লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী ও কালীগঞ্জ এলাকার একটানা সাত বারের সাবেক সংসদ সদস্য, সরকারী আদিতমারী জিএস সরকারী মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক প্রধান শিক্ষক ও আজীবন সভাপতি এবং কান্তেশ্বর বর্মন বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি প্রয়াত আলহাজ্ব মজিবর রহমানের বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) ৯ম মৃত্যূ বার্ষিকী পালন করা হয়।
এ উপলক্ষে সরকারী আদিতমারী জিএস মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের আয়োজনে স্বরনসভা ও দোয়া করা হয়। স্বরনসভায় সরকারি আদিতমারী জিএস মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রধান শিক্ষক শওকাত আরা সিদ্দিকার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত স্বরনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মরহুম মজিবর রহমানের পুত্র বিগ্রেডিয়ার জেনারেল (অব.) শামীম কামাল,অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক মাওলানা হাবিবুর রহমান। এর আগে মরহুমের আত্নার মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
উল্লেখ্য,মরহুম মজিবর রহমান ১৩ অক্টোবর, ১৯৪১ সালে লালমনিরহাট জেলার আদিতমারী উপজেলার ভাদাই ইউনিয়নের আদিতমারী গ্রামে এক সম্ভ্রান্ত মুসলিম পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতার নাম উজির মোহাম্মদ ও মাতার নাম মহিতোন নেছা। মরহুম উজির মোহাম্মদ ভাদাই ইউনিয়ন বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। মরহুম মজিবর রহমান ভাদাই জিএস এম ই স্কুলে অস্টম শ্রেণি, রংপুর কৈলাশ রঞ্জন উচ্চ বিদ্যালয়ে নবম ও দশম শ্রেণি অধ্যয়ন করে ১৯৫৭ সালে লালমনিরহাট সরকারি বালক উচ্চ বিদ্যালয় হতে মেট্রিকুলেশন পাশ করেন। কারমাইকেল কলেজ হতে ১৯৫৯ সালে উচ্চ মাধ্যমিক ও ১৯৬৫ সালে বিএ পাশ করেন। রাজশাহী টিটি কলেজ হতে ১৯৬৭ সালে বি.এড ডিগ্রি অর্জন করেন। মরহুম মজিবর রহমান ১৯৬২ সালে ভাদাই গিরিজা শংকর নিম্ন মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার মধ্য দিয়ে কর্মজীবন শুরু করেন। ১৯৬৭ সালে ১ আগস্ট প্রতিষ্ঠাতা স্বর্গীয় বাবু কান্তেশ্বর বর্মণ তাঁর হাতে প্রতিষ্ঠানের সমস্ত দায়িত্ব অর্পন করেন। প্রধান শিক্ষক থাকাকালীন তার সততা, নিষ্ঠা, কর্মদক্ষতা ও উন্নয়ন মূলক কাজে দক্ষতার জন্য এলাকার জনসাধারণ তাকে ভাদাই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেন, এর মধ্য দিয়েই তাঁর রাজনীতিতে শুভ সূচনা ঘটে। ১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর তিনি ১৯৭৯,১৯৮৬,৮৮, ৯১,৯৬,২০০১ ও ২০০৮ ইং সালে পর এক টানা সাত বারের এমপি নির্বাচিত হওয়ার গৌরব অর্জন করেছিলেন প্রয়াত সংসদ সদস্য মজিবর। অপরাজিত থেকে জাতীয় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে এলাকার মানুষের ভাগ্য উন্নয়নে কাজ করেন। পাশাপাশি একাধারে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা চেয়ারম্যান, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদ সদস্য হিসেবে ৪২ বছর জনপ্রতিনিধি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।তাঁর বর্ণাঢ্য কর্মজীবনে সৎ, পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ ও অসাম্প্রদায়িক মানুষ হিসেবে সবার কাছে সম্মানের পাত্র ছিলেন। সবার প্রিয় মানুষটি ২০১৬ সালের ৩০ জানুয়ারি সকলের মায়া ত্যাগ করে ইন্তেকাল করেন।
কেকে/এএম