নীলফামারীর জলঢাকায় জীবনযুদ্ধে পরাজিত এক অসহায় শারীরিক ও মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়া মিজানুর রহমান (৪২) কে মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দিয়ে এবং তার চিকিৎসা সহায়তার হাত বাড়িয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
মিজানুর রহমানের বাড়ি তিস্তার তীরবর্তী গোলমুন্ডা ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড বানিয়া পাড়া গ্রামে। সে ওই এলাকার মৃত জহির উদ্দিন ও তাহেরা বেওয়ার ছেলে। জ্ঞান হবার পর থেকেই মিজানুর রহমান অন্যের কাজ কাম করে পরিবারের মুখে অন্য তুলে দেন। তার তিন তিনটি বিয়েও হয়েছিল সংসার করার জন্য। কিন্তু বিধিবাম, সে সহজসরল মনের একজন মানুষ হওয়ার ফলে সংসারে অবনতি ছাড়া কোনো উন্নতি করতে পারেনি জন্যে আরও নানা কারণে সবকটি বউয়ে তাকে ছেড়ে চলে যায়।
সে বর্তমানে রোগে শোকে এখন কোনো ভারী কাজ করতে পারেন না। তার থাকার ঘরটি জরাজীর্ণ। বেড়া গুলো ভেঙ্গে গেছে। তার শোয়ার ঘরের ভিতর থেকে যেন দিনে সুর্য আর রাতে চাঁদের উঁকি বুঝা যায় খুব সহজে। অতিরিক্ত ছেঁড়া পলিথিন দিয়ে বৃথা চেষ্টা যেন তার অসহায়ত্বকে আরও বেশি ফুটে তোলে। শীত কুয়াশা এবং হার কাঁপানো বাতাস এবং বৃষ্টির পানি ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে খুব সহজে।
আলসার সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত মিজানুর শারীরিক ও মানুষিকভাব খুবেই অসুস্থ হয়ে পড়ায় এখন আর কোনো কাজকর্ম করতে পারে না।
বিধবা বৃদ্ধ মা'কে নিয়ে অভাব-অনটনের মধ্যদিয়ে চলে তার মা ছেলের পরিবার। বর্তমানে পরিবারের ভারবহন করা খুবই কষ্টকর হয়ে পড়েছে তার। সম্প্রতি সন্ধানী ফাউন্ডেশন ও ইউপি চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান এ বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করলে তাৎক্ষণিকভাবে সরেজমিনে পরিদর্শনে যান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন ও সমাজসেবা কর্মকর্তা কামরুজ্জামান। পরে জাতীয় সমাজকল্যাণ পরিষদ হতে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুর্নবানের অর্থ দিয়ে তাকে ঘর নির্মাণ সহ আসবাবপত্র কিনে দেন উপজেলা প্রশাসন।
এ সবকিছু পেয়ে মিজানুর রহমানের মধ্য এখন খুশির শেষ নেই। মিজানুরের বৃদ্ধা মা তাহেরা বেওয়া জানায়, আগে প্লাস্টিক দিয়া ঘর বানে আছিনো, এটা নতুন ঘর স্যার বানে দিছে। মুই দোয়া করিম আল্লাহ ওমার ভাল করুক।
এ বিষয়ে ইউএনও জায়িদ ইমরুল মোজাক্কিন খোলা কাগজকে বলেন, এ খবর পেয়ে সরেজমিনে দেখে আমরা তার জন্য দ্রুত সময়ে যেটা না করলে নয়, সেটা করছি। বিভিন্ন প্রয়োজনে একে অপরের সাহায্য ছাড়া মানুষ কখনই চলতে পারে না। তাই বিপৎসংকুল পরিস্থিতিতে অন্যের সাহায্যের প্রয়োজন পড়ে।
কেন না, কোনো মানুষ যখন বিপদের সম্মুখীন হয়, সে তখন সবচেয়ে বেশি অসহায়ত্ব অনুভব করে। ঠিক ওই সময়
সে আন্তরিকভাবে অন্যের সাহায্য প্রত্যাশা করে।
কেকে/এআর