আধুনিক পদ্ধতিতে চাষাবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা, নিরাপদ সবজি উৎপাদনে কৃষকরা সফলতা পাচ্ছেন। টাংগাইলের ধনবাড়ী উপজেলাতে মালচিং পদ্ধতিতে ব্যবহারে কৃষকরা নিরাপদ ফসল উৎপাদন করছেন। এই পদ্ধতির ব্যবহারে গাছের কোনো রোগবালাই হচ্ছে না, আগাছা না ওঠার কারণে গাছ নিরাপদ থাকছে। এছাড়াও গাছে ফলন বেশি ও গাছের জীবন দীর্ঘ হয়। ফলে এই অঞ্চলে মালচিং পদ্ধতি জনপ্রিয়তা পাচ্ছে।
জানা যায়, এই অঞ্চলের কৃষকরা জমির মাটিতে জৈব সার ও রাসায়নিক সার মিশ্রণ করে বেড তৈরি করে তার উপর মালচিং পেপার বিছিয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি উৎপাদন করছেন। বিশেষ করে ধনবাড়ীতে এই পদ্ধতিতে মরিচের চাষ করা হচ্ছে। এই পদ্ধতিতে চাষে খরচ কম হয়, জমিতে তেমন শ্রমিকের প্রয়োজন হয় না। আর উৎপাদিত সবজির বাজারদর ভালো থাকে বলে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।
ধনবাড়ী উপজেলার সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ অফিসার মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, ধনবাড়ী উপজেলায় ৫৫০ হেক্টর জমিতে সবজির চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ২০০ হেক্টর জমিতে মসলা জাতীয় হাইব্রিড কয়েকটি জাত সহ বাড়ি মরিচের চাষ করা হয়েছে। তবে এ অঞ্চলে মরিচের চাষ অধিকাংশ জমিতে হয়ে থাকে।
ধনবাড়ী উপজেলার বীরতারা গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে মান্নান (লাল চান) বলেন, কৃষি অফিসের সহযোগিতায় ধনবাড়ী উপজেলার কৃষি উপসহকারী জাহিদুল ইসলাম স্যারের পরামর্শে জমির মাটিতে জৈব ও রাসায়নিক সারের মিশ্রন করে বেড তৈরি করি। তারপর সেখানে মালচিং পেপার ব্যবহার করে তাতে ছিদ্র করে মরিচের চারা রোপন করি। গত ১ বছর থেকে এই পদ্ধতিতে সবজি চাষ করলেও আগের চাষ পদ্ধতি থেকে এটা অনেক ভালো। মালচিং পদ্ধতিতে পটল, বেগুন, করলা এবং ১ ভিগা জমিতে কাঁচা মরিচসহ সকল সবজি চাষ করেছে তিনি।
তিনি আরো বলেন, আগের তুলনায় এখন খরচ কম। এছাড়াও জমিতে আগাছা নেই, গাছের রোগবালাই নেই। তিনি আশা করেন ফলন বেশি হবে। আর নিরাপদ এই সবজি বিক্রি করে লাভবান হতে পারবে।
ধনবাড়ী উপজেলার কয়েকটি এলাকা ঘুরে বেশকিছু সবজি চাষির সাথে কথা হলে তারা বলছেন, মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদ করলে জমিতে আগাছা জন্মাতে পারে না। ফলে জমি থাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। অতিরিক্ত পানি সেচ দিয়ে বাড়তি খরচ করতে হয় না। জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকায় শ্রমিকও লাগে কম। এ চাষাবাদে খরচ কম হওয়ায় কৃষকরা ফসল বিক্রি করে লাভ করতে পারেন।
ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাসুদুর রহমান বলেন, আমরা বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে কৃষকদের মালচিং পদ্ধতিতে চাষাবাদে উৎসাহিত করছি। ইতোমধ্যে অনেক কৃষক এই পদ্ধতিতে চাষাবাদ শুরু করেছেন। কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন। অন্য কৃষকরাও আগ্রহী হচ্ছেন এবং উপজেলা কৃষি বিভাগের লোকজন সবসময় কৃষকদের প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে বলে তিনি জানান।
কেকে/এএম