ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর থেকে দেশবিরোধী নানা তৎপরতায় লিপ্ত আওয়ামী লীগ ও তার দোসররা। বিভিন্ন সময়ে দেশকে অস্থিতিশীল করতে ষড়যন্ত্রের জাল বুনেছে তারা। এবার নতুন তৎপরতা শুরু করেছে স্বৈরাচারের অন্যতম দোসর পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্য। যার মধ্যে আছেন শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ। সম্প্রতি তার একটি কথপোকথন ছড়িয়ে পড়েছে গণমাধ্যমে। সেখানে পলাতক আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি এক গোপন বৈঠকে যোগ দেন তিনি।
ওই কথপোকথনে আওয়ামী লীগের পলাতক নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে সাবেক এ আইজিপি বলেন, আপনারা যখন (আওয়ামী লীগ) সংগঠিত হবেন, তখন পুলিশের উপস্থিতি আপনাদের সামনে থাকবে, এতে কোনো সন্দেহ নেই।
আওয়ামী লীগের সময়ে শেখ হাসিনার অন্যতম আস্থভাজন ছিলেন বেনজীর আহমেদ। আইজিপি হওয়ার আগে তিনি ছিলেন র্যাবের মহাপরিচালক, তার আগে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেন তিনি। তার নেতৃত্বে পুলিশের একটি অংশ হাসিনার স্বৈরাচারের সহযোগী হিসেবে কাজ করেন। যাদের বেশিরভাগই বর্তমানে পলাতক। তবে পলাতক থাকলেও বাংলাদেশ বিরোধী ষড়যন্ত্রে এখনো লিপ্ত তারা। এমন তথ্যই উঠে এসেছে বেনজীরের ফাঁস হওয়া কথপোকথনে।
বেনজীর আহমেদকে ওই কথপোকথনে আরো বলতে শোনা যায়, বিএনপি, এরশাদ সরকারের আমলে অনেক এমপি পুলিশের মধ্যে তাদের লোক ঢুকিয়েছিল। এসব লোক এখনো পুলিশে রয়েছেন, যারা নিজেদের পার্টির সঙ্গে যুক্ত এবং রাজনৈতিক কাজে সক্রিয়। তিনি বলেন, এ ধরনের পুলিশ সদস্যদের এখনো অনেকেই তাদের কাজে সক্রিয় এবং রাজনৈতিক অবস্থান নিতে প্রস্তুত।
পুলিশের মনোভাব নিয়ে সাবেক এ আইজিপি দাবি করেন, এখনকার পুলিশ বাহিনী বেশ হাইলি ডি-মোরালাইজড, বা তাদের মনোবল ভেঙে গেছে। অনেক পুলিশ সদস্য এ সরকারের (অন্তর্র্বর্তী সরকার) প্রতি ক্ষুব্ধ, কারণ তাদের অনেককেই হত্যার মাধ্যমে ক্ষমতায় আসা হয়েছে। ৪২৭টি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে হামলা হয়েছে, অস্ত্রপাতি লুট করা হয়েছে, এমনকি প্রেগনেন্ট কনস্টেবলকেও পুড়িয়ে মারা হয়েছে। ওরা (পুলিশ) তো এগুলো সহজভাবে নেয়নি।
তিনি বলেন, লোয়ার র্যাংঙ্ক, বিশেষ করে কনস্টেবল থেকে পরিদর্শক এদের একটা বিশাল অংশ খুবই আনহ্যাপি, এটা বলতে পারি। তবে ওই প্রশ্নটা, তাহলে আমাদের ধরে কারা? অ্যারেস্ট করে কারা? ধরা হচ্ছে, ওই পার্টি।
বেনজীর জানান, ৫ আগস্টের পর পুলিশ বাহিনীর এক বড় অংশ কর্মস্থল ত্যাগ করেছে এবং এরপর তাদের অনেককে অকার্যকর জায়গায় পাঠানো হয়েছে। অনেক পুলিশ সদস্য চাকরিচ্যুতও হয়েছেন, আর তাদের জায়গায় রিটায়ার্ড পুলিশ সদস্যদের নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে।
বেনজীর আহমেদ শেষে বলেন, তিনি তার দলের মধ্যে থাকা পুলিশ সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করছেন এবং তাদের কাছ থেকে সাহায্য পাওয়ার আশা করছেন। এ সহযোগিতার মাধ্যমে আরো সুবিধা পাওয়া যাবে।
কেকে/এআর