বাংলাদেশে ঢুকে পাঁচ কৃষককে পেটানোর ঘটনায় কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী সীমান্তে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও বর্ডার সিকিউরিটি ফোর্স (বিএসএফ) এর মধ্যে পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর ১.৪০ মিনিট থেকে ২.৩৪ মিনিট পর্যন্ত উপজেলার গোরকমন্ডল সীমান্তের ৯২৯ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের ৪ নম্বর সাব পিলারের পাশে এ পতাকা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
পতাকা বৈঠকে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী কৃষকদেরকে মারধোরের কড়া প্রতিবাদ জানায় বিজিবি।
বিজিবি সূত্র জানায়, বৈঠকে বিজিবির পক্ষে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শাকিল আলম এবং বিএসএফের পক্ষে ভারতীয় ৩ বিএসএফ ব্যাটালিয়নের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডিং অফিসার অমিত কুমার নেতৃত্ব দেন।
বৈঠকে বিএসএফ কর্তৃক সীমান্তের শুন্য রেখা অতিক্রম করে বাংলাদেশের ভিতরে ঢুকে মাঠে কাজ করা সাধারণ কৃষকদেরকে এলোপাথাড়ি মারপিট করে আহত করার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। জবাবে ভারতীয় বিএসএফ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার জন্য দুঃখ প্রকাশ করে। এঘটনায় জড়িত বিএসএফ সদস্যেদের শাস্তি প্রদান সহ ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা যাতে না ঘটে সে প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে। বৈঠক শেষে বিজিবি বিএসএফের প্রতিনিধি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
উল্লেখ্য, গত শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে উপজেলার কৃষ্ণা নন্দ বকসী সীমান্তের ৯৩০ নম্বর আন্তর্জাতিক সীমানা পিলারের ৮ নম্বর সাব পিলারের পাশে বাংলাদেশের কৃষি জমিতে কাজ করছিলেন কয়েকজন কৃষক। এ সময় ভারতীয় নারায়ণগঞ্জ ক্যাম্পের ১০/১২ জন বিএসএফ সদস্য হরিদাস খামার এলাকার কাঁটাতারের বেড়ার ৩ নম্বর গেট দিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে মাঠে কাজ করা কৃষকদের। গালাগালি করতে থাকে। কৃষকরা প্রতিবাদ করলে বিএসএফ সদস্যরা লাঠি দিয়ে কৃষকদেরকে এলোপাথাড়ি পেটাতে শুরু করে। কৃষকরা ভয়ে গ্রামের দিকে দৌড়াতে থাকলে বিএসএফ তাদের পিছু নিয়ে গ্রামে ঢুকে পড়ে। পরে গ্রামবাসী জড়ো হয়ে লাঠিসোটা নিয়ে বিএসএফকে ধাওয়া করলে তারা কাঁটাতারের ভিতরে পালিয়ে যায়। এ সময় বিএসএফের মারপিটে পাঁচ কৃষক আহত হন। আহতরা হলেন, কৃষ্ণানন্দ বকসী গ্রামের মৃত ইসরাইলের ছেলে শামসুল হক ( ৫৫ )মৃত খোকা মামুদের ছেলে জাবেদ আলী (৬০) মুন্নাফ হোসেনের ছেলে কাসেম আলী (৪৮) মৃত মুকুল ইসলামের ছেলে রিপন মিয়া (৩৫) ও কাশেম আলীর ছেলে তাজুল ইসলাম (৩৮)।
এ প্রসঙ্গে লালমনিরহাট ১৫ বিজিবি ব্যাটেলিয়ানের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শাকিল আলম জানান, পতাকা বৈঠকে বাংলাদেশে ঢুকে বাংলাদেশী কৃষকদেরকে মারপিটের ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানানো হয়। জবাবে বিএসএফ দুঃখ প্রকাশ করে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা না ঘটানোর এবং জড়িত বিএসএফ সদস্যদের শাস্তি প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করে।
কেকে/ এমএস