হাজার হাজার মধুপ্রেমীদের আগমনে প্রাণের উচ্ছ্বাসে জমে উঠেছে সাগরদাঁড়ির মধুমেলা। কপোতাক্ষ পাড়ের বৃহৎতম মেলা এখন শিশু, কিশোর,যুবক, যুবতীও বৃদ্ধদের মেলায় পরিণত হয়েছে।
আধুনিক বাংলা কাব্যের রূপকার অমিত্রাক্ষর ছন্দের জনক ও সনেট প্রবর্তক মহাকবি মাইকেল মধুসূদন দত্তের ২০১তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষ্যে সপ্তাহব্যাপী মধুমেলা ২৪ জানুয়ারি থেকে শুরু হয়রছে। চলবে ৩০ জানুয়ারি পর্যন্ত।
হাজার-হাজার মধুপ্রেমীদের পদচারণায় মুখরিত মেলা প্রাঙ্গণ। মধুমেলা মাঠে কঠোর নিরাপত্তা বলয় রয়েছে। সিসিটিভি ক্যামেরার মাধ্যমে সার্বক্ষণিক মনিটারিং করা হচ্ছে। উন্মুক্ত মধুমঞ্চে প্রতিদিন চলছে আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, নাটক ও যাত্রাপালা মেলাকে আকর্ষণীয় করে তুলতে রয়েছে বিজ্ঞান ভিক্তিক কৃষি মেলা, সার্কাস, যাত্রা, যাদু, পুতুল নাচ, মৃত্যুুকুপ, ডাম্পিং নাচ, নাগরদোলা, রকমারি স্টলসহ ১৫৭ টি বড় স্টল।
এছাড়া বিভিন্ন খাবারের দোকানসহ শত শত ছোট ছোট বিভিন্ন পসরার দোকান। হস্ত শিল্প ও শিশুদের বিনোদনের সকল ব্যবস্থা রাখাও হয়েছে। তরুণ-তরুণীরা সেলফি জোনে ছবি তুলছে। প্রতিদিন মধুমঞ্চে থাকছে কবিদের কবিতা আবৃত্তি, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কবির জীবনীর ওপর আলোচনা।
মেলার মাঠে সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে শিশুদের খেলনা ও বিভিন্ন সৌখিন-শোপিস জাতীয় দ্রব্যাদি। বসে নেই চুড়ি, ফিতেসহ নারীদের সাজসজ্জার পসরা সাজিয়ে বসা কসমেটিক্স দোকানিরা। রেশমি চুড়ি, নাকের ফুল, কানের দুল আর গলার মালার বাহারি প্রদর্শণী আকৃষ্ট করছে তরুণীদের।
মেলায় ঘুরতে আসা ডুমুরিয়া উপজেলার বিল্লাল হোসেন বলেন মধুমেলায় এসে কবির বসতভিটা, কপোতাক্ষ নদ পাড়, বিদায় ঘাট, কবির স্মৃতি বিজড়িত বুড়ো কাঠবাদাম গাছতলা ও মধুমেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে খুবই ভালো লেগেছে।
এদিকে মেলায় মিষ্টি, মণ্ডা মিঠাই দোকানিদেরও বিরাম নেই। হরেক রকম সাইজের, বাহারি নামে মিষ্টিতে ঠাসা যেন দোকানগুলো। এক দেড় কেজি ওজনের এক একটি রসগোল্লা ৪-৫ জন ভাগ করে খাচ্ছে। জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে মধুমেলায় প্রতিদিনই এ অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকার হাজার হাজার মানুষ আসছেন।
দর্শনার্থীরা দিনভর মেলার মাঠে সার্কাস-যাদু দেখছেন, চড়ছেন নাগরদোলায়। মেলার মাঠের স্টলগুলোতে দর্শনার্থীদের ভিড়ও বাড়ছে। তবে হাজারও মানুষের আগমন ঘটলেও সার্বিক আইনশৃঙ্খলা ভালো। আর এ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখার জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সদস্যরাও সচেষ্ট রয়েছেন।
কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও মধুমেলা উদযাপন কমিটির সদস্য সচিব জাকির হোসেন বলেন, মেলায় দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে দর্শনার্থীরা আসছেন। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। যশোর জেলা প্রশাসনের আয়োজনে ৭ দিনব্যাপী অনুষ্ঠিত মধুমেলা আগামী ৩০ জানুয়ারি শেষ হবে।
কেকে/এএম