রাজশাহীতে ‘নারায়ে তাকবীর’ স্লোগান দিয়ে ফাঁকা গুলি ছুঁড়ে ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে হাট ইজারার টেন্ডার বাক্স লুট করার ঘটনা ঘটেছে।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে পবা উপজেলা পরিষদে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানা যুবদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক শাকিলুর রহমান রন ছুরিকাঘাতে আহত হন। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি জেলা যুবদলের একজন যুগ্ম আহ্বায়কের সঙ্গে দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলেন।
পবা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৪৩২ বঙ্গাব্দের জন্য পবা উপজেলার ১২টি হাট ইজারা দিতে গত ১৫ জানুয়ারি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সোমবার ছিল দরপত্র দাখিলের শেষ দিন। টেন্ডার বাক্স রাখা ছিল ইউএনও’র কার্যালয়ের নিচতলায়। সেখানে একপক্ষ আরেকপক্ষকে দরপত্র দাখিল করতে বাধা দেয়। এরপর গুলি, ককটেলের বিস্ফোরণ এবং টেন্ডার বাক্স ভেঙ্গে সব দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে জেলা যুবদলের এক নেতা বলেন, মূলত খড়খড়ি হাট ইজারা নিয়ে দ্বন্দ্ব। আমরা দরপত্র জমা দিতে এলে গেটের কাছে কয়েকজন বাধা দেন। এরপরও আমরা ব্যাংক ড্রাফট করি এবং বাক্সে দরপত্র জমা দিতে যাই। তখন আমাদের লোকজনের ওপর হামলা হয়। একপর্যায়ে বাধাদানকারীরা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোঁড়ে, ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং বাক্স খুলে সব শিডিউল লুট করে নিয়ে যায়।
ওই যুবদল নেতা বলেন, ককটেল বিস্ফোরণ, গুলিবর্ষণ এবং টেন্ডার বাক্স থেকে দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়ার সময় হামলাকারীরা “নারায়ে তাকবীর” স্লোগান দিচ্ছিলেন।’ হামলাকারীদের নেতৃত্বদানকারী হিসেবে তিনি স্থানীয় এক জামায়াত নেতা ও সাবেক এক শিবির নেতার নাম জানান।
যোগাযোগ করা হলে সাবেক ওই শিবির নেতাও নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘আমি দরপত্র জমা দিতে গিয়েছিলাম, তা ঠিক। তবে এই দরপত্র লুটের ঘটনার সঙ্গে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। এটা যুবদল এবং বিএনপির দুই গ্রুপের দ্বন্দ্ব।’
ঘটনার পর দুইপক্ষ চলে যাওয়ার পর পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা যায়। পুলিশ ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার ফুটেজ দেখে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শনাক্ত করার চেষ্টা করছে বলে জানান আরএমপির শাহমখদুম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুমা মোস্তারিন। তিনি বলেন, ‘গুলি ফুটেছে। ককটেলেরও বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। জমা পড়া সব দরপত্র লুট হয়েছে। শুধু বাক্সটি পড়ে আছে। উপজেলা প্রশাসন যেভাবে চাইবে, সেভাবে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পবা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত আমান আজিজ বলেন, দরপত্র জমাদানের সময় ছিলো সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। সকাল থেকে বেশ কয়েকটা দরপত্র জমাও পড়ে। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে হঠাৎ করেই দুপক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ককটেল বিস্ফোরণ ও কয়েক রাউন্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটে। এসময় দরপত্র বাক্স ভেঙ্গে জমা হওয়া দরপত্র লুট করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ ঘটনার পর পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে আলামত সংগ্রহ করেছে। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক। আমরা এ বিষয়ে আইনানুগ ব্যবস্থা নেব।
এখন দরপত্রের কী হবে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, সাধারণত দরপত্র জমাদানের একাধিক সময় নির্ধারণ করা থাকে। আগামী তারিখ আছে ৬ ও ৭ এপ্রিল। ইজারা প্রক্রিয়া বাতিল হবে না।
কেকে/এজে