শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫,
১৮ মাঘ ১৪৩১
বাংলা English

শুক্রবার, ৩১ জানুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী নুরুজ্জামান গ্রেফতার      ঝড়-তুফান যাই হোক না কেন, নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে: তারেক রহমান      জামালপুরে ট্রাক- সিএনজির সংঘর্ষে নিহত ৫      বাংলাদেশে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার আশ্বাস জাপানের      ভারতের বাঁধের কারণে আমাদের নদীগুলো শুকিয়ে গেছে: তারেক রহমান      পবিত্র শবে বরাত ১৪ ফেব্রুয়ারি      চার কি.মি. হেটে টিউশনি করা তৌহিদ অনেকের প্রেরণার উৎস      
খোলাকাগজ স্পেশাল
জনজীবন ও ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি ফেরাতে ব্যর্থ সরকার
আলতাফ হোসেন
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৩০ জানুয়ারি, ২০২৫, ৯:০৬ এএম  (ভিজিটর : ৯০)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

বিগত কয়েক বছর ধরে দেশের অর্থনীতি বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছে। ফলে সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা দুর্বল হয়ে পড়েছে। রাজস্ব সংগ্রহের গতি কমে সংকুচিত হয়েছে, বাজেট ঘাটতি মেটাতে বাণিজ্যিক ব্যাংক থেকে সরকারি ঋণের ওপর উচ্চ নির্ভরতা বেড়েছে, তফসিলি ব্যাংকগুলোতে তীব্র তারল্য সংকট সৃষ্টি হয়েছে, মূলস্ফীতি বৃদ্ধি এবং বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবনতি ঘটেছে। 

অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর থেকে আনুষঙ্গিক চ্যালেঞ্জগুলো মোকাবিলা করতে সংস্কারসহ বেশ কয়েকটি অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে। তবে সরকার দায়িত্ব গ্রহণের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও জনজীবন এবং ব্যবসা-বাণিজ্যে স্বস্তি আনার মতো কোনো পরিবর্তন আনতে পারেনি। এজন্য প্রথমেই সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তাদের কিছুটা স্বস্তি দেওয়া, বছরের পর বছর ধরে পুঞ্জীভূত চ্যালেঞ্জগুলো একত্রে মোকাবিলা করা এবং সামষ্টিক অর্থনীতির মৌলিক বিষয়গুলোকে শক্তিশালী করার জন্য সংস্কার কর্মসূচি গ্রহণ এবং তা টেকসই করা প্রয়োজন। 

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) ধানমন্ডির কার্যালয়ে গতকাল বুধবার ‘বাংলাদেশ অর্থনীতি ২০২৪-২৫ : সংকটময় সময়ে প্রত্যাশা’ পূরণের চ্যালেঞ্জ শীর্ষক আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন। 
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জুলাই আন্দোলনের মূল কারণ ছিল কর্মসংস্থানের অভাব। বিগত সরকারের বৈষম্যমূলক নীতি বেকারত্ব পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করেছিল। সমাজে বৈষম্য বেড়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নিয়ে কর্মসংস্থান বাড়াতে পারেনি।

সিপিডি বলছে, আগের কর্তৃত্ববাদী সরকার একটি অকার্যকর অর্থনীতি রেখে গেছে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারও চাঁদাবাজি, অযৌক্তিক মূল্য নির্ধারণের মতো অনিয়ম মোকাবিলায় উল্লেখযোগ্য কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পাশাপাশি বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের ঋণের দুষ্টচক্র থেকে মুক্তি পেতে কার্যকর পরিকল্পনা গ্রহণের পরামর্শ প্রতিষ্ঠানটির।

পূর্ববর্তী সরকারের নীতিকাঠামোর জন্য বাংলাদেশের জ্বালানি খাত মারাত্মক আর্থিক সংকটে রয়েছে উল্লেখ করে সংস্থাটি জানায়, ঋণের বোঝা কমাতে অতিরিক্ত ব্যয়ে বিদ্যুৎ না কিনে সরকারি বিদ্যুৎ কেন্দ্র বিশেষ করে গ্যাসভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন বাড়াতে হবে। আদানিসহ সব বিদ্যুৎকেন্দ্র বসিয়ে রেখে ক্যাপাসিটি পেমেন্ট বাতিল করে ‘নো ইলেক্ট্রিসিটি নো পে’ নীতি চালু করতে হবে। এ ছাড়া সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে করা এলএনজি সরবরাহের চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে গ্যাসের অভ্যন্তরীণ অনুসন্ধান আরো দুর্বল হবে বলে মনে করছে সংস্থাটি। 

সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, রাজনৈতিক বিবেচনায় ব্যাংকের লাইসেন্স বন্ধ করতে হবে। একই ব্যক্তি যাতে একাধিক ব্যাংকের মালিক হতে না পারেন সেটা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি লাইফ সাপোর্টে থাকা ব্যাংকগুলোকে বন্ধ করে দিতে হবে। ব্যাংকিং খাতে সুশাসনের অভাব রয়েছে। রাজনৈতিক হস্তক্ষেপে দুর্বল হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। দুর্বল ব্যাংকগুলোকে শক্তিশালী ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করে ব্যাংক খাতের অবস্থার উন্নতি করা যেতে পারে। ব্যাংকিং খাত দুর্বল হওয়ার পেছনে যেসব গভর্নর দায়ী তাদের জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। 

তিনি বলেন, নির্বাচনের পরিবেশ যত দ্রুত সৃষ্টি করা যায় তত তাড়াতাড়ি একটা সুষ্ঠু নির্বাচন করা সম্ভব। নির্বাচনকে দীর্ঘায়িত করার কোনো কারণ নেই। যে নির্ধারিত সময় দেওয়া হয়েছে সে সময়ের মধ্যে নির্বাচন হয়ে যাওয়া জরুরি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে দ্রুত সুষ্ঠু নির্বাচন হলে দেশের অর্থনীতি ও বিনিয়োগে অনিশ্চয়তা কেটে যাবে। 

ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, রাজনৈতিক সংস্কার ছাড়া অর্থনৈতিক সংস্কার সম্ভব নয়। অন্তর্বর্তী সরকার কর্মসংস্থান বাড়াতে পারেনি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা গ্রহণের পর মূলধনী যন্ত্রপাতির আমদানি বিগত অর্থবছরের তুলনায় ধারাবাহিকভাবে কমেছে। বিশেষ করে, আগস্ট মাসে মূলধনী পণ্যের আমদানি প্রায় ৩১ শতাংশ কমে যায়। চলমান চ্যালেঞ্জের পাশাপাশি, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নিয়ে নতুন অনিশ্চয়তা, ব্যবসা ও বিনিয়োগের জন্য জটিল হয়েছে।

সিপিডি সম্মানীয় ফেলো ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, রাজনৈতিক সংস্কারও করতে হবে, অর্থনৈতিক সংস্কারও করতে হবে। কেবল ইলেক্টরাল সংস্কার দিয়ে হবে না। রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে যে সংস্কার, সেখানে গণতন্ত্রের আনাটাও একটা প্রক্রিয়ায় আনতে হবে।

তিনি বলেন, জনগণ যে কর দেয়, সরকার পুরোপুরি পায় না। সরকারের সুযোগ ছিল এসব জায়গায় হাত দেওয়ার, কিন্তু দেয়নি। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল বলেনি ভ্যাট বাড়াতে। তারা বলেছে যে কোনো উপায়ে রাজস্ব বাড়াতে। কিন্তু সরকার প্রত্যক্ষ কর না বাড়িয়ে পরোক্ষ কর বাড়াচ্ছে। দেশের কর-জিডিপি অনুপাত খুবই কম এবং এ সমস্যা সমাধানের জন্য সুনির্দিষ্ট ব্যবস্থা গ্রহণ করা আবশ্যক।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, মজুরি বৃদ্ধির থেকে মূল্যস্ফীতি দিগুণ হারে বৃদ্ধি পাচ্ছে, যার ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান হ্রাস পাচ্ছে। আয় বৈষম্য মোকাবিলার সুযোগ ছিল এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন এ ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য সুযোগ তৈরি করেছে।

কেকে/এআর
আরও সংবাদ   বিষয়:  অন্তর্বর্তীকালীন সরকার   স্বস্তি ফেরাতে ব্যর্থ সরকার   ব্যবসা-বাণিজ্য  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে সভাপতি আল ফারুক ও আল মাসুদ সাধারণ সম্পাদক
ক্যাসেট বিক্রেতা থেকে কোটিপতি সাদ্দাম
মোহাম্মদপুরে আলোচিত কিশোর গ্যাং কবজি কাটা গ্রুপের ৪ সদস্য আটক
ছাত্র আন্দোলনে নিহত মামুনের লাশ ৫ মাস পর উত্তোলন
শৃঙ্খলা রক্ষায় হার্ডলাইনে বিএনপি

সর্বাধিক পঠিত

কুবি শিক্ষকের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে লিখিত অভিযোগ
থাই গেম ও ভিসা প্রতারকদের গ্রেফতারের দাবিতে মানববন্ধন
নামাজ থেকে বের হয়ে গুলিবিদ্ধ ইউপি সদস্য, প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় জিলানীর কুল বাগান উদ্বোধন
চার কি.মি. হেটে টিউশনি করা তৌহিদ অনেকের প্রেরণার উৎস

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝