যশোরের কেশবপুরে দুই তিন সপ্তাহ ধরে সবজির বাজার মূল্যে ব্যাপক ধস নেমেছে। প্রায় প্রতিদিনই কমছে সবজির দাম। এক্ষেত্রে বাজার থেকে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সস্তায় কিনে অতিরিক্ত দামে বিক্রি করলেও উৎপাদন খরচও উঠছে না কৃষকের। অতিকষ্টে উৎপাদন করা এসব সবজির দাম কৃষকরা ভোগ করতে না পারলেও হাত বদলের মাধ্যমে এই সবজি সাধারণ মানুষকে কিনতে হচ্ছে কয়েক গুণ দামে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) সরোজমিনে কেশবপুর পাইকারি কাঁচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, জমিতে চাষ করা টাটকা সবজি বিক্রি করতে এসে সস্তায় বিক্রি করতে অনেকটা বাধ্য হচ্ছে কেশবপুরসহ পার্শ্ববর্তি মনিরামপুর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিামাঞ্চলের হাজার হাজার কৃষকরা।
কেশবপুর পাইকারি কাঁচা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন সবজি বাজার ঘুরে সবজির বর্তমান বাজার মূল্য সম্পর্কে এমন তথ্য জানা যায়। কৃষক তাদের সবজির ন্যায্য দাম না পেলেও খুচরা বাজারে কয়েক গুণ বেশি দামে সবজি বিক্রি হচ্ছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীরা সস্তায় কিনে বেশি দামে বিক্রি করে পোয়াবারোতে পরিণত হলেও কৃষকের মাথায় হাত।
কেশবপুর পাইকারী কাচা বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিটা আড়তে রয়েছে সবজি আর সবজি। দূর-দূরান্ত থেকে আসা ব্যাপারীরা সবজি গন্তব্যে নিতে ব্যাটারি চালিত ভ্যান, নসিমন, করিমন ও আলম সাধু নিয়ে এসেছেন এ বাজারে। এখানে বাধা কপি প্রতি পিচ ৪ থেকে ৫ টাকা, বেগুন ৫ থেকে ১০ টাকা কেজি, ফুলকপি ২ টাকা থেকে ৩ টাকা কেজি, সিম ৫ টাকা থেকে ৮ টাকা কেজি, কাচ কলা ৮ টাকা থেকে ১০ টাকা কেজি, টমেটো ৩ টাকা থেকে ৫ টাকা কেজি, ওলকপিঁ ২ টাকা থেকে ৫ টাকা কেজি দরে পাইকারি বিক্রি হচ্ছে।
অপরদিকে, কেশবপুর খুচরা কাচা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, বাধা কপি প্রতি পিচ ১০ থেকে ১৫ টাকা, বেগুন ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি, ফুলকপি ১০ টাকা থেকে ২০ টাকা কেজি, সিম ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা কেজি, কাচ কলা ২০ টাকা থেকে ২৫ টাকা কেজি, টমেটো ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা কেজি, ওলকপি ১০ টাকা থেকে ১৫ টাকা কেজি দরে খুচরা বিক্রি হচ্ছে।
কেশবপুর পাইকারী কাচা বাজারে ফুলকপি বিক্রি করতে আসা উপজেলার মজিদপুর গ্রামের কৃষক মতলেব জানান, ফুলকপি ২ থেকে ৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। এই দামে সবজি বিক্রি করে হাটে আনতে ভ্যান ভাড়া এবং জমি থেকে ফুলকপি উঠানোর খরচ উঠছে না। তারপরও খাজনা দিতে হচ্ছে কেজিতে ১ টাকা।
কেশবপুর পাইকারী কাচা বাজারের সবজির আড়ৎ মেসার্স ভাই ভাই বাণিজ্য ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী মাহাবুবুর রহমান বলেন, কেশবপুর পাইকারী কাচা বাজারে সবমিলে প্রতিদিন ৬শ মণ সবজি বিক্রিয় হয়। কেশবপুর খুচরা কাচা বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারের এক হাজারেরও অধিক খুচরা বিক্রেতারা এ কাঁচা বাজার থেকে সবজি ক্রয় করে।
তিনি আরো বলেন, চলতি বছর বন্যার কারণে প্রথমে সবজির প্রচুর দাম ছিল। এ জন্য বন্যার পানি সরে যাওয়ার পর এ এলাকায় সবজির ব্যাপক চাষ হয়েছে। এ কারণে সবজির দাম কম।
কেকে/এজে