শরীয়তপুরের কুখ্যাত মানবপাচারকারী রাশেদ খানকে গ্রেফতার করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তার সহযোগী কামরুজ্জামান টুন্নু খানসহ চক্রের অন্যান্য সদস্যদের গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে ভুক্তভোগী ২৪টি পরিবার আমরণ অনশন শুরু করেছে।
শুক্রবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) রাজধানী ঢাকা থেকে রাশেদ খানকে গ্রেফতার করে শরীয়তপুর কোর্টে পাঠানো হয়।
শরীয়তপুর কোর্ট পুলিশ ও ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর তথ্য অনুযায়ী, রাশেদ খান ও কামরুজ্জামান টুন্নু খানসহ একটি দালালচক্র শরীয়তপুর ও মাদারীপুরের ২৪ জন যুবককে ইতালি নেওয়ার নাম করে প্রতারণা করে। প্রতিটি পরিবার থেকে ১২-২০ লাখ টাকা নেওয়ার পর চুক্তি ভেঙে তাদের লিবিয়ায় আটকে রেখে অমানবিক নির্যাতন চালানো হয় এবং মুক্তিপণ আদায় করা হয়। এরপর থেকে গত বছরের ২২ মার্চ থেকে নিখোঁজ রয়েছেন ওই ২৪ জন যুবক।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা প্রতারণার মাধ্যমে টাকা হাতিয়ে নেওয়ার পর উলটো ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে আসছে।
নিখোঁজ সাইফুল ইসলামের বাবা ফারুক পেদা এ ঘটনায় মামলা করলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী গতকাল শুক্রবার ঢাকার একটি স্থান থেকে রাশেদ খানকে গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারের পর ভুক্তভোগী পরিবারগুলো শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) বিকাল থেকে শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরে আমরণ অনশন শুরু করে। তাদের দাবি, শুধু রাশেদ খান নয়, চক্রের মূল হোতা কামরুজ্জামান টুন্নু খানসহ সব মানবপাচারকারীকে দ্রুত গ্রেফতার করতে হবে এবং নিখোঁজ যুবকদের সন্ধান দিতে হবে।
মামলার বাদী ফারুক পেদা বলেন, আমার ছেলে প্রায় এক বছর ধরে নিখোঁজ। আমি ছেলের খোঁজ চাইলে রাশেদ-টুন্নুরা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেছে। রাশেদ গ্রেফতার হলেও একটি প্রভাবশালী মহল তার জামিনের জন্য দৌঁড়ঝাঁপ শুরু করেছে। আমরা মানবপাচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সন্তানদের খোঁজ না পাওয়া যাবে এবং দোষীদের বিচার না হবে, ততক্ষণ আমরা অনশন চালিয়ে যাব।
শরীয়তপুর পালং কোর্ট পুলিশের জিআরও মো. রাশেদুল ইসলাম বলেন, রাশেদ খান নামে এক এজহারভুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে হস্তান্তর করা হয়েছে। পুলিশ তার রিমান্ড চেয়েছে, আর আসামিপক্ষ জামিনের আবেদন করেছে। আদালত আগামী সোমবার রিমান্ড ও জামিনের শুনানির দিন ধার্য করেছেন।
আদালতের নির্দেশে রাশেদ খানকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তবে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো দাবি করছে, যতক্ষণ পর্যন্ত কামরুজ্জামান টুন্নু খানসহ অন্য মানবপাচারকারীদের গ্রেফতার না করা হবে, ততক্ষণ তারা তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবে।
কেকে/এএম