বিভাগের নাম পরিবর্তনের পক্ষ-বিপক্ষ নিয়ে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা পাল্টাপাল্টি মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) সকাল ১০টার দিকে সচেতন শিক্ষার্থীদের ব্যানারে প্রশাসন ভবনের সামনে জড়ো হয় একদল শিক্ষার্থী। তারা সেখানে বিভাগের বর্তমান নাম ‘জিওগ্রাফি অ্যান্ড এনভায়রনমেন্ট’ অপরিবর্তিত রাখার দাবিতে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন।
অপরদিকে বেলা ১১টার দিকে প্রশাসন ভবনের সামনে আরো একদল শিক্ষার্থী জড়ো হয়ে মানববন্ধন ও অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। এ সময় তারা বিভাগের নাম পরিবর্তন করে ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ করার দাবি জানান।
বিভাগের নাম পরিবর্তনের দাবিতে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, পূর্বে বিভাগটির নাম ছিল এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড জিওগ্রাফি। পরে সাক্ষর জালিয়াতি করে আমাদের বিভাগের নাম পরিবর্তন করা হয়েছে, যা সম্পূর্ণ আইনবহির্ভূত। আমরা এটার যথোপযুক্ত সমাধান চাই। এটা নিয়ে আমরা দাবি জানালেও গত ৫ মাস ধরে টালবাহানা করা হচ্ছে। এবার যদি কোনোক্রমে একাডেমিক কাউন্সিল এবং পরবর্তী সিন্ডিকেটে আমাদের নাম পরিবর্তনের দাবির একটা অক্ষর নিয়েও টালবাহানা করা হয়, তবে পরবর্তীতে কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অনির্দিষ্টকালের জন্য অবরোধ করা হবে এবং দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের যে-কোনো কার্যক্রমের জন্য দায়ী থাকবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশন।
এদিকে নাম অপরিবর্তিত রাখার পক্ষে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছেন, জিওগ্রাফি বিষয়টি পিএসসিতে নিবন্ধিত সাবজেক্ট, যার সাবজেক্ট কোড রয়েছে (৩১১)। কিন্তু এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলোজি বা শুধু এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স কোনটিই পিএসসিতে নিবন্ধিত নেই সাবজেক্ট হিসেবে। যে কারণে জিওগ্রাফি না থাকলে আমরা বিসিএসসহ (শিক্ষা) জিওগ্রাফির নিবন্ধিত সরকারি চাকরিতে আবেদন করতে পারব না। বিভাগের নাম জিওগ্রাফি না রাখার পরিকল্পনা শিক্ষার্থীসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত, কারণ জব সেক্টরে তীব্রভাবে সুযোগ কমে যাবে।
এদিকে শিক্ষার্থীরা মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে পাল্টাপাল্টি অবস্থান কর্মসূচি চলাকালে সেখানে উপস্থিত হন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম, প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহিনুজ্জামান ও সহকারী প্রক্টর অধ্যাপক ড. ফকরুল ইসলাম।
এ সময় পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিলে বিষয়টির একটা যথাযথ সমাধানের আশ্বাস দেওয়া হলে শিক্ষার্থীরা কর্মসূচি স্থগিত করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. ওবায়দুল ইসলাম শিক্ষার্থীদের বলেন, তোমরা আমাদের কাছে যেসব দাবি-দাওয়া দিয়েছো, সেগুলো প্রশাসনকে জানানো হয়েছে। তোমাদের নিজেদের মধ্যে কোনো সংঘর্ষের পরিস্থিতি সৃষ্টি হোক, আমরা সেটা চাই না। একাডেমিক কাউন্সিলে এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। আশা করছি, শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণকর হয় এমন একটা সিদ্ধান্তই আসবে।
কেকে/এএম