গত ১ জানুয়ারি শুরু হওয়া মাসব্যাপী ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন করেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনুস। মাসব্যাপী মেলার ৩০তম দিন দুপুরে তুচ্ছ ঘটনায় ব্লেজার ব্যবসায়ীদের দোকানে মারামারির ঘটনায় তীব্র সমালোচনা করেছেন দর্শনার্থীরা। এ সময় দিকবেদিক ছুটতে থাকেন মেলায় আগতরা।
মেলা সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৫ সাল থেকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর যৌথ উদ্যোগে আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। দেশীয় পণ্যের প্রচার, প্রসার, বিপণন ও উৎপাদনে সহায়তার জন্য এ মেলার আয়োজন করা হয়। আগে বাণিজ্য মেলা রাজধানীর শেরে বাংলা নগরের চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পাশের খেলার মাঠে অনুষ্ঠিত হতো। ২০২২ সাল থেকে পূর্বাচলের বাংলাদেশ-চায়না ফ্রেন্ডশিপ এক্সিবিশন সেন্টার প্রাঙ্গণ মেলার জন্য নির্ধারিত হয়েছে।
এবারের বাণিজ্য মেলায় বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, হংকং, তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া, পাকিস্তান, থাইল্যান্ড, নেপালসহ বিভিন্ন দেশের ব্যবসায়ীরা তাদের পণ্য নিয়ে হাজির হয়েছেন। মেলায় ৯টি বিদেশি প্রতিষ্ঠান অংশ নেয়।
এছাড়াও এবার দেশি-বিদেশি প্রতিষ্ঠানের জন্য দুটি হলের বাইরে মিলে মোট ৩৬১টি স্টল, প্যাভিলিয়ন ও মিনি প্যাভিলিয়ন অংশ নিয়েছে।
মাসব্যাপী মেলার বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল থেকে ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্য মেলায় মানুষের ঢল নেমেছে। সন্ধ্যায় মানুষের উপস্থিত এমন হয়েছে যে পা ফেলার জায়গা পর্যন্ত ছিল না। ফলে বিক্রিও হয়েছে কয়েকগুণ।
সরেজমিনে দেখা যায়, দুপুরের পর থেকে রাজধানী ঢাকাসহ এর আশপাশ এলাকা থেকে মেলা প্রাঙ্গণে মানুষের সমাগম ঘটতে থাকে। বিকাল শেষে সন্ধ্যায় দর্শনার্থীদের ভিড় রূপ নেয় জনসমুদ্রে। ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়কেই শেষ মুহূর্তের কেনাকাটায় ব্যস্ত সময় পার করতে দেখা গেছে।
মেলা কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এবার মেলায় প্রায় ৪০ লাখ দর্শনার্থী এসেছেন। এছাড়াও শেষ দিন পণ্যের অনেক ছাড় চলেছে। তাই শেষ বেলায় দর্শনার্থীরা এসে কম দামে পণ্য কিনেছেন।
দর্শনার্থী মোক্তার হোসেন বলেন, দুপুরে মেলায় এসেছি। এসে মেয়েদের নিয়ে মেলার স্টলগুলো ঘুরে দেখছি। এরপর দুপুরে খাওয়া-দাওয়া করেছি। মেয়েদের জন্য কেনাকাটা করেছি। এখন বাসায় ফিরছি। ছাড় দেওয়ার বিষয়টি উপভোগ করেছি। মনে হলো উৎসবের মেলা।
ক্লাসিক্যাল হোমটেক্সে ‘বেডশিট’কিনতে আসা নাসরিন আক্তার বলেন, এক সপ্তাহ আগে এসেছিলাম। দুটি চাদর আমার অনেক পছন্দের ছিল। তাই আজকে কিনতে আসলাম। চাদর তো পেলাম কিন্তু দোকানদারের সাথে কথা বলার চান্সও পাচ্ছি না। অনেক ভিড়।
টেস্টি ট্রিট প্যাভিলিয়ন ইনচার্জ আলী হাসান মহসিন বলেন, সবসময় মেলায় ক্রেতাদের সাড়া পেয়েছি। আশা করছি যারা আমাদের খাবার খেয়েছেন তারা সবসময় খাবেন।
এদিকে ২৪ এর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের স্মৃতিধারন সম্বলিত মেলায় থাকা তারুন্যের বাংলাদেশ, ৩৬ জুলাই, মুগ্ধ কর্ণারগুলো ছিল তরুণদের আগ্রহের স্থান। ৩১ জানুয়ারি এ মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ২৯তম আসর শেষ হতে যাচ্ছে।
কেকে/এএম