মুন্সীগঞ্জের গজারিয়ায় বালুমহাল থেকে বালু উত্তোলন করাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়। স্থানীয়দের অভিযোগ নদীর পাড় ঘেঁষে বালু উত্তোলন করার সময় বাধা দিতে গেলে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করা হয়। ইজারাদারি প্রতিষ্ঠানের হামলায় নাহিদ (২০) নামে এক যুবক আহত হয়।
শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল নয়টার দিকে গজারিয়া উপজেলার ইমামপুর ইউনিয়নের বেরু মোল্লাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন মেঘনা নদীর তীরে এই ঘটনা ঘটে বলে জানা যায়।
খবর নিয়ে জানা যায়, চলতি বছর মেঘনা নদীর গজারিয়া উপজেলার কালীপুরা, ষোলআনী, চর রমজানবেগ মৌজায় ১২৮ একর এলাকায় বালুমহাল ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। বালুমহালটির ইজারা পেয়েছে ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড। স্থানীয়দের অভিযোগ সরকার নির্ধারিত জায়গার বাহিরে গিয়ে নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। গত কয়েক মাস ধরে সন্ধ্যার পর এবং ভোরবেলা নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলনের ফলে কয়েক'শো বিঘা জমি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙ্গন ঝুঁকিতে রয়েছে প্রায় অর্ধশত বিঘা ফসলি জমি।
এদিকে শুক্রবার (৩১ জানুয়ারি) সকাল নয়টার দিকে বেরু মোল্লাকান্দি গ্রাম সংলগ্ন নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করার সময় এলাকাবাসীর বাধার মুখে পড়ে ইজারাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন। মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে নদীর পাড়ে স্থানীদের জড়ো করা হয়। এসময় আতঙ্ক সৃষ্টি করতে বালুমহাল থেকে চার রাউন্ড ফাঁকা গুলিরবর্ষণ করা হয় বলে দাবি করে স্থানীয়রা । এ ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় কয়েকজন ট্রলার নিয়ে বালুমহালে গেলে সেখানে ইজারাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজনের হামলায় নাহিদ নামে এক যুবক আহত হয়।
স্থানীয় বাসিন্দা নাসির মোল্লা বলেন, 'সরকার নির্ধারিত জায়গার বাহিরে এসে নদীর তীর ঘেঁষে বালু উত্তোলন করছিল ইজারাদারি প্রতিষ্ঠান। স্থানীয় লোকজন প্রথমে তাদের মৌখিকভাবে বাধা দেয় কিন্তু তারা সেটা আমলে না নিলে এলাকাবাসী একজোট হয়ে তাদের প্রতিরোধের চেষ্টা করে। এ সময় নদীর তীরবর্তী এলাকায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হয়'।
স্থানীয় বাসিন্দা কামাল বলেন, আজ সকাল নয়টায় বেরু মোল্লাকান্দি গ্রাম ঘেঁষে প্রায় ২৫/২৬টি ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করা হচ্ছিল। আমরা তাদের বাধা প্রদান করতে গেলে তারা ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে এবং আমাদের লোকজনদের মারধর করে। এলাকাবাসীর প্রতিরোধের মুখে সকাল দশটার দিকে তারা পিছু হটে।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরজাহান বলেন, 'আমরা নারী পুরুষ মিলে দেড়/দুইশো মানুষ তাদের বাধা দেওয়ার জন্য নদীর পাড়ে গিয়েছিলাম। এ সময় তারা ৩/৪ রাউন্ড ফাঁকা গুলিবর্ষণ করে'।
এ বিষয়ে তাদের বক্তব্য জানতে ইজারাদারি প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের একাধিক কর্মকর্তার সাথে কথা বলতে চেষ্টা করা হলেও সম্ভব হয়নি।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ আনোয়ার আলম আজাদ বলেন, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল তবে আমরা ওরকম কিছু পাইনি। গুলিবর্ষণের ঘটনাটি আমার জানা নেই'।
কেকে/এআর