টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী উপজেলায় এ বছর সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। একদিকে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে দিগন্তজোড়া ফসলের মাঠ। এরপর ফুল থেকে সরিষার ছেঁই গজিয়ে বাম্পার ফলনের আভাস দিচ্ছে কিছু কিছু জমিতে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষি বিভাগ ও কৃষক।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, গত বছর এ উপজেলায় ২ হাজার ২শ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ হয়েছিল। এবার এ উপজেলায় চলতি মৌসুমে ২ হাজার ৪শ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এর মধ্যে ২ হাজার ৪শ ৫ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। যা গত বছরের চেয়ে এবার ২শ ৫ হেক্টর জমিতে সরিষা বেশি আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে ৩৬ মেট্রিক টন সরিষা উৎপাদন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
এ বছর বারি-১৪-১৭ ও বিনা-৯ জাতের সরিষা চাষ করা হয়েছে। ধান চাষ করে প্রতিবারই লোকসান গোনার কারণে কৃষক সরিষা আবাদ লাভজনক হওয়ায় ঝুঁকে পড়েছেন সরিষা আবাদের দিকে। সরিষা আবাদ করে এ উপজেলায় স্বাবলম্বী হয়েছেন অনেক কৃষক।
অন্যদিকে স্থানীয় কৃষি বিভাগ সরিষা চাষে কৃষকদের উৎসাহিত করতে নানাভাবে প্রণোদনা দিয়েছেন। সে পরিপ্রেক্ষিতে ৫হাজার ৬শ জন কৃষককে প্রতি বিঘার জন্য ১০ কেজি এমওপি সার, ১০ কেজি ডিএপি সার ও ১ কেজি করে বীজ বিনামূল্যে দিয়েছেন।
হাতীবান্ধা লাভলু ও ঘোনারবন্ধ এলাকার কৃষক শামছুল হক চিন্তা মিয়া বলেন, সরকারিভাবে সার ও বীজ দেওয়া থেকে কৃষি অফিসারদের সার্বিক পরামর্শে সরিষার আবাদ ভালো করতে পেরেছি বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা দেখছি। যদি দাম ভালো থাকে তাহলে আমরা কৃষকরা লাভবান হতে পারব।
মুশুদ্দি পূর্বপাড়া গ্রামের কৃষক হাসান আলী ক্ষোভ প্রকাশ করে জানান, সরকারি সহযোগিতা না পেয়েও ২ বিঘা জমি সরিষার আবাদ করেছি। তবে সরকারিভাবে সার ও বীজসহ প্রয়োজনীয় সঠিক পরামর্শ পেলে হয়ত আরো বেশি ফলন হতো।
বীরতারা ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী কৃষিকর্মকর্তা জাহিদুল ইসলাম জানান, কৃষিকে এগিয়ে নিতে সার্বিকভাবে মাঠ পর্যায়ে নিরলস কাজ করে যাচ্ছি।
ধনবাড়ী উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মাসুদুর রহমান জানান, উপজেলা কৃষি অফিস থেকে ও কৃষি উপ-সহকারী কর্মকর্তারা মাঠ পর্যায়ে জমির অবস্থানুযায়ী কৃষকদের সঠিক মাত্রায় সার এবং কীটনাশক দেওয়ার পরামর্শ দেওয়াসহ আবহওয়া অনূকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।
এ ছাড়া সরিষা আবাদে কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে সার ও বীজ প্রদান করা হয়েছে। গতবারের চেয়ে এ বছর সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে আশা করা যাচ্ছে উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।
কেকে/এএম