বাংলাদেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। প্লাস্টিক এবং অন্যান্য বর্জের কারণে দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে দ্বীপটির সৌন্দর্য এবং জীববৈচিত্র্য। ফলে পরিবেশগত দিক থেকে দ্বীপটি এখন অনেকটাই হুমকির মুখে। এবার বাংলাদেশের অন্তিম সীমান্ত সেন্ট মার্টিনের ছেঁড়া দ্বীপে পরিচ্ছন্নতা অভিযান চালিয়েছে কেওক্রাডং বাংলাদেশ ও বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাব।
শনিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সকাল সাড়ে ৯টায় ছেঁড়া দ্বীপের ছিন্ন দ্বীপ থেকে শুরু করে বিকাল ৪টা পর্যন্ত ছেঁড়া দ্বীপের বিভিন্ন অংশে পড়ে থাকা প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য একত্রিত করেন কেওক্রাডং ও বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের সদস্যরা।
পরে সেখান থেকে বর্জ্যগুলোকে নৌকায় করে সেন্ট মার্টিন জেটি ঘাটে নিয়ে আসেন। ছেঁড়া দ্বীপ থেকে সংগ্রহ করা এই বর্জ্যগুলোকে টেকনাফে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছে কেওক্রাডং বাংলাদেশের পরিচালক মুনতাসির মামুন।
বর্জ্যগুলোর মধ্যে রয়েছে প্লাস্টিক জাতীয় বোতল, প্যাকেটজাত পণ্যের মোড়ক, প্লাস্টিক কর্ক এবং বিভিন্ন প্রকারের লাইলন নেট। যা এখানে ঘুরতে আশা পর্যটকদের ব্যবহার করা বলে মনে করছেন পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়া সদস্যরা।
পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেওয়া বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাবের সভাপতি সৈয়ব আহমেদ সিয়াম বলেন, সেন্ট মার্টিন দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ। সেন্ট মার্টিনের দক্ষিণে ছেঁড়া দ্বীপে জীববৈচিত্র্য বিস্ময়কর। এখানে প্রাকৃতিক কেওড়া বন রয়েছে। প্রবাল, ঝিনুক, লোবস্টার, কাঁকড়া, শামুক দেখতে পাওয়া যায়। প্লাস্টিক দূষণ এই জীববৈচিত্র্যকে নষ্ট করে দিচ্ছে। আমাদের উচিত হবে সিঙ্গেল ইউজড প্লাস্টিকের ব্যবহার শূন্যের কোটায় নামিয়ে আনা। ব্যবহৃত প্লাস্টিক বোতল বা পলিথিন কোনোভাবেই সমুদ্রে ফেলা উচিত নয়। মানুষই প্রকৃতির সবচেয়ে বড় শত্রু হয়ে উঠেছে, যেটা আমাদেরকে পীড়া দেয়। আমরা সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানাই।
কেওক্রাডং বাংলাদেশের পরিচালক মুনতাসির মামুন বলেন, আমরা সার্ভের একটি কাজে ছেঁড়া দ্বীপে গিয়েছিলাম, সেখানে অসংখ্য পরিমাণের প্লাস্টিক জাতীয় বর্জ্য দেখে আমরা অবাক হয়েছি। আমাদের মনে হয়েছে এটি দ্রুত পরিষ্কার করা উচি। তা ছাড়া পরিবেশের ক্ষতি হতে পারে। যার কারণে আমরা কিছুটা পরিষ্কার করার চেষ্টা করেছি।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক অলাভজনক সংস্থা ওশান কনজারভেন্সির বাংলাদেশের সমন্বয়ক প্রতিষ্ঠান কেওক্রাডং বাংলাদেশ বা কেবি। ১৩ বছর ধরে সেন্ট মার্টিন দ্বীপে সমুদ্রসৈকত পরিচ্ছন্নতার কাজ করে আসছে প্রতিষ্ঠানটি।
এ ছাড়া কক্সবাজার ও টেকনাফ অঞ্চলেও পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রমে সক্রিয় রয়েছে তারা। আর বিআরএফ ইয়ুথ ক্লাব বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের পরিবেশবাদী সেবামূলক একটি সংগঠন।
কেকে/এএম