দেশের ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য কৃষি প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া। বর্তমান বিশ্ব চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ধারাবাহিকতায় কৃষিতে আধুনিক চাষাবাদ পদ্ধতি, ড্রোন ও স্যাটেলাইটের ব্যবহার বাড়ছে। ফলে কৃষি উৎপাদন খরচ কমছে, ফলনও বাড়ছে। আমাদের দেশেও কৃষির আধুনিকায়নের জন্য নীতি নির্ধারণ পর্যায়ে গবেষণা এবং তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা বাড়াতে হবে। এছাড়াও কৃষিতে সাফল্যের জন্য যান্ত্রিকীকরণে উৎকর্ষ সাধনের পাশাপাশি দক্ষ কৃষি প্রকৌশলীও তৈরি করতে হবে।
বুধবার (১২ ফেব্রুয়ারি) আধুনিক কৃষি প্রযুক্তির সম্প্রসারণ উদ্দেশ্যে আয়োজিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (আইসিএএমবিই-২০২৫)’-এ তিনি এসব কথা বলেন।
দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ সোসাইটি অব এগ্রিকালচারাল মেশিনারি অ্যান্ড বায়োরিসোর্স ইঞ্জিনিয়ারিং (বিএসএএমবিই) এবং বাকৃবির কৃষি শক্তি ও যন্ত্র বিভাগ । এছাড়াও এই সম্মেলনের অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের হেলিপ্যাডে কৃষি প্রযুক্তি মেলার আয়োজন করা হয়। মেলায় বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি) ও বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট (ব্রি)-সহ ৮টি কৃষি প্রযুক্তি বিষয়ক প্রতিষ্ঠান তাদের উদ্ভাবিত প্রযুক্তি প্রদর্শন করে।
এই সম্মেলনে আয়োজক কমিটির সভাপতি অধ্যাপক মো. আবদুল আওয়ালের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি ছিলেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. মোহাম্মদ এমদাদ উল্লাহ মিয়া। প্রধান পৃষ্ঠপোষক ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া। সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) বাংলাদেশের প্রতিনিধি জিয়াওকুন শি, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিলের (বিএআরসি) নির্বাহী চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নাজমুন নাহার করিম, বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বারি) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আবদুল্লাহ ইউসুফ আখন্দ এবং এসিআই মোটরস লিমিটেডের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক সুব্রত রঞ্জন দাস।
এসময় উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ. কে. ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, 'কৃষির সকল পর্যায়ে যান্ত্রিকীকরণ এখন আবশ্যক। তবে আন্তর্জাতিকভাবে বিদ্যমান যন্ত্রের ওপর নির্ভরশীল না থেকে আমাদের দেশের চাহিদা অনুযায়ী যন্ত্র নকশা করতে হবে। কৃষকের আর্থ-সামাজিক অবস্থা বিবেচনায় রেখে যন্ত্র তৈরি করতে হবে, যাতে কৃষকরা লাভবান হতে পারেন।'
সম্মেলনের প্রথম দিনের শেষ পর্বে প্লেনারি সেশনে মূল বক্তা হিসেবে দক্ষিণ কোরিয়ার চুংনাম ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. সান-ওক চুং, কানাডার সাসকাচেওয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. অজয় কে. দলাই, বাকৃবির অধ্যাপক ড. মো. মনজুরুল আলম এবং চীনের চায়না এগ্রিকালচারাল ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ড. ঝাও ঝ্যাং স্মার্ট কৃষি প্রযুক্তি, স্বয়ংক্রিয় চাষাবাদ, ফসল সংরক্ষণ এবং বায়োসিস্টেমস ইঞ্জিনিয়ারিং নিয়ে তাঁদের গবেষণা উপস্থাপন করেন। পাশাপাশি অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা তাদের গবেষণা আইডিয়া পোস্টার আকারে উপস্থাপন করেন।
সম্মেলনের দ্বিতীয় দিনে ব্যবসায়ী, নীতি নির্ধারক ও কৃষকদের উপস্থিতিতে ডায়ালগ সেশন ও পোস্টার উপস্থাপনা অনুষ্ঠিত হবে। প্লেনারি সেশন, পোস্টার ও মৌখিক উপস্থাপনাসহ মোট ১৬০টি গবেষণা প্রবন্ধ উপস্থাপন করা হবে।
কেকে/ এমএস