কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও জীবাশ্মসম্পদের সঠিক প্রয়োগের মাধ্যমে কৃষির টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যে দেশে প্রথমবার আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি শুরু হচ্ছে ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং’ শীর্ষক আন্তর্জাতিক সম্মেলন।
সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান সম্মেলনের আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক ও বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আব্দুল আওয়াল।
বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই) এবং বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে। দেশি-বিদেশি কৃষি প্রকৌশলী, উদ্যোক্তা ও কৃষকসহ মোট তিন শতাধিক অংশগ্রহণকারী এতে অংশ নেবেন।
দুই দিনব্যাপী এ সম্মেলনে ছয়টি টেকনিক্যাল সেশন, একটি ব্যবসায়িক সেশন ও দুটি পোস্টার সেশনে মোট ১৬০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে। এছাড়াও একটি কৃষি যন্ত্রপাতি মেলা অনুষ্ঠিত হবে। যেখানে কৃষিবিষয়ক যন্ত্রপাতি ও আধুনিক প্রযুক্তিগুলো প্রদর্শন করা হবে। দেশের বৃহত্তম আটটি কৃষি-সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান, বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট অংশ নেবে। এছাড়াও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, চীন, জাপান, ভারতসহ বিভিন্ন দেশের কৃষি গবেষক ও প্রযুক্তিবিদরা কৃষি প্রযুক্তির সম্ভাবনা ও সীমাবদ্ধতা নিয়ে আলোচনা করবেন। সম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় নির্ধারণ করা হয়েছে ‘আধুনিক কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবহারের মাধ্যমে চতুর্থ কৃষি বিপ্লব বাস্তবায়ন’।
দেশের কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবস্থাপনা নিয়ে অধ্যাপক আব্দুল আওয়াল আরো জানান, বর্তমান বিশ্বে কৃষি দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে । আধুনিক যন্ত্রপাতি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, রোবোটিক্স, আইওটি, জিপিএস ও জিআইএস প্রযুক্তির ব্যবহারে কৃষির উৎপাদনশীলতা যেমন বাড়ছে, তেমনি শ্রম ও ব্যয়ের পরিমাণ কমে আসছে। তবে এসব প্রযুক্তি কীভাবে দেশের কৃষি ব্যবস্থায় কার্যকরভাবে একীভূত করা যাবে, কীভাবে কৃষকরা এর সুবিধা পাবেন এবং কীভাবে এটি কৃষিকে আরও লাভজনক করে তুলবে- এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার জন্যই এই সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, সম্মেলনে বাংলাদেশের কৃষি প্রকৌশলীরা কীভাবে কৃষির টেকসই উন্নয়নে অবদান রাখতে পারে এবং সরকার, নীতিনির্ধারক, ব্যবসায়ী ও কৃষকের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে কীভাবে কৃষি যান্ত্রিকীকরণকে লাভজনক করা যায়- এসব বিষয় নিয়ে সরকারি পর্যায় থেকে প্রান্তিক কৃষক পর্যন্ত সকলের মতামত নেওয়া হবে । দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, নীতিনির্ধারক ও উদ্যোক্তাদের উপস্থিতিতে এই সম্মেলন হবে আধুনিক কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক জ্ঞান আদান-প্রদানের এক বিশাল ক্ষেত্র।
কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন অফিসের সম্মেলন কক্ষে ওই সংবাদ সম্মেলন উপস্থিত ছিলেন সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো আব্দুল মজিদ,আন্তর্জাতিক সম্মেলনের সদস্য সচিব অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আশিক-ই-রব্বানী, কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগের প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ড. টুম্পা রাণী সরকারসহ আয়োজক কমিটির অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।
আয়োজকবৃন্দ আরও জানান, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় চতুর্থ কৃষি বিপ্লবের লক্ষ্যে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ ও জীবাশ্মসম্পদের দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত করতে সম্মেলনে যেসকল সুপারিশ উঠে আসবে সেগুলো নিয়ে পরবর্তীতে কাজ করবে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই)। দেশের নীতিনির্ধারক পর্যায়ে এই সুপারিশগুলো লিখিত আকারে প্রদান করা হবে। এই সম্মেলনের মূল লক্ষ্যই হলো আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে কৃষির সমস্যা, সমাধান ও উন্নয়নের সকল তথ্য কৃষির সকল পর্যায়ের ব্যক্তবর্গের মধ্যে পৌঁছে দেওয়া।
কেকে/ এমএস