শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১০ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

শনিবার, ২২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: স্থানীয় সরকার সংস্কার কমিশনের প্রাথমিক সুপারিশমালা হস্তান্তর      জুলাই বিপ্লবের কৃতিত্ব জানালেন মির্জা ফখরুল      তাড়াশে গাছে গাছে আমের মুকুল ম-ম ঘ্রাণে মুখরিত       সশস্ত্র বাহিনী প্রধানকে বরখাস্ত করলেন ট্রাম্প      মুসলিম উম্মাহ’র শান্তি কামনার মধ্য দিয়ে চরমোনাই মাহফিল সমাপ্ত      সুনামগঞ্জে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে ১৪৪ ধারা জারি       ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ চাওয়া ছাত্ররাই এখন রাজনীতিতে      
গ্রামবাংলা
তিস্তা বাঁচাতে দুই দিনের অবস্থান কর্মসূচির ডাক
তিস্তা নদীজুড়ে এখন ধু ধু বালুচর
ইলিয়াস বসুনিয়া পবন, হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট)
প্রকাশ: শনিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ১২:৫৮ পিএম আপডেট: ১৫.০২.২০২৫ ৩:০৯ পিএম  (ভিজিটর : ১৩৮)
তিস্তা নদীর প্রায় ১শত ১৫ কিলোমিটারজুড়ে এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে।

তিস্তা নদীর প্রায় ১শত ১৫ কিলোমিটারজুড়ে এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে।

পানি না থাকায় তিস্তা নদীর প্রায় ১শত ১৫ কিলোমিটারজুড়ে এখন ধু ধু বালুচরে পরিণত হয়েছে। পার্শ্ববর্তী দেশ ভারতের একতরফা শাসননীতির কবলে পড়ে বসন্তেই যৌবন হারিয়ে মরতে বসেছে এককালের প্রমত্তা তিস্তা নদী। তিস্তা নদীর পাড়ে নেই মাঝিমাল্লা আর জেলেদের হাঁকডাক।

প্রায় অকেজো হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প তিস্তা ব্যারাজ। তিস্তা নদীর মূল গতিপথ এখন বালুর স্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে, জাগো বাহে- তিস্তা বাঁচাই স্লোগানকে সামনে রেখে তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে আগামী সোম ও মঙ্গলবার ২ দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি ডাক দিয়েছে 'তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন'।

ভরা বর্ষা মৌসুমে তিস্তা সেচ প্রকল্পের তিস্তা ব্যারাজ রক্ষায় খুলে দেওয়া হয় সবকটি জলকপাট। এতে ব্যারাজের আশপাশের বাসিন্দাসহ ভাটিতে থাকা লক্ষ লক্ষ সাধারণ মানুষ হয়ে পড়ে পানিবন্দি। নদীভাঙন বসতভিটাসহ সহায় সম্বল হারিয়ে নিঃস্ব হয় তিস্তা নদীর পাড়ের মানুষ। আশ্রয় নেয় বাঁধের ধারে কেউ বা অন্যের জমিতে। আবার শুকনা মৌসুমে সেই প্রমত্তা তিস্তা নদী পরিণত হয় ধু ধু বালুচরে।

পার্শ্ববর্তী দেশ ভারত গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে একতরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় প্রতিবছর বর্ষা শেষ হতে না হতেই বাংলাদেশ অংশ পরিণত হয় মরা খালে। ৩শত ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ তিস্তা নদীর বাংলাদেশ অংশের প্রায় ১শত ১৫ কিলোমিটার এখন মরুভূমি। দিন দিন প্রায় অকার্যকর হয়ে পড়েছে দেশের বৃহত্তম তিস্তা ব্যারাজ সেচ প্রকল্পটি।

পানি না থাকায় তিস্তা নদীর বুকে মাছ শিকার করতে ছুটে চলা ডাহুক, পানকৌড়িসহ অসংখ্য পাখ-পাখালিদের উড়ে যাওয়ার চিরচেনা দৃশ্য এখনও আর চোখে পড়ে না। তারাও যেন মুখ ফিরিয়ে বিদায় নিয়েছে যৌবনা তিস্তা নদী থেকে। তিস্তার বুকে জেগে ওঠা চরাঞ্চলের বালু জমিতে কঠোর পরিশ্রম করে চাষাবাদ করা চাষিদের বিভিন্ন জাতে শস্য মরে যেতে বসেছে।

তিস্তার নদীর বালুচরে গর্ত করে পানির অস্থায়ী উৎস সৃষ্টির মাধ্যমে শস্যক্ষেতে সেচ দেন এসব কৃষক। কিন্তু পানির স্তর নিচে চলে যাওয়ায় প্রতিদিন সেচ দিয়েও রক্ষা হচ্ছে না ফসল। এছাড়াও শত কষ্টে চাষাবাদ পণ্য মূলভূখণ্ডে নিতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত পরিবহন খরচ। পানি থাকলে নৌকায় সহজে ও কম খরচে শস্য পরিবহন করা যেত। ফলে বেশি খরচ ও পরিশ্রম করে উৎপাদিত শস্যের ন্যায্যমূল্য বঞ্চিত হচ্ছেন এসব এলাকার কৃষক।

ভারতের সিকিম রাজ্য থেকে উৎপত্তি ঐতিহাসিক তিস্তা নদী ভারতের পশ্চিমবঙ্গের ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙেঙ্গ মিশে গেছে।

এদিকে, জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই স্লোগানকে সামনে রেখে তিস্তা পারে ২ দিনব্যাপী অবস্থান কর্মসূচি ডাক দিয়েছে 'তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন'। জাতীসংঘের পানিপ্রবাহ কনভেশন বাস্তবায়নের মাধ্যমে ন্যায্য হিস্যা ও তিস্তা মহাপরিকল্পনাসহ মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের দাবীতে আগামী ১৭ ও ১৮ ফেব্রুয়ারি তিস্তার তীরবর্তী অঞ্চলে ৪৮ ঘণ্টা (দুইদিন) ব্যাপী সব শ্রেণি-পেশার মানুষ জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ, কালীগঞ্জ উপজেলার মহিপুর, আদিতমারি উপজেলায় মহিষখোচা এবং সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ও গোকুন্ডায় ৫টি পয়েন্টে প্রায় লাখ মানুষ এ অবস্থান কর্মসূচি পালন করবেন। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা তাদের।

অবস্থান কর্মসূচিতে সব স্তরের জনগণকে অংশগ্রহণ করে 'অবস্থান কর্মসূচি' সফল করার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন, ‘তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলন’এর প্রধান সমন্বয়ক ও লালমনিরহাট জেলা বিএনপির সভাপতি অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু।

উল্লেখ্য, তিস্তা অববাহিকার রংপুর অঞ্চলের মানুষের জীবন-জীবিকার মূল চালিকা শক্তি তিস্তা নদী। এক সময়ের প্রমত্তা তিস্তাকে এ অঞ্চলের জীবনরেখা বলা হতো। কিন্তু তিস্তা নদীর উজানে বাঁধ নির্মাণের কারণে তিস্তা আজ শীর্ণ, স্থবির একটি মরা নদীতে পরিণত।

বর্ষা ও খরা উভয় মৌসুমে তিস্তা এখন এ অঞ্চলে গণমানুষের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। বর্ষাকালে বাঁধ থেকে বিনা নোটিশে পানি ছাড়ায় তিস্তার দুকূল প্লাবিত হয়ে মানুষের ঘর-বাড়ী, আবাদি ফসল মুহূর্তে নিশ্চিহ্ন করে, জনজীবন বিপন্ন করে তোলে। আবার খরা মৌসুমে তিস্তার পানি প্রবাহ শূন্যের কোঠায় নেমে আসে। ফলে নদীর দুপাড়ে মাইলের পর মাইল এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হয়ে চাষাবাদের অযোগ্য হয়ে পড়ে। তিস্তা একটি আন্তর্জাতিক নদী। কিন্তু এই তিস্তা অববাহিকার মানুষ দীর্ঘদিন পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত।


কেকে/এএস
আরও সংবাদ   বিষয়:  তিস্তা   নায্য হিস্যা   ধু ধু  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

জবির ‘এ’ ইউনিটের প্রথম শিফটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত
আধিপত্য বিস্তারে বিএনপি-আ.লীগ সংঘর্ষে আহত ৫০
টঙ্গীতে মিথ্যা মামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন
জমি নিয়ে সংঘর্ষে নারী নিহত, আহত ২০
শালিখায় কালের সাক্ষী মুঘল আমলের মসজিদ

সর্বাধিক পঠিত

ভূঞাপুরে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা
মহিলা জামায়াত নেত্রীকে ছুড়িকাঘাতে হত্যা
দেশে চলমান নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের প্রতিবাদে নোবিপ্রবিতে মশাল মিছিল
গঙ্গাচড়ায় নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা মিস্টার গ্রেফতার
বাসে ডাকাতি: দায়িত্বে অবহেলার অভিযোগে ওসি সিরাজুলকে প্রত্যাহার

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝