ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ুম বলেছেন, ক্ষমতায় গিয়ে সংস্কার জনগণ বিশ্বাস করে না। ইতিপূর্বে অনেক দলীয় সরকারই ক্ষমতায় ছিল। কিন্তু কেউই সংস্কারের ক্ষেত্রে গুরুত্ব দেয়নি।
তিনি বলেন, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এমন একটি ভিত্তি দাঁড় করাবে, যার ওপরে ভিত্তি করে পরবর্তীতে নির্বাচিত সরকার সংবিধান, নির্বাচন, বিচার বিভাগসহ অন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলো সংস্কার করবে। তবে কোনো ভিত্তি দাঁড় না করিয়ে আগে নির্বাচন পরে সংস্কার এটা অযৌক্তিক।
তিনি আরো বলেন, আমরা অভূতপূর্ব ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের বিলুপ্ত করেছি। পরবর্তীতে আমরা কী দেখলাম সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে ঐক্য দুটি ভাগ হয়ে গেছে। যার কারণেই আজকে আলোচনা করতে হচ্ছে। ফ্যাসিবাদে জায়গাগুলো দখল করে দখলদারিত্ব করছে অন্য একটি দল। যা সচেতন মহলকে ভাবিয়ে তুলেছে। আওয়ামী লীগের ভাষায় কথা বলছেন বড় একটি দল। বিভিণ্ণ ওয়াজ মাহফিলে গিয়েও আলেমদের সাথে খারাপ আচরণ করার খবর পাচ্ছি।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) জামালপুর শহরের মডেল মসজিদ অডিটরিয়ামে ইসলামী আন্দোলন জেলা শাখার উদ্যোগে অনুষ্ঠিত দ্বি বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এতে বিশেষ অতিথি ছিলেন দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ময়মনসিংহ বিভাগ) জিএম রুহুল আমিন। সংগঠনের জামালপুর জেলা সভাপতি ডা. সৈয়দ ইউনুস আহমদের সভাপতিত্বে ও সেক্রেটারি মাওলানা সুলতান মাহমুদ সিরাজী’র সঞ্চালনায় সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন জেলা সহ-সভাপতি মুফতী মোস্তফা কামাল, সাংগঠনিক সম্পাদক হামিদুর রহমান, ছদর মাওলানা সভাপতি শামসুল হক, সাবেক সেক্রেটারি মোকছেদুর রহমান, মুফতী শফিকুল ইসলাম, মাওলানা রাজ মাহমুদ, মাওলানা মোখলেসুর রহমান, হাফেজ লিয়াকত হোসেন, মুফতী আব্দুল্লাহ আল মামুন, মুফতী আবু সাঈদ, মো. জামিনুর রহমান, হাফেজ মাওলানা আবু বক্কর, মুফতী মাহবুবুর রহমান, মাওলানা আব্দুল মজিদ, মুফতী হামিদুল ইসলাম, মাওলানা মতিউর রহমান আজাদী, মাওলানা দেলোয়ার হোসেন, হেকিম মো. শাহ আলম, মো. আজহারুল ইসলাম, এইচ এম আব্দুল্লাহ।
ইসলামী আন্দোলনের সহকারী মহাসচিব বলেন, আমাদের দেশে ইতোপূর্বে অনেক জনপ্রিয় নেতৃত্ব তৈরি হয়েছিল। তবে জনপ্রিয়তা স্থায়ী হয়নি। কারণ জনআকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়ন করা না হলে জনপ্রিয়তা স্থায়ী হয় না। জনগণ ক্ষুধার্ত থাকলে কোনো সরকারই সমর্থন পাবে না। আগামীতে যারা ক্ষমতায় যাবেন, তাদের অবস্থাও আমরা ভালো কিছু দেখছি না। চাঁদাবাজি ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দলে দলে মারামারি হচ্ছে। দেখা গেছে, এসব করতে গিয়ে নিজ দলের কর্মী তার অপর কর্মীকে হত্যা করছে। এদের কাছে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা নিশ্চিত নয়।
তিনি বলেন, আদর্শিক ও নৈতিক জ্ঞানে দেশের মানুষরা তৈরি না হলে আমাদের দেশের সংকটগুলো কাটবে না। এগুলোর বাস্তবায়ন করা না হলে সংবিধান পরিবর্তন করেও কোনো সুফল আসবে না।
সম্মেলন শেষে মুফতি মোস্তফা কামালকে সভাপতি মাওলানা মাজহারুল আনোয়ার ও মুফতি সালেহ আহমদকে সহ-সভাপতি এবং মাওলানা সুলতান মাহমুদ সিরাজীকে সেক্রেটারি করে জামালপুর জেলা ২০২৫-২৬ সেশনের নতুন কমিটি ঘোষণা করেন প্রধান অতিথি। পরে তাদেরকে শপথ বাক্য পাঠ করানো হয়।
কেকে/এইচএস