বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেন, নির্বাচনি ব্যবস্থা যদি ঠিক করতে না পারি তবে দেশের কোনকিছুরই সমাধান হবে না। ঝড়, তুফান, বন্যা, খরা, বৃষ্টি যাই হোক না কেন, একটি নির্দিষ্ট সময়ে নির্বাচন হতেই হবে, এর কোন বিকল্প নেই, সেই ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই হবে। এই লক্ষ্যপথে কেউ বাধা হয়ে দাড়ালে আমরা তাদের প্রতিহত করবো।
বৃহস্পতিবার (৩০ জানুয়ারি) বিকাল ৫ টার দিকে কুষ্টিয়ায় “রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা ও জনসম্পৃক্তি” বিভাগীয় প্রশিক্ষণ কর্মশালায় লন্ডন থেকে ভারচ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে সকাল ১০টায় জেলা শিল্পকলা একাডেমীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন বিষয়ক কমিটির আয়োজনে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা শুরু হয়।
তারেক রহমান বলেন, অস্ত্রের জোরে ক্ষমতায় বসেছিল পতিত স্বৈরাচার সরকার, নির্দিষ্ট তারিখ না জানলেও আমরা জানতাম এদের পতন হবে। সেই বিশ্বস থেকেই আমরা ৩১ দফা জাতির সামনে উপস্থাপন করেছি, স্বৈরাচার সব কিছু ধ্বংস করেছে সেই দেশকে মেরামত করতে হবে। কমিশন গঠন করে অন্তবর্তি সরকার যে সব সংস্কার করতে চাচ্ছে তার সবই এই ৩১ দফায় রয়েছে। কারণ বিএনপি দেশ ও জনগণ নিয়ে ভাবে।
তিনি আরো বলেন, দেশের বৃহৎ একটা অংশের মানুষ বিশ্বাস করে, যদি ভালো কিছু সম্ভব হয়, ইনশাআল্লাহ বিএনপিই এদেশের জন্য ভালো করতে পারবে। জনগণের চাহিদাগুলো, জনগণের আশা, জনগণের প্রত্যাশা চাওয়াগুলো আমাদেরকে অ্যাড্রেস করতে হবে। যে কোনো মূল্যে সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে। আপনারা কৃষি নিয়ে কথা বলেছেন, আপনারা স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দ্রব্যমূল্য নিয়ে কথা বলেছেন। কেন বলেছেন? জনগণের দাবি এগুলো।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, আমার প্রায় ৩৫ বছরের রাজনীতিতে আমার একটা অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমি বিগত ১৫/১৬ বছর ধরে বাধ্য হয়ে বিদেশে আছি। এই দেশে থাকার ফলে অভিজ্ঞতা হয়েছে। আমরা যদি দেশে, সমাজে জবাবদিহিতা, নির্বাচনী ব্যবস্থাকে তৈরি করতে না পারি, কোনোভাবেই কোনো সমস্যা সমাধান করতে পারব না। আমরা যদি নির্বাচনী ব্যবস্থা সামগ্রিকভাবে সমগ্র বাংলাদেশে গড়ে তুলতে না পারি, অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সময় পরে যত ঝড় তুফান বন্যা বৃষ্টি যাই হোক না কেন, নির্বাচন হতেই হবে। এর কোনো বিকল্প নেই। এই ব্যবস্থাটাকে নিশ্চিত করতে হবে। নির্বাচন হতে হবে। যেখানে জনগণ ভোটার, সেখানে জনগণকে নির্দ্বিধায় নির্বিঘ্নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটের ব্যবস্থা থাকতে হবে।
ঢাকা শহরে বা যেখানেই হোক, যদি প্রকৃত জনপ্রতিনিধি থাকতো, প্রকৃত ওয়ার্ড কমিশনার, মেয়র থাকত- যারা আসলেই জনগণের ভোটে নির্বাচিত, তাহলে নিজের গরজেই জনপ্রতিনিধি দৌড়াদৌড়ি করে নিজেই সমস্যার সমাধান করতো। জনগণের সমস্যা সমাধানকে একটা সিস্টেমের মধ্যে আনতে হবে। জনগণের কাছে জবাবদিহিতা থাকতে হবে। জবাবদিহিতা গড়ে তুলতে হবে।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুতুব উদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিএনপির কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষন বিষয়ক কমিটির আহ্বায়ক ডা. মওদুদ আলমগীর পাভেল, কেন্দ্রীয় বিএনপির প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মেহেদি আহমেদ রুমী, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির স্থানীয় সরকার বিষয়ক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক শহিদুল ইসলাম, রেজা আহমেদ বাচ্চু মোল্লা, ব্যারিস্টার রাগীব রউফ চৌধুরী, ফরিদা ইয়াসমিন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারসহ বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য রাখেন।
এর আগে কীভাবে রাজনীতি হবে দেশ ও জনগণের কল্যানে, কীভাবে মানুষের কাছে গণতান্ত্রিক বিএনপির রাজনীতি জনপ্রিয় করতে হবে সেইসব বিষয়ে কুষ্টিয়াঞ্চলের নেতাকর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। প্রশিক্ষণ দেন প্রশিক্ষক প্রফেসর মোর্শেদ হাসান খান, মীর মোহাম্মদ হেলাল উদ্দিন, মো. আবদুস সাত্তার পাটোয়ারী, ফারজানা শারমিন পুতুল, সাইফ মোহাম্মদ জুয়েল।
কেকে/এজে