প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ৭ মার্চ, ২০২৪, ৭:৫৯ এএম (ভিজিটর : ৪১)
সরকারি কর্মকর্তাদের জনগণের কাছে গিয়ে তাদের জন্য কাজ করার নির্দেশ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি আপনাদের সবাকে আহ্বান জানাবো, জনগণের কাছে যান। তাদের জন্য কাজ করুন। সরকারের সব কর্মকাণ্ড দেশের মানুষের কল্যাণে।
তিনি বলেন, করোনা অতিমারীসহ সব দুর্যোগেই আপনারা কাজ করে যাচ্ছেন, দায়িত্ব কিন্তু এখনও রয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত না মানুষের মাঝে স্বস্তি ফিরে আসবে ততক্ষণ কাজগুলো করে যেতে হবে। সেজন্য আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাবো যে মানুষের পাশে যান মানুষের জন্য কাজ করেন। আমরা চাই আমাদের প্রতিটি কর্মসূচি হবে জনগণকে কেন্দ্র করে। স্বচ্ছ, জবাবদিহিমূলক, জ্ঞান ভিত্তিক ও কল্যাণমুখী দক্ষ ও স্মার্ট প্রশাসন আমরা গড়ে তুলতে চাই। যাতে জনগণ উন্নত এবং মানসম্মত সেবা পায়।
বুধবার রাতে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘বাংলাদেশ অ্যাডমিনিষ্ট্রেটিভ সার্ভিস এসোসিয়েশনের বার্ষিক সম্মিলন-২০২৪’ উপলক্ষ্যে আয়োজিত নৈশভোজ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং গাজায় যেভাবে গণহত্যা চলছে তার প্রভাবটা অর্থনীতির উপর পড়েছে। আমরা কিন্তু সেখান থেকে দূরে নই। কাজেই যে মূল্যস্ফীতির চাপটা আমাদের উপর পড়ে গেছে। এ থেকে আমাদের বেরিয়ে আসতে হবে। বিশ্বব্যাপী মন্দার এ প্রভাবে ডলারের মূল্য বেড়ে গেছে। ফলে আমদানি মূল্য বেড়ে গেছে। পরিবহন ব্যয়ও বেড়েছে। কাজেই উৎপাদন আরো বাড়াতে হবে।
সরকার সুশাসন প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর’ উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, সেই কাজটা আপনাদেরই করতে হবে। এবারে আমরা ঘোষণা দিয়েছি স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছিলাম সেটা আমরা করেছি। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা। কারণ সময় ও যুগের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী জনগোষ্ঠী আমাদের গড়ে তুলতে হবে। সরকার বিদেশে যে কর্মী পাঠায় তাদেরকেও প্রশিক্ষণ দিতে হবে। আমাদের লক্ষ্য যে আমাদের স্মার্ট সিটিজেন হবে, স্মার্ট ইকনোমি হবে, স্মার্ট গভমেন্ট হবে এবং স্মার্ট সোসাইটি হবে। দেশকে আমরা ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে তুলবো। ইতোমধ্যে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। সারাবিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে ২০২৬ সাল থেকে আমাদের যাত্রা শুরু হবে। এই যাত্রাকে সফল করেই ২০৪১ সাল নাগাদ উন্নত সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলবো।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ স্বাধীন হয়েছে বলেই সকল উচ্চপদে বাঙালিরা অবস্থান নিয়েছেন। আর্থসামাজিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমরা এখন পাকিস্তান থেকে অনেক এগিয়ে গেছি। একটি যুদ্ধ বিধ্বস্থ দেশ গড়ে তোলা কম কথা নয় কিন্তু স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা আমাদের একটি সংবিধান দিয়ে যান। যে সংবিধানে মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের সব দিক নির্দেশনা রয়েছে এবং সেই সংবিধানের ২১ এর (২) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে- ‘সকল সময় জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।’
জাতির পিতার কন্যা বলেন, আমি আমার বাবার পথ অনুসরণ করেই নিজেকে প্রধানমন্ত্রী নয়, বাংলাদেশের জনগণের সেবক হিসেবেই বিবেচনা করি। যেন নির্বাচনটাই না হয়, এবারের নির্বাচনে তারা (বিএনপি) সেরকমই একটা অবস্থার সৃষ্টি করতে চেয়েছিল । আমি জানি এই নির্বাচনটা নিয়ে অনেক চক্রান্ত, যে কারণে আমি নিজেও ঝুঁকি নিয়েছি। এই নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠুভাবে এবার পরিচালনা করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে শুরু করে জনপ্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারি সংস্থাসহ সকলে অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে কাজ করে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠিত করে আপনারা জনগণের ভোটের যে সাংবিধানিক অধিকার তার যেমন সুরক্ষা দিয়েছেন তেমনি রাষ্ট্রের প্রতি আপনাদের যে দায়িত্ব কর্তব্য সেটাই পালন করেছেন। সেজন্য মাঠ পর্যায়ে যারা কাজ করেছেন সকলকে আমার আন্তরিক অভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি।