গ্রামীণ অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হিসেবে গরু, ছাগল ও ভেড়া পালন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য স্বাবলম্বিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পশুগুলোর ওপর নির্ভর করেই শত শত পরিবার তাদের জীবিকা নির্বাহ করছে এবং অনেকেই অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, শালিখা উপজেলায় বর্তমানে গাভীর খামার রয়েছে ৮৮৯টি, মোটাতাজাকরণ খামার ২৮৬টি, ছাগলের খামার ১৯৭টি, ভেড়ার খামার ১৫টি এবং মুরগির খামার ১৪১টি। চার বছর আগেও এই সংখ্যা ছিল মাত্র ৭৬৭টি। বর্তমানে তা প্রায় দ্বিগুণে পৌঁছেছে।
পুকুরিয়া গ্রামের খামারি উবায়দুল মোল্লা বলেন, আমার খামারে ছয়টি গরু আছে। প্রতি ছয় মাস পরপর দুটি গরু বিক্রি করি। এ অর্থ দিয়ে জমি বন্ধক নিয়ে চাষ করি।
দীঘি গ্রামের রতন বিশ্বাস বলেন, গরুর গোয়ালটাই আমাদের ব্যাংক। যখন অর্থের প্রয়োজন হয়, তখন গরু বিক্রি করে প্রয়োজন মেটাই।
অনেক খামারি গরু বিক্রির অর্থ দিয়ে ছেলে সন্তানদের প্রবাসে পাঠাচ্ছেন এবং প্রবাসী আয় দিয়ে বাড়ি নির্মাণ ও জমি কিনছেন।
শালিখার উজগ্রাম, চৈতে, ধনেশ্বরগাতী, বড় থৈপাড়া, ছোট থৈপাড়াসহ কয়েকটি এলাকা ‘ভেড়ার গ্রাম’ হিসেবে পরিচিত হয়ে উঠেছে।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কৃষিবিদ শাহারিন সুলতানা জানান, পশু পালনকারীদের প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ প্রদানসহ উন্নত ও পুষ্টিসমৃদ্ধ ঘাস চাষে সহযোগিতা করা হচ্ছে। এতে খামারিদের খরচ কমছে এবং লাভ বাড়ছে।
পশু পালন এখন শুধু জীবিকার মাধ্যম নয়, বরং এটি সম্মানজনক পেশা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের পথ খুলে দিচ্ছে। নিম্ন-মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে মধ্যবিত্তরা এই খাতকে নিজেদের স্বপ্ন পূরণের মাধ্যম হিসেবে বেছে নিচ্ছে।
কেকে/এএম