প্রত্যাশা পূরণের জন্য পূর্বের মতোই মানুষের পাশে দাঁড় করাতে চায়। সেই লক্ষেই আজকের এই সভা। এই সভা থেকেই আমরা আগামী দিনের যে কর্মসূচি সেই কর্মসূচি গ্রহণ করব।
নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবাই নির্বাচন চাচ্ছে যৌক্তিক সময়ের মধ্যে সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় সংস্কার করে। অর্থাৎ সংস্কার আর নির্বাচনের মধ্যে কোনো সংঘাত নেই। জামায়াত-বিএনপির মধ্যে সংঘাত নাই। একটি ভালো নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় গ্রহণ করার জন্য, অতিরিক্ত সময় যাতে ব্যয় না হয়।
বিএনপির নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতির ব্যাপারে বলেন, ১৬ বছর ধরে বিএনপি মুখিয়ে আছে একটি গ্রহনযোগ্য নির্বাচনে অংশগ্রহনের জন্য। সেহেতু এখন নতুন কোনোভাবে প্রস্তুতির প্রয়োজন নেই। ১৬ বছর ধরে আমাদের একটি নির্বাচনের দাবি যাতে মানুষ ভোট দিতে পারে।
সাংগঠনিক সভার অংশগ্রহনের বিষয়ে তিনি জানান, সংগঠনের সার্বিক পরিস্থিতি কী সেটা দেখা। সংগঠনকে তৈরি করা। সংগঠনকে শক্তিশালী করা ও ঐক্যবদ্ধ করা। সমস্যাগুলোকে চিহ্নিত করা, সমস্যাগুলোকে সমাধান করা।
সভায় বক্তৃতা দেন প্রধান বক্তা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, বিশেষ অতিথি সহ সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক।
অধ্যাপক আমিনুল ইসলাম, জেলা বিএনপির সভাপতি আ.খ.ম আলমগীর সরকারের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা দেন নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী শামীম, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জহুরুল আলম প্রমুখ।
কেকে/এএম