কুড়িগ্রামের রৌমারীতে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে ভয়াবহ সংঘর্ষে শাহাদত হোসেন (৩৭) নামে এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় পুলিশসহ উভয় পক্ষের ১৭ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে।
এ ঘটনায় (বুধবার) পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজন নারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রৌমারী থানায় নিয়ে আসে। তবে সংঘর্ষের সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে তিন পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রৌমারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) লুৎফর রহমান।
পুলিশ, স্থানীয় সূত্র ও নিহতের পরিবারের বরাতে জানা গেছে, উপজেলার যাদুরচর ইউনিয়নের ধনারচর গ্রামে আবুল হোসেন ও নূর ইসলামের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে জমি নিয়ে বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে আদালত ও থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।
ঘটনার দিন (মঙ্গলবার) বিরোধপূর্ণ জমিতে আবুল হোসেনের পক্ষের শতাধিক ভাড়াটে লোক সরিষা তুলতে গেলে নূর ইসলামের পক্ষের লোকজন বাধা দেয়। উত্তেজনা বাড়লে তারা জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে। খবর পেয়ে রৌমারী থানার এসআই খুকিন, কনস্টেবল সোহেল ও কনস্টেবল রাশেদ ঘটনাস্থলে যান।
কিন্তু পুলিশের সামনেই দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। এতে গুরুতর আহত হন শাহাদত, রিতা, শেফালী, বাছিরন, রাবেয়া, মন্টু মিয়া ও শহিদুল ইসলামসহ অনেকে। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে রৌমারী হাসপাতালে ভর্তি করেন। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কয়েকজনকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
বুধবার সকাল ৭টার দিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাহাদত হোসেন মারা যান। তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় নতুন করে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারী পুলিশ সুপার, রৌমারী ও রাজিবপুর থানার ওসি এবং অতিরিক্ত পুলিশ সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
মঙ্গলবার সংঘর্ষের সময় দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে এসআই খুকিন, কনস্টেবল সোহেল ও কনস্টেবল রাশেদকে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
এ ঘটনায় আজিজুল হক নামে একজন বাদী হয়ে রৌমারী থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় ৪৩ জনকে আসামি এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৫০-৬০ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
এ ঘটনায় তিন নারী—আফরিনা আক্তার, কুপিয়া বেগম ও আফরুজা বেগম—কে আটক করা হয়েছে। রৌমারী থানার ওসি লুৎফর রহমান জানিয়েছেন, মামলার অন্যান্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।#
কেকে/ এমএস