রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১১ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: পাহাড় খেকোদের ব্যবস্থা নিতে পরিবেশ অধিদফতরের অনিহা       ২৫ ফেব্রুয়ারিকে ‘জাতীয় শহীদ সেনা দিবস’ ঘোষণা      বাধ্যতামূলক অবসরে চার ডিআইজি      ভারতে বিপক্ষে টস জিতে ব্যাটিংয়ে পাকিস্তান      বাধ্যতামূলক হচ্ছে অনলাইনে রিটার্ন দাখিল      ভারতের দিকে তাকিয়ে আ.লীগ নেতারা      কোনো দলের এজেন্ডা বাস্তবায়ন না করতে পুলিশ সদস্যদের নির্দেশ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার      
গ্রামবাংলা
বাঞ্ছারামপুরে একই পরিবারে চার প্রতিবন্ধী, খাবার জুটে ভিক্ষা করে
ফয়সল আহমেদ, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশ: শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৮:০৫ পিএম  (ভিজিটর : ৪২৪)
ছবি : প্রতিনিধি

ছবি : প্রতিনিধি

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের আশ্রাফবাদ গ্রামের এক অসহায় পরিবারের ৪ সদস্য শারীরিক প্রতিবন্ধকতায় আচ্ছন্ন। আর্থিক সংকট ও চিকিৎসার অভাবে তারা বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম চালাচ্ছে। এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনের অশান্তি, দুর্দশা, আর অনুপ্রেরণার গল্প।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ছলিমাবাদ ইউনিয়নের আশ্রাফবাদ গ্রামে এক বেদনাদায়ক পরিস্থিতির সাক্ষী হয়েছে একটি পরিবার। মৃত ফরিদ মিয়ার ৫ সন্তানের মধ্যে ৪ জনই শারীরিক প্রতিবন্ধী হয়ে আছেন। সেলিনা বেগম (৩০), জাহাঙ্গীর আলম (২৭), মো. আল আমিন (২৫), এবং শান্তনা আক্তার (২০)—এই চার সদস্যই বিভিন্ন শারীরিক প্রতিবন্ধকতার শিকার হয়ে জীবনযাপন করছেন।

মা নয়নতারা বেগম জানান, সেলিনা প্রায় ১২ বছর আগে মৌমাছির কামড়ে আক্রান্ত হয়ে পায়ে ফুলে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পড়েন। চিকিৎসার অভাবে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হয়ে যায়। জাহাঙ্গীর টাইফয়েট রোগে আক্রান্ত হয়ে দুই পা বাঁকা হয়ে যাওয়ার পর হাঁটা-চলা করতে পারছেন না। আল আমিনের বয়স যখন ৮ বছর, তখন বাঁশের কঞ্চিতে গুঁতো খেয়ে তার হাত-পা অবশ হয়ে যায়। শান্তনা, মাত্র ৬ বছর বয়সে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসার অভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে।

জাহাঙ্গীরের বিয়ের পর তাদের একটি মেয়ে হয়, যিনি ভাষা বিকৃতিতে ভুগছেন এবং বোবা। এই চার প্রতিবন্ধী মানুষ শারীরিক, মানসিক এবং আর্থিক দুর্দশায় অবতীর্ণ। ১০ বছর আগে তাদের পিতা মারা যান, তখন থেকেই পরিবারের আয়-রোজগার একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। এক সময়ের সুখী পরিবারটি এখন খাওয়া-দাওয়া এবং চিকিৎসার অভাবে মানবেতর জীবন কাটাচ্ছে।

দরিদ্রতা ও প্রতিবন্ধকতার কারণে তারা এখন ভিক্ষাবৃত্তি করে জীবিকা নির্বাহ করছে। সাড়ে ৮শ টাকার সরকারি ভাতা ছাড়া তাদের কাছে আর কোনো উপায় নেই। ছোট একটি ভাঙা ঘরে তারা ৫ জন একত্রে থাকেন। ঘরের টিনের ছাদ দিয়ে বৃষ্টির পানি ঝরে, এবং গোসল করার জন্য কোনো আলাদা জায়গা নেই।  

শান্তনা আক্তার তার কষ্টের কথা বলতে গিয়ে বলেন, এই বয়সে আমি ভাইদের ভিক্ষার উপর ভর করতে হয়, সরকার আমার প্রতিবন্ধী ভাতা দেয় না।

এদিকে, প্রতিবেশী কাশেম মিয়া জানান, পরিবারটির জন্য অত্যন্ত সহায়তা প্রয়োজন। তারা খুবই অসহায় এবং তাদের পরবর্তী জীবন নির্বাহ করা কঠিন হয়ে পড়েছে।

বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. জালাল উদ্দিন জানান, তিনি পরিবারটির বিষয়ে অবগত এবং শীঘ্রই সহায়তার ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

তবে, তিনি জানান, তিনজন প্রতিবন্ধী ভাতা পাচ্ছেন, যার পরিমাণ মাসে ৮৫০ টাকা।

এই পরিবারের অবস্থা অত্যন্ত করুণ, এবং তাদের জন্য সহায়তার প্রয়োজনীয়তা দিন দিন আরো বেড়ে যাচ্ছে। মা নয়নতারা বেগম কাঁদতে কাঁদতে বলেন, আমাদের দুই বেলা দুমুঠো ভাত খাওয়ার জন্য দয়া করে সবাই এগিয়ে আসুন।

কেকে/এএম
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

পদ্মার চরে মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে সূর্যমুখী
সিলেট তামাবিল মহাসড়কে ট্রাক চাপায় নিহত ২, আহত ১
সাতকানিয়ায় ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পদে পুন:বহালের দাবিতে মানববন্ধন
বিদ্যালয়ে না যেয়েও সুবিধা ভোগের অভিযোগ শিক্ষকের বিরুদ্ধে
অপারেশন ডেভিল হান্টে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আটক

সর্বাধিক পঠিত

শাবি ক্যাম্পাসে কর্মীসভার অনুমতি না পাওয়াকে ষড়যন্ত্র বলছে ছাত্রদল
টঙ্গীতে আ.লীগের নেত্রীসহ পাঁচজন গ্রেফতার
মাইকিং করে চাঁদা চেয়ে বহিষ্কার হলেন সেই যুবদল নেতা
বোরো চাষে পানির মহা সংকটে কুষ্টিয়ার লক্ষাধিক কৃষক
বিয়ে বাড়িতে উচ্চস্বরে গান বাজানো কেন্দ্র করে সংঘর্ষ, নিহত ১

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝