ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দু’পক্ষের সংঘর্ষে মোশাররফ হোসেন (৪২) নামের এক জন নিহত হয়েছে। আহত হয়েছে আরো ১০ জন।
মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) সকালে হরিনাকুন্ডু উপজেলার হাকিমপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। নিহত মোশাররফ হোসেন হাকিমপুর গ্রামের হাবিল মন্ডলের ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, দীর্ঘদিন ধরে ওই গ্রামের দবির মন্ডল ও তার ভাই মোশাররফ হোসেনের সাথে সামাজিক আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মহিন হোসেন, বকুল ও সাঈদের সমর্থকদের বিরোধ চলে আসছিলো। সোমবার সন্ধ্যায় গ্রামে ধর্মসভার আয়োজন নিয়ে মিটিংয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে বাক-বিতন্ডা হয়। এরই জেরে মঙ্গলবার সকালে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়।
আহতরা হলেন, হাকিমপুর গ্রামের হাবিল মন্ডলের ছেলে নাসির উদ্দীন, হানেফ আলী, আব্দুল খালেক, বিলাত আলীর ছেলে আরব আলী, আব্দুল খালেকের ছেলে রবিন, আব্দুস সোবাহানের ছেলে কাওছার মন্ডল ও তার ভাই আব্দুল আলীমকে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আহত নাসির উদ্ধনি ও কওছার আলীর অবস্থা গুরুতর বলে জানা গেছে।
গ্রামবাসি জানায়, ধর্মসভায় অতিথি করা নিয়ে দুই গ্রুপের মধ্যে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এরই জেরে সকালে দবির ও মোশাররফ হোসেন গ্রামের মাঠে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। এঘটনার পর উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়।
স্থানীয় চাঁদপুর ইউনিয়নের মেম্বর আশরাফ উদ্দীন স্বপন জানান, সামাজিক দ্বন্দের জের ধরে সোমবার রাতে দেলোয়ার হোসেন দলু ও সাঈদ সমর্থিত সামাজিক দলের মধ্যে মারামারি হয়। এ ঘটনার জের ধরে মঙ্গলবার সকালে দবির ও মোশাররফ হোসেন গ্রামের মাঠে গেলে প্রতিপক্ষের লোকজন তাদের উপর হামলা চালায়। এতে দু’পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়। আহতদের মধ্যে দলু গ্রুপের ৮ জন ও সাঈদ গ্রুপের দুইজন রয়েছে। আহতদের উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মোশাররফ হোসেনকে মৃত ঘোষণা করেন।
ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালের জরুরী বিভাগের চিকিৎসক ডা. মাহবুবুল আলম বলেন, সকালে হরিণাকুন্ডু থেকে কয়েকজন রোগী এসেছিলো। এদের মধ্যে আমরার মোশাররফকে মৃত অবস্থায় পেয়েছি। হাসপাতালে আসার আগেই তার মৃত্যু হয়েছে। আহতদের ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের সকলের চিকিৎসা চলছে।
এ দিকে এ ঘটনায় মহিন হোসেন নামের এক জনকে আটক করেছে পুলিশ। হত্যার ঘটনায় দোষীদের শাস্তির দাবী জানিয়েছেন স্বজনরা। উভয়পক্ষই স্থানীয় বিএনপির সমর্থক।
হরিণাকুন্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এম এ রউফ খান জানান, তুচ্ছ ঘটনা নিয়ে একই পরিবারের মধ্যে বিরোধ ছিল। এ ঘটনায় মোশাররফ হোসেন নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে আহত করা হলে হাসপাতালে তিনি মারা যান। তিনি আরো বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এছাড়াও এঘটনায় মহিন হোসেন নামের একজনকে আটক করা হয়েছে।
কেকে/ এমএস