প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য অনুযায়ী আগামি ডিসেম্বর অথবা আগামি বছরের জুনে জাতীয় নির্বাচনের আয়োজন করতে কমিশন প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ।
সোমবার (৩ ফেব্রুয়ারি) ভোটার তালিকা হালনাগাদ এবং ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে রাজশাহী অঞ্চলের নির্বাচন কর্মকর্তাদের সাথে মতবিনিময় শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ তথ্য জানান।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করেছে সত্যিকার অর্থে একটি অবাধ, নিরপেক্ষ, উৎসবমুখর ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য। যেসব কারণে জুলাই-আগস্টের অবতারণা হয়, তার মধ্যে অন্যতম ছিল ভোটের অধিকার হারিয়ে যাওয়া। বর্তমান কমিশন একটি ভঙ্গুর নির্বাচন ব্যবস্থার মধ্যে দায়িত্ব গ্রহণ করেছে। অপরপাশে রয়েছে সন্তানদের রক্ত। কাজেই একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য এই কমিশন দায়বদ্ধ।
তিনি বলেন, প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পরও এতোদিন যারা ভোট দিতে পারেনি, তারাও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য অপেক্ষায় রয়েছে। কাজেই কোনো নাগরিক উপযুক্ত হওয়ার পরও ঐচ্ছিক কাগজপত্র বা সামান্য জটিলতার কারণে যেন ভোটার হওয়া থেকে বঞ্চিত না হয়, সে বিষয়ে কর্মকর্তাদের সতর্ক থাকতে হবে।
ছবি: খোলা কাগজ
স্থানীয় সরকার নির্বাচন আয়োজনের ব্যাপারে ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ বলেন, স্থানীয় নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নির্বাচন কমিশন নেয় না। নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব হচ্ছে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও রাষ্ট্রপতি নির্বাচন আয়োজন করা। আমাদের অতিরিক্ত দায়িত্বের অংশ হিসেবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় তথা সরকার যখন সিদ্ধান্ত নেয়, তখন আমরা সেই নির্বাচন অনুষ্ঠান করে দিই। সুতরাং স্থানীয় সরকার নির্বাচন হবে কি হবে না, কবে হবে, এটা সরকারই সিদ্ধান্ত নিবে। যখন সিদ্ধান্ত নিবে তখন আমরা জানতে পারব।
নির্বাচন কমিশনার বলেন, মৃত ভোটারদের বাদ দিতে বাড়ি বাড়ি গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। এরই মধ্যে এক শতাংশ ভোটারের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়েছে। সারাদেশে দেড় শতাংশ মৃত ভোটার বাদ পড়লে প্রায় ১৮ লাখ ভোটার বাদ যাবে।
বিগত বিতর্কিত নির্বাচনের সময় দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন, এমন প্রশ্নের জাবাবে তিনি বলেন, নির্বাচন ব্যবস্থাপনায় কেউ-ই আইনের উর্ধ্বে নয়। আমরা যারা বর্তমানে দায়িত্ব পালন করছি, আমরাও আইনের উর্ধ্বে নই। কেউ যদি নিজে সুপরিকল্পিতভাবে এবং নিজে সংশ্লিষ্ট থেকে কোনো অপরাধ করে থাকে, তাকে আইন আদালতের সামনে যেতে হতেই পারে। এটা নির্বাচন কমিশনের বিষয় নয়, আইন আদালতের বিষয়।
আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় জেলা প্রশাসক আফিয়া আখতার ও জেলা পুলিশের বিশেষ শাখার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন।