রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১১ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: হামাস মুক্তি দিলেও, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু      মাথায় লাল কাপড় বেঁধে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা      জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের রিভিউ শুনানি মঙ্গলবার      গণপরিবহন নৈরাজ্যে ভুগছে ঢাকাবাসী      দুষ্কৃতকারীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে: র‍্যাব      গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়ে বিভক্ত দায়িত্বশীলরা      ডেভিল হান্টের মধ্যেও সক্রিয় অপরাধীরা      
খোলাকাগজ স্পেশাল
রোজায় বিদ্যুৎ সংকটের শঙ্কা
আলতাফ হোসেন
প্রকাশ: শুক্রবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১১:৫৬ এএম আপডেট: ০৭.০২.২০২৫ ১২:২৭ পিএম  (ভিজিটর : ১০০)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মে বাড়বে বিদ্যুতের চাহিদা। একই সময়ে শুরু হচ্ছে সেচ মৌসুমও। অন্যদিকে গ্যাসের তীব্র সংকট, অর্থ সংকটে পর্যাপ্ত এলএনজি আমদানি ব্যাহত, দেশীয় উৎস থেকেও গ্যাসের জোগান কমছে, বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর বকেয়া পরিশোধে বিলম্বের কারণে আসন্ন রমজান ও গ্রীষ্মকালে সারা দেশে ব্যাপক লোডশেডিংয়ের শঙ্কা তৈরি হয়েছে বলছেন খাতসংশ্লিষ্টরা। তবে আসন্ন রমজানে সারা দেশে লোডশেডিংমুক্ত রাখার টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। 

ইতোমধ্যেই শীতকাল শেষ হওয়ার আগেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় লোডশেডিং শুরু হয়েছে। চলতি ফেব্রুয়ারি মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে সেচ কার্যক্রম শুরু করবেন কৃষকরা। আর  মার্চ থেকে শুরু হবে গ্রীষ্ম মৌসুম। বিদ্যুৎ বিভাগের হিসাব অনুযায়ী, সে সময় বিদ্যুতের চাহিদা দাঁড়াবে প্রায় ১৮ হাজার মেগাওয়াট। তবে বিদ্যুৎ উৎপাদন সর্বোচ্চ ১৪ হাজার মেগাওয়াট পর্যন্ত হতে পারে। ফলে প্রায় ৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের ঘাটতি থাকবে। এ পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ সংকট আরও প্রকট হতে পারে। ফলে বিদ্যুৎ খাতে সংকট সমাধানের জন্য দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার মাধ্যমে এ খাতকে স্থিতিশীল করার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেজ্ঞরা।

সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (বিপিডিবি) জানিয়েছে, গত দুবছর ধরে তারা বিদ্যুৎকেন্দ্র মালিকদের পাওনা পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে স্থানীয় মুদ্রার অবমূল্যায়ন শুরু হওয়ায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। ২০২৪ সালের নভেম্বর পর্যন্ত সংস্থাটির বিভিন্ন পাওনাদারের কাছে বিপিডিবির বকেয়ার পরিমাণ প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা দাঁড়িয়েছে। বর্তমানে বিদ্যুৎ বোর্ডের বিভিন্ন বিদ্যুৎ উৎপাদনকারীদের কাছে মোট বকেয়া প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা, যার মধ্যে শুধু ফার্নেস অয়েলচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোর পাওনা ১০ হাজার কোটি টাকা এবং অন্যান্য কেন্দ্রগুলোর পাওনা ৬ হাজার কোটি টাকা।

বিগত আওয়ামী লীগ সরকার জ্বালানি নিশ্চিত না করেই একের পর এক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করেছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা প্রায় ২৭ হাজার মেগাওয়াট। তবে সর্বোচ্চ সময়ে এর অর্ধেকও উৎপাদন সম্ভব হচ্ছে না। ফলে প্রতিবছর বড় সময় অলস বসিয়ে রাখতে হয়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্র। দিতে হয়েছে অলস কেন্দ্রের ভাড়া। খরচের চাপ সামলাতে ভোক্তা পর্যায়ে দাম বেড়েছে, সরকারের দায় বেড়েছে। 

আগের সরকারের রেখে যাওয়া বিদ্যুৎ বিলের বকেয়ার সঙ্গে দিন দিন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারেরও বকেয়া বাড়ছে। বিদ্যুতের বকেয়া বিল না পাওয়ার কারণে বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা প্রাথমিক জ্বালানি কিনতে পারছে না। দিন দিন সরকারের কাছে বকেয়া বিলের পরিমাণ বাড়ছেই। বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মালিকরা জানিয়েছেন, সরকারের কাছ থেকে বকেয়া না পেলে তাদের বিদ্যুৎকেন্দ্র চালানো কঠিন হবে। ফলে এবার চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করতে না পারলে লোডশেডিং বাড়বে।

আসন্ন রমজানে সারা দেশে লোডশেডিংমুক্ত রাখার টার্গেট নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেন, রোজায় নয়, আসন্ন গ্রীষ্ম মৌসুমে ৭০০ থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট পর্যন্ত লোডশেডিং হতে পারে। এর বিপরীতে গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা ধরা হয়েছে ১৮ হাজার মেগাওয়াট। রমজানে বিদ্যুতের চাহিদা হবে ১৫ হাজার মেগাওয়াটের মতো। আমরা পুরোপুরি সরবরাহের প্রস্তুতি নিয়েছি। রোজার মাসে যে পরিমাণ জ্বালানি প্রয়োজন হবে, তার জন্য যে পরিমাণ টাকা ও ডলার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। বিদ্যুৎ উৎপাদনে এখন ৯০০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ দেওয়া হচ্ছে। রোজার মাসের জন্য ১২০০ মিলিয়ন সরবরাহ এবং এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর ১১০০ মিলিয়ন গ্যাস সরবরাহ করা হবে। এতে বিদ্যুৎ উৎপাদন বেড়ে যাবে।

ফাওজুল কবির খান বলেন, গ্রীষ্ম ও সেচ মৌসুমে আমরা যদি শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্রের (এসি) তাপমাত্রা ২৫ অথবা ২৬ ডিগ্রিতে রাখতে পারি তাহলে ২ থেকে ৩ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা কমে যাবে। তাহলে লোডশেডিংয়ে প্রয়োজন হবে না। এ ছাড়া প্রতিবারের মতো এবারও কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে পিক আওয়ারে সেচ পাম্প বন্ধ রাখা, রাত ১১টা থেকে সকাল ৯টা পর্যন্ত সেচ পাম্প চালাতে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা, ইফতার, সাহরি ও তারাবির নামাজে লোডশেডিং না করা, মসজিদগুলোর এসি ২৫ ডিগ্রির নিচে না নামানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এম তামিম বলেন, পাওনা পরিশোধ না পাওয়ার কারণে বিদ্যুৎকেন্দ্র মালিকরা উৎপাদন বন্ধ রাখলে দেশ কঠিন সমস্যায় পড়বে। বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রচলিত জ্বালানির ওপর নির্ভর করা ছাড়া সরকারের আর কোনো বিকল্প নেই। 

বিদ্যুৎ বিভাগের সচিব ফারজানা মমতাজ বলেন, গ্রীষ্মে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়বে। আবার জ্বালানিরও সংকট রয়েছে। ফলে লোডশেডিং হতেই পারে। তবে আমাদের চেষ্টার কোনো কমতি থাকবে না। যতটা সম্ভব লোডশেডিং কমানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে।

কেকে/ এমএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  রমজান   বিদ্যুৎ সংকট   শঙ্কা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
চকরিয়ায় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
হামাস মুক্তি দিলেও, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু
উলাইল প্রমথ চন্দ্র বিদ্যায়তনে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন
মাথায় লাল কাপড় বেঁধে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা

সর্বাধিক পঠিত

শাবি ক্যাম্পাসে কর্মীসভার অনুমতি না পাওয়াকে ষড়যন্ত্র বলছে ছাত্রদল
বাকৃ‌বি‌তে জন্ম নি‌রোধকসহ ৫ ছিনতাইকারী আটক
লোহাগাড়া প্রবাসী মানবিক ফাউন্ডেশনের ফ্রি চিকিৎসা সেবা
বৈষম্যবিরোধীদের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন

খোলাকাগজ স্পেশাল- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝