মাত্র ৪৫০ টাকার জন্য মাদারীপুর জেলার শিবচরে ভ্যানচালক মিজান গাজীকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
সোমবার(১০ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৭ টায় শিবচর থানায় এক প্রেস ব্রিফিংয়ের মাধ্যমে এ তথ্য জানিয়েছেন সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আজমেরী হোসেন।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ জানায়,‘গত শুক্রবার(৭ ফেব্রুয়ারি) ভোরে উপজেলার কাদিরপুর ইউনিয়নের একটি ইটের ভাটা সংলগ্ন ভুট্টা ক্ষেত থেকে ভ্যান চালক মিজান গাজী (২০) নামে এ যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার করে শিবচর থানা পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের মা মলিনা বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জাহাঙ্গীর আলমের প্রত্যক্ষ তত্বাবধানে সহকারী পুলিশ সুপার(শিবচর সার্কেল) মো. আজমির হোসেন এবং শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রতন শেখের নেতৃত্বে শুরু হয় মামলাটির রহস্য উদঘাটন।
সহকারী পুলিশ সুপার (শিবচর সার্কেল) আজমির হোসেন বলেন,‘নিহতের মা মলিনা বেগম বাদী হয়ে আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন বেপারী ও আল আমিনসহ অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলা করলে আমরা আরিয়ান ও আল আমিনকে গ্রেফতার করি। পরে তাদের দেয়া তথ্য মতে হত্যাকান্ডে জড়িত হান্নান নামে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়।’
প্রেস ব্রিফিংয়ে সহকারী পুলিশ সুপার আজমির হোসেন আরো বলেন,‘তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় এবং সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে রোববার ঘটনার সাথে জড়িত উপজেলার শিকদার হাট এলাকার হুমায়ুন শিকদারের ছেলে মো. হান্নান শিকদারকে (২৬) গ্রেফতার করা হয়। আরিয়ান আহমেদ স্বাধীন বেপারীর ইভেন্ট ম্যানেজমেন্টের কাজ করতো। মিজানের ভ্যান তারা ব্যবহার করতো। সে সুবাদে মিজান গাজী স্বাধীনের কাছে ৪৫০ টাকা পেতো। বেশ কিছুদিন ধরে টাকা চেয়েও না পেয়ে স্বাধীনের সাথে কিছুটা বাকবিতন্ডা হয় ভ্যানচালক মিজান গাজীর। মূলত টাকা না দিতে এবং এর প্রতিশোধ নিতেই ভ্যানচালককে হত্যা করে তারা।’
সহকারী পুলিশ সুপার বলেন,‘হান্নান পেশায় একজন ইট ভাঙা শ্রমিক এবং মাদকাসক্ত। অন্যান্য আসামিদের প্ররোচনায় মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে হান্নান অন্যান্যদের সহায়তায় নৃশংস ভাবে খুন করে ভ্যানচালক মিজানকে। ঘটনার দিন ৬ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা ৬ টার পর হান্নানসহ অন্যান্য আসামীরা মিজানকে তার অটোভ্যানসহ ৫০০ টাকায় ভাড়া করে ঘটনাস্থলে নিয়ে যায়। শিবচর থানার কাদিরপুর ইউনিয়নের দেলোয়ারের ইট ভাটার অদূরে সামাদ মৃধার ভুট্টা ক্ষেতের আড়ালে নিয়ে প্রথমে চড়-থাপ্পর মারে চারজন মিলে। অতঃপর আসামিদের সাথে থাকা ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে মিজানকে। এক পর্যায়ে মিজান মাটিতে লুটিয়ে পড়লে গলায় ছুরি চালায় আসামি হান্নান।
সোমবার আসামি হান্নান শিকদারকে বিজ্ঞ আদালতে সোপর্দ করা হলে আসামি হান্নান বিজ্ঞ বিচারকের নিকট ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়ে তার দোষ স্বীকার করে বলে জানান এএসপি আজমির হোসেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন শিবচর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মো. রতন শেখসহ গনমাধ্যম কর্মীরা।
কেকে/ এমএস