টাঙ্গাইলের মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (মাভাবিপ্রবি) এর ক্যাফেটেরিয়ায় পর্দা কর্নার চালুর দাবি জানিয়েছেন নারী শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসে পর্দানশীল নারী শিক্ষার্থীদের স্বাচ্ছন্দ্যমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে তারা এই দাবি জানিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি (আইসিটি) বিভাগের শিক্ষার্থী খাদিজা আরেফিন মীম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দিয়ে এই বিষয়ে মতামত প্রকাশ করেন। তিনি জানান, যারা পর্দা মেইনটেইন করেন, তাদের জন্য খুবই ছোট পরিসরে হলেও ক্যাফেটেরিয়ায় আলাদা বসার ব্যবস্থা থাকা উচিত। এতে তারা স্বস্তির সঙ্গে খাবার গ্রহণ করতে পারবেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এটি ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেক শিক্ষার্থী এই দাবির প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। পোস্টটিতে শতাধিক প্রতিক্রিয়া ও বহু মন্তব্য দেখা গেছে।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা এখন নিজেদের মতামত ও ইচ্ছাগুলো মুক্তভাবে প্রকাশ করার সুযোগ পাচ্ছি। প্রত্যেকেরই নিজস্ব চিন্তার অধিকার রয়েছে, এবং সেই অধিকার থেকেই আমরা বিশ্বাস করি—ক্যাফেটেরিয়ায় একটি পর্দা কর্নার থাকা অত্যন্ত জরুরি। এটি শুধু ব্যক্তিগত চাহিদার বিষয় নয়, বরং সবার জন্য স্বাচ্ছন্দ্য ও অন্তর্ভুক্তিমূলক পরিবেশ নিশ্চিত করার একটি যৌক্তিক দাবি।শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষার ব্যস্ততার কারণে অনেক সময় সকালে ঠিকমতো খেতে পারেন না। ফলে দুপুরের আগেই ক্লান্তি ও দুর্বলতা অনুভব করেন। কিন্তু যারা পর্দা মেনে চলেন, তাদের জন্য ক্যাফেটেরিয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে বসে খাওয়া কঠিন হয়ে যায়। যদি একটি পর্দা কর্নারের ব্যবস্থা থাকে, তাহলে এসব শিক্ষার্থী নির্ভয়ে খাবার গ্রহণ করতে পারবেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত সকল শিক্ষার্থীর চাহিদাকে সমান গুরুত্ব দেওয়া। কেউ চাইলে ক্যাফেটেরিয়ার সাধারণ কর্ণারে বসতে পারেন, আবার কেউ চাইলে নিজের ধর্মীয় বিশ্বাস ও ব্যক্তিগত পছন্দ অনুযায়ী পর্দার মধ্যে স্বাচ্ছন্দ্যের পরিবেশে খাবার গ্রহণ করতে পারেন।
ইনফরমেশন অ্যান্ড কমিউনিকেশন টেকনোলজি বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী তাসলিমা ইসলাম জানান, আমার মতো আরো অনেকেই পরিপূর্ণ পর্দার কারণে ক্যাফেতে বসে খেতে পারেন না। কিছু খেতে ইচ্ছা করলে পার্সেল নিতে হয়, যা সবসময় সম্ভব হয় না। আবার পার্সেল নেওয়ার সময় মারাত্মক ভিড় হয়, ছেলে-মেয়েরা ভিড়ের মধ্যে দাঁড়িয়ে এক প্রকার যুদ্ধ করে পার্সেল নিতে হয়, এটাও সমাধান করা উচিত। যদি ক্যাফেতে একটি পর্দা কর্নারের ব্যবস্থা করা হয়, তাহলে আমাদের মতো শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হবে।
ক্যাফেটেরিয়ার পরিচালক উমর ফারুক বলেন,ক্যাফেটেরিয়া মূলত শিক্ষার্থীদের জন্য। যদি শিক্ষার্থীরা চায়, তাহলে তাদের জন্য একটি কর্নার করে দিতে আমাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই। এস্টেট অফিসের অনুমতি সাপেক্ষে, পশ্চিম পাশের কর্ণারে এটি স্থাপন করা যেতে পারে।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক ড. মো. আশরাফ আলী বলেন, শিক্ষার্থীরা যদি আবেদন করে, তাহলে আমি বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আমাদের কমিটির কাছে উপস্থাপন করব। এ বিষয়ে আমরা ক্যাফেটেরিয়া পরিচালনাকারীদের সঙ্গে পরামর্শ করব এবং কোথায় এটি স্থাপন করা সম্ভব হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা করব।
কেকে/এএম