বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নিহত পোশাকশ্রমিক জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি জালাল উদ্দিন জালুকে গ্রেফতারের পর পুলিশের কাছ থেকে ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে এক ওয়ার্ড বিএনপি নেতা ও তার সঙ্গীদের বিরুদ্ধে।
শনিবার (৮ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় গাজীপুর সদর উপজেলার শিরিরচালা (প্যানটেক্স মোড়) এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। শনিবার রাত থেকে স্থানীয় বিএনপি নেতাদের নিয়ে এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করার অভিযোগ উঠেছে জয়দেবপুর থানা পুলিশের বিরুদ্ধে। ওই হত্যা মামলার আসামিকে থানায় ধরে আনার কোনো চেষ্টা করেনি পুলিশ- এমন তথ্য দিয়েছে প্রত্যক্ষদর্শীরা। বিভিন্ন মহলে ঘুস দিয়ে ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহের অভিযোগও উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে।
অভিযুক্ত বিল্লাল হোসেন (৪৫) ভাওয়ালগড় ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তিনি গাজীপুর সদর উপজেলার জয়দেবপুর থানার শিরিরচালা গ্রামের মৃত মমতাজ উদ্দিনের ছেলে।
আসামি জালাল উদ্দিন জালু তার ছোট ভাই। জালু শ্রীপুর থানা এলাকায় জুয়েল হত্যা মামলার এজাহারভুক্ত আসামি এবং জয়দেবপুর থানার সন্দেহজনক আসামি।
নিহত জুয়েল ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার সিংদই গ্রামের আব্দুল হাইয়ের ছেলে।
তিনি মাওনা উত্তরপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম সরকারের বাড়িতে ভাড়া থেকে স্থানীয় ক্রাউন সোয়েটার কারখানায় অপরেটর পদে চাকরি করতেন।
বিগত ৫ আগস্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় জেলার শ্রীপুর মাওনা (পল্লী বিদ্যুৎ মোড়) এলাকায় আন্দোলন চলাকালে নিহত হন। এ ঘটনায় তার স্ত্রী জুবেদা আক্তার শ্রীপুর থানায় একটি হত্যা মামলা (নং-১/০৯/২০২৪) দায়ের করেন।
ওই মামলায় জালাল উদ্দিন জালু এজাহারভুক্ত ৯১ নম্বর আসামি। আসামি জালু গ্রামে অবস্থান করছেন এমন গোপন সংবাদে পুলিশ শিরিরচালা (প্যানটেক্স মোড়) এলাকায় অভিযান চালিয়ে জালুকে গ্রেফতার করে। ছোট ভাইকে গ্রেফতারের খবর পেয়ে বড় ভাই স্থানীয় ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বিল্লাল হোসেন মোবাইল ফোনে তার কয়েকজন সহযোগীকে ঘটনাস্থলে আসতে বলেন।
সেখানে গ্রেফতার হওয়া জালুর আর এক ভাই জিলান উপস্থিত ছিলেন।
এ ব্যাপারে জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল হালিম বলেন, 'আসামি গ্রেফতার করার আগে পালিয়ে গেছে।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায় হাতকড়া লাগানো অবস্থায় হত্যা মামলার আসামি জালুকে পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সোহরাব ছেড়ে দেন। আসামি ধরে রাখার কিংবা থানায় নেওয়ার কোনো চেষ্টা করেনি পুলিশ।
বিল্লাল হোসেন বলেন, ঘটনাস্থলে তিনি ছিলেন না। তার ছোট ভাই জিলান উপস্থিত ছিলেন। পুলিশ জালুকে গ্রেফতারের পর ছেড়ে দিয়েছে বলেও তিনি জানান।
এ ব্যাপারে গাজীপুর পুলিশ সুপার (এসপি) ড. চৌধুরী মো. যাবের সাদেক বলেন, আসামি ছেড়ে দেওয়ার ঘটনা তিনি জানেন না৷ জেনে ব্যবস্থা নেবেন।
কেকে/এএস