ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আব্দুল কাদের জিলানী প্রবাস জীবন শেষে সফলতার গল্প রচনা করেছেন। তার কুল বাগান এখন দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, যা তার উদ্যোক্তা মনোভাব এবং কৃষি খাতে নতুন সম্ভাবনার দিকে ইঙ্গিত করছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ূবপুর গ্রামের আব্দুল কাদের জিলানীর বিখ্যাত কুল বানিজ্যিকভাবে বিক্রি শুরু হয়েছে। উদ্বোধন করেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম।
প্রবাস জীবন শেষে দেশে ফিরে সাফল্য অর্জনের নজির গড়েছেন জিলানী। মাত্র ৩ লাখ ২০ হাজার টাকা বিনিয়োগ করে চার বিঘা জমিতে কুল বাগান স্থাপন করেন, যা আজ তাকে বছরে প্রায় ১০ লাখ টাকার আয় দিচ্ছে। তার এই উদ্যোগ স্থানীয় অর্থনীতিতে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি করেছে এবং অন্যদের অনুপ্রাণিত করেছে।
২০২১ সালে জিলানী ও তার পার্টনার মো. নাসির উদ্দিন তাদের পিতার জমিতে কুল চাষ শুরু করেন। প্রথম বছরে জমিতে পানি জমে যাওয়ার সমস্যা হলেও সঠিক পরিচর্যার মাধ্যমে তারা তা কাটিয়ে উঠেন। কুলের মুকুল সেপ্টেম্বরের শুরু থেকে অক্টোবরের মাঝামাঝি আসলেও জানুয়ারির শেষ অথবা ফেব্রুয়ারির শুরুতে ফল খাওয়ার উপযোগী হয়ে ওঠে। ফরমালিনমুক্ত কুল প্রতি কেজি ১০০ টাকায় বিক্রি হয় এবং পাইকাররা সরাসরি বাগান থেকে কুল সংগ্রহ করে।
আজ (৩০ জানুয়ারি) বিকালে জিলানীর কুল বাগান পরিদর্শন করেন বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. নজরুল ইসলাম ও কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসিরুদ্দিনসহ স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিরা। তারা জিলানীর সফল উদ্যোগ দেখে প্রশংসা করেন।
এসি ল্যান্ড মো. নজরুল ইসলাম সুধী সমাবেশে বলেন, কুল শুধু সুস্বাদু নয়, পুষ্টিগুণেও অত্যন্ত উপকারী। এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট রয়েছে, যা আমাদের স্বাস্থ্য উপকারে আসে।
জিলানী তার কুল বাগান শুরু করে অনেক কৃষককে কুল চাষে উৎসাহিত করেছেন। তার পরিকল্পনা, আরও মানুষ যেন এই ধরনের উদ্যোগ নেয় এবং কৃষি খাতে উন্নতি আনে।
বাঞ্ছারামপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. নাসির উদ্দিন বলেন, জিলানীর কুল এখন একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে। তার কুলের মান ফরমালিনমুক্ত, মিষ্টি এবং সুস্বাদু। তার বাগান এলাকার চাহিদা মিটিয়ে পার্শ্ববর্তী উপজেলাতেও ব্যাপক চাহিদা সৃষ্টি করেছে।
কেকে/এএম