বগুড়াতে মাছের মেলা, রেওয়াজ অনেক পুরনো,
জামাই এলে চাই যে বড় মাছ, এটাও নিয়ম এখনো।
শ্বশুর বাড়ির ইজ্জত জড়ায়, মাছের ওজনেতে,
জামাই মশাই কাঁদে মনে, দামি দামের ফাঁদেতে।
বড় মাছ চাই, বড় চাই— বলে শ্বাশুড়ি হাসে,
মাছের আকার ছোট হলে, অপমান হয় পাশে।
শালা-শালির চোখের ভাষায়, লুকায় কেমন তাচ্ছিল্য,
জামাই যদি মাছ না কেনে, থাকে না আর মর্যাদা বল।
হাটে গিয়ে জামাই দেখে, রুই-কাতলা কেমন দাম,
যেই শুনে বুক কেঁপে ওঠে, মুখে জমে যায় ঘাম।
বড় মাছ নিলে খরচ বেশি, পকেট হবে ফাঁকা,
না কিনলে মান যাবে তার, আটকাবে পরিবারের চাকা!
শ্বশুর বাড়ির লোকের মনে, গর্ব হবে কি আজ?
নাকি তারা ঠাট্টা করে, দেবে তাকে লাজ?
শাখের করাত যেন হাতে, এদিক ওদিক নাই,
টাকা গেলে বাঁচবে মান, নাহয় অপমান সর্বদাই?
বড় মাছ নিলে আপ্যায়নে, শ্বাশুড়ি হাসবে ক্ষণে,
নইলে তাচ্ছিল্যের হাসি, লুকাবে ঠোঁটের কোণে।
শালারা সব তাকিয়ে দেখে, জামাই দেবে কি দাম?
বড় মাছ না আনলে, ডুবে যাবে তার নাম!
শ্বশুর মশাই মুখে বলেন, "নেই দামির কষ্ট,
কিন্তু মাছটা বড় হওয়া চাই, নিয়ম হলো সত্য!"
হাটের মাঝেই জামাই ভাবেন, কী হবে তার গতি?
মাছ কিনলে টান লাগবে, টাকার থলি হতি!
শেষমেশ তিনি কিনলেন, বিশাল কাতলা রুই,
টাকা গেলো তবু মান রক্ষা, হলো এবারই!
শ্বশুরবাড়ির লোক খুশিতে, জামাইকে দেয় সালাম,
শাশুড়ির মুখে মিষ্টি হাসি, উঠে সুরেলা গান।
শালারা সব ধুমধাম করে, বলে জামাই রাজা,
শ্বশুরও বলেন, "জামাই ভালো, তারেই মানাই সাঁজা!"
মাছের পাতে শ্বাশুড়ির হাত, আহারে কী যে মজা,
যদি মাছ ছোট হতো আজ, পেতে হতো সাজা!
বগুড়াতে মাছের মেলা, নিয়ম যুগের পরে,
জামাই মানেই বড় মাছ চাই, গর্ব তারে ধরে!
টাকার হিসাব থাকুক পাশে, সম্মান রক্ষা চাই,
নাহলে বউও মুখ ফিরাবে, বিপদ যাবে নাই!
কেকে/এআর