কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি মসজিদে ঢুকে নামাজরত অবস্থায় হামলা-ভাঙচুর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় মসজিদের সেক্রেটারিসহ চারজন আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১০টায় দিকে পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ড ফতেহাবাদ দক্ষিণ পাড়া বায়তুল আকসা জামে মসজিদে এ ঘটনা ঘটেছে।
হামলায় গুরুতর আহত মসজিদের সেক্রেটারি মো. ইব্রাহীমকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। অন্য আহতদের দেবিদ্বার উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। শনিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলাম।
প্রত্যক্ষদর্শী মসজিদের মুসল্লিরা জানায়, গত এক মাস আগে মাঠে ক্রিকেট খেলা নিয়ে পার্শ্ববর্তী নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেদের সঙ্গে ফতেহাবাদ দক্ষিণপাড়া গ্রামের ছেলেদের মারামারি হয়। ওই মারামারিকে কেন্দ্র শুক্রবার বিকালে নয়াকান্দি গ্রামের একজনকে মারধর করা হয়। পরে রাত ৮টার দিকে নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেরা ফতেহাবাদ গ্রামের কামরুলকে রাস্তায় পেয়ে মারধর করে এসময় কামরুলের সঙ্গে থাকা অন্য ছেলেরা প্রাণভয়ে দৌড়ে এসে মসজিদের ভেতরে ঢুকে পড়লে নয়াকান্দি গ্রামের ছেলেরা তাদের মসজিদে খুঁজতে এসে নামাজরত মুসল্লিদের এলোপাতাড়ি মারধর করে এবং ভাঙচুর চালায়। তাদের বাধা দিলে তারা মসজিদের সেক্রেটারি ইব্রাহীমকেসহ চারজন পিটিয়ে আহত করে। এ পর্যায়ে মসজিদের ইমাম মসজিদের মাইক দিয়ে ঘোষণা দেন মসজিদে ডাকাত পড়েছে। পরে তারা পালিয়ে যায়। আহতরা হলেন- ইসমাইল (৩৫), কামরুল (১৯), কাওসার (২৮)।
মসজিদের ইমাম মাওলানা আবদুল আউয়াল বলেন, ১০/১২ জন ছেলে হঠাৎ মসজিদে ঢুকে এলোপাতাড়ি মসজিদের গ্লাস, দরজা জানালা ভাঙচুর চালায়। তাদের প্রত্যেকের হাতে রড, হকিস্টিক ও পাইপ ছিল। মসজিদের সেক্রেটারি ইব্রাহীম বাঁধা দিলে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। পরে আমি মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে এলান করলে তারা পালিয়ে যায়।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আহত কামরুলের চাচাত ভাই শাফাতুল ইসলাম রাব্বি বলেন, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ার জন্য আসছিলাম। পথে নয়াকান্দি গ্রামের ইমন, মনির, সাকিব, আবু তাহের, মাসুদ, সাইদুল জিহান, তাইদুল ও রাব্বি আমাদের আটকিয়ে মারধর করে। আমরা ভয়ে দৌড়ে এসে মসজিদে ঢুকি। তারা আমাদের খুঁজতে এসে মসজিদ ভাঙচুর করে।
মসজিদের সভাপতি সাবেক কমিশনার আবুল কাশেম বলেন, আমরা মসজিদে নামাজ পড়ছিলাম। হঠাৎ দেখি একদল ছেলে মসজিদের বাহিরে চারদিকে গ্লাস, দরজা-জানালা ভাঙচুর করছে। এদের কয়েকজন মসজিদের ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালায়। পরে শুনেছি ক্রিকেট খেলা নিয়ে আগের মারামারিকে কেন্দ্র হামলার ঘটনা ঘটেছে।
দেবিদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলাম বলেন, মসজিদ ভাঙার উদ্দেশ্যে হামলা হয়নি। ক্রিকেট খেলা নিয়ে পূর্ব থেকে দুই পক্ষের মারামারি ঘটনায় এক পক্ষের ছেলেরা মসজিদ ভাঙচুর করেছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে আছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এ ঘটনায় কেউ মামলা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
কেকে/এআর