মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে কুয়াশার চাদরে ঢাকা পড়েছে প্রকৃতি। একই সঙ্গে বাতাস ও কনকনে শীতের কারণে মাঠে যেতে পারছেন না চাষিরা। দিনমজুররা ঘর ছেড়ে বের হচ্ছেন না। মাঘের শেষ সপ্তাহে জেঁকে বসা শীতের প্রকোপে জনজীবন স্থবির হয়ে পড়েছে।
স্থানীয় আবহাওয়া অফিস জানায়, শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৬টা ও ৯টায় শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিস তাপমাত্রা ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করেছে, যা গতকালের তুলনায় বেশ কম।
গতকাল শুক্রবার শ্রীমঙ্গলে তাপমাত্রা ছিল ১৪ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং বৃহস্পতিবার ছিল ১২ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
তীব্র শীতে চা-বাগান এবং কৃষি খাতে কাজ করা মানুষদের জন্য চলাফেরা করা অত্যন্ত কঠিন হয়ে পড়েছে। ঠাণ্ডা বাতাস ও কনকনে শীতের কারণে খেটেখাওয়া মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়েছে।
শ্রীমঙ্গল ও সদর উপজেলার হাইল হাওরসহ ছোট-বড় অনেক হাওর রয়েছে, যেখানে কৃষকরা বোরো ধান আবাদ করে থাকেন। শীতের কারণে এই অঞ্চলের শ্রমজীবী মানুষদের কাজ করতে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। ভোর হতেই কৃষকরা মাঠে কাজ করতে বের হলেও তীব্র ঠাণ্ডা ও কুয়াশা তাদের কাজের গতি থামিয়ে দিয়েছে।
কৃষি শ্রমিক আলী হোসেনের ভাষ্য, জান বাঁচলে তো টাকা আর পয়সা। শীত কমুক টেকা রুজি হইবোনে।
ট্রাকচালক শাহজাহান মিয়া জানান, তীব্র কুয়াশার কারণে দিনের বেলায়ও তিনি তার ট্রাকের হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করেন। রাতে ফগলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চালানো আরও কঠিন হয়ে পড়ছে। তিনি বলেন, দুর্ঘটনা এড়াতে দিনের বেলায়ও হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে হয়, তবে রাতে খুব বেশি সতর্ক থাকতে হয়, কারণ কুয়াশার কারণে স্বাভাবিকভাবে গাড়ি চালানো সম্ভব হয় না।
শ্রীমঙ্গলের এই অবস্থা সাধারণ মানুষের জন্য বিশেষ করে যাদের জীবিকা নির্ভর করে দিনের কাজের উপর, তাদের জন্য বিপদজনক হয়ে উঠেছে। অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, শীতের কারণে তাদের কাজের সময় কমে যাচ্ছে এবং কিছু শ্রমিক কাজে যেতে পারছেন না। কৃষকরা যদি পর্যাপ্ত শ্রমিক না পান, তবে তাদের ফসলের উৎপাদন কম হতে পারে এবং কৃষি খাতের উন্নতির পথে এটি একটি বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে।
শ্রীমঙ্গল আবহাওয়া অফিসের পর্যবেক্ষক মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ৬টায় ও ৯টায় শ্রীমঙ্গলে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
কেকে/এআর