কুমিল্লার মুরাদনগরে সম্পত্তির নিয়ে বিরোধের জেরে ভাতিজিকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে আপন চাচার বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় মুরাদনগর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন আহত হোসনা আক্তার (৩৫)'র ছোট বোন আসমা বেগম।
এ মামলায় দুজনকে আটক করে বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করেছে পুলিশ। এর আগে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে মুরাদনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের হীরাকান্দা গ্রামে এ ঘটনা হয়। মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
স্থানীয় ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গুরুতর আহত হোসনা আক্তারের বাবা লিল মিয়া গত চার বছর আগে মারা গেছে। মৃত্যুর পূর্বে লিল মিয়া তার স্ত্রী জামেনা বেগমের নামে বাড়ির জায়গা দলিল করে দেন। লিল মিয়ার মৃত্যুর পর ভাই মুজিব মিয়া বাড়িটি দখল করার জন্য বিভিন্ন সময় জামেনা বেগমের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করে আসছেন।
মঙ্গলবার বিকালে জামেনা বেগম নিজের বাড়ির জায়গায় লাকড়ি শুকাতে দিলে এটি তার জায়গা নয় বলে মজিবুর রহমান, তার স্ত্রী রহিমা বেগম, ছেলে আনিছুর রহমান, মেয়ে ডালিয়া আক্তার জামেনা বেগমকে বাধা দেন এবং গালমন্দ করতে থাকে। এতে জামেনা বেগম প্রতিবাদ করলে মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী সন্তানরা ক্ষিপ্ত হয়ে জামেনা বেগমকে মারধর করতে থাকে।
জামেনা বেগমের আর্তচিৎকার শোনে পার্শ্ববর্তী শ্বশুরবাড়ি থেকে জামেনা বেগমের মেয়ে হোসনা আক্তার ও নাতনি আফসানা আক্তার লিজা তাকে উদ্ধার করতে গেলে তাদেরও মারধর করতে থাকে। একপর্যায়ে মজিবুর রহমান ঘর থেকে মাছ ধরার টেঁটা এনে আফসানা আক্তার লিজাকে আক্রমণ করে। লিজাকে বাঁচাতে গিয়ে হোসনা আক্তারের হাতে টেঁটাবিদ্ধ হয়।
টেঁটা হোসনা আক্তারের হাতের একপাশ দিয়ে ঢুকে অপর পাশ দিয়ে বের হয়ে যায়। এ সময় আফসানা আক্তার লিজার হাতেও টেঁটাবিদ্ধ হয়। এলাকাবাসী টেঁটাবিদ্ধ অবস্থায় হোসনা আক্তারকে এবং আহত লিজা ও জামেনা বেগমকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। সেখানে আফসানা আক্তার লিজা ও জামেনা বেগমকে চিকিৎসা দেওয়া হলেও হোসনা আক্তারের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে দ্রুত কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
আহত আফসানা আক্তার লিজা বলেন, আমার নানা মৃত্যুর পর বাড়িটি দখল করার জন্য এর আগেও মজিবুর রহমান কয়েকবার আমার নানীকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দিয়েছে। প্রতিবাদ করতে গিয়ে আমার মা খালারাও মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী সন্তানদের হাতে নির্যাতনের শিকার হতে হয়েছে। আজকে মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী ছেলেমেয়েরা আমার নানী ও আমাদের মেরে ফেলতে চেয়েছিল। আমরা এই মজিবুর রহমান ও তার স্ত্রী, ছেলে মেয়েদের দ্রুত গ্রেফতার করার জন্য দাবি জানাচ্ছি।
মুরাদনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) জাহিদুর রহমান বলেন, এ বিষয়ে থানায় মামলা হয়েছে। রাতেই দুজনকে আটক করা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
কেকে/এএস