বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, পানিবন্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ করছে। ভারত বাংলাদেশকে কিছুই দেয় নাই। ভারত পলাতক সৈরাচারকেই মনে রেখেছে, বাংলাদেশের মানুষকে মনে রাখেনি, ভারত প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশের মানুষের সাথে অপ্রতিবেশি মূলক আচরন করেই চলেছে। সকলের জানা আছে তিস্তার অভিশাপ থেকে বাংলাদেশ মুক্তি পায় নাই। পানিবন্টন নিয়ে প্রতিবেশী দেশ অপ্রতিবেশীসুলভ আচরণ করছে।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে লন্ডন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ‘জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই’-স্লোগানে তিস্তা নদী রক্ষা আন্দোলনের ৪৮ ঘণ্টা অবস্থান কর্মসূচিতে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, তিস্তার পানি বাংলাদেশের মানুষের অধিকার, কারো করুণা নয়। ভারত আন্তর্জাতিক আইন লংঘন করে প্রতিবেশী ভারত গজলডোবায় একটা বাঁধ নির্মাণ করেছে। এ বাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক পানি প্রবাহকে তারা নিয়ন্ত্রণ করে চলেছে এই প্রতিবেশী ভারতের কারণে আজকে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলে লাখো কোটি জনগণের পানির অভাবে হাজার হাজার কোটি টাকার ফসল হঠাৎ নষ্ট হচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, তিস্তার পানি সাধারণ মানুষের ঘরবাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। বন্যার কারণে এই অঞ্চলে এই নদীর ভাঙন লক্ষ কোটি টাকার আর্থিক ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। স্বৈরাচার ভারতকে যা দিয়েছে সেই ভারত সৈরাচারকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া বাংলাদেশকে কি দিয়েছে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যেই সমস্যা সমাধান স্বার্থ জড়িত থাকে। তারা বাংলাদেশের স্বার্থ দেখনি। জোর করে অবৈধভাবে ক্ষমতায় টিকতে গিয়ে নিজেকে সে দাসীতে পরিণত করেছিল।বাংলাদেশ ভারত যৌথ নদী কমিশন এবং জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন পর্যন্ত সম্পূর্ণ অকার্যকর করে রেখেছিল।সারা দেশের মানুষ জানে এখনো ভারতের সাথে বাংলাদেশের বিরাজমান ফারাক্কা সমস্যার সমাধান হয়নি।জনগণের বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলের জনগণের বহুল প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তিও হয়নি অথচ সকল আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে পলাতক খুনি স্বৈরাচার প্রতিবেশী দেশকে ট্রানজিট শিপম্যান্টের বন্দর ব্যবহারের একতরফা সুবিধা দিয়ে গেছে। এইসব চুক্তিতে মিনিমাম ন্যায্যতা পর্যন্ত রক্ষা করে নাই।বাংলাদেশের মানুষ মনে করে প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে প্রয়োজনে সকল অসম একতরফা যে সকল চুক্তি পূনঃমূল্যায়ন পুনঃবিবেচনা করা দরকার। উত্তরাঞ্চলের তিস্তাপাড়ের পানিবঞ্চিত মানুষেরা আজ সারা বিশ্বকে জানিয়ে দিতে চায় যে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যে ৫৪টি অভিন্ন নদী, এসব নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা প্রাপ্তি কারও করুণার বিষয় নয়। এটা আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রাপ্য, এটি বাংলাদেশের মানুষের প্রাপ্য। অথচ আমরা দেখছি, আন্তর্জাতিক তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা আদায়ের জন্য আজকে আমাদেরকে আন্দোলন করতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, ভারতের সরকার শুষ্ক মৌসুমে উজানে বাঁধ বেধে পানি আটকিয়ে রাখে ফলে এ অঞ্চলের আবাদে খরার তাপ পোহাতে হয় আবার বর্ষা মৌসুমে আমাদের দিকে পানি ছেড়ে দেয় ফলে লাখ,লাখ মানুষ পানিবন্দী হয় এবং ঘর-বাড়ী ভেসে যায়। খাল কাটা হলে, সাড়া দুর হবে বন্যা খরা-জাগো বাহে- বাচাই তিস্তা,জাগো বাহে- বাচাই দেশ। বিএনপি ক্ষমতায় গেলে তিস্তারসহ বাকী নদীর যত সমস্যা আছে তাহা সমাধান করা হবে। চালু করা হবে জিয়া সরকারের আমলে খাল কাটা কর্মসূচি।
উপদেষ্টাদের সমালোচনা করে তারেক রহমান বলেন, নির্বাচনের কথা বললে আমাদের উপদেষ্টারা এক এক সময় এক এক স্বৈরচার খুনি হাসিনার পথে হাটছে। বর্তমান বিশ্বে স্থায়ী শত্রু স্থায়ী মিত্র বলতে কিছু নেই, বরং একটি দেশের সঙ্গে অপর একটি দেশের সম্পর্ক হবে পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষার বলেও জানান তিনি।
এসময় পাঁচ জেলার ১১ টি পয়েন্টের লালমনিরহাটের রেলওয়ে সেতু পয়েন্টে বিএনপি'র কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, মহিপুর পয়েন্টে বিএনপি'র স্থায়ী কমিটির সদস্য মেজর অবঃ হাফিজ উদ্দিন বীর বীক্রম, তিস্তা ব্যারেজ পয়েন্টে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বাবু গয়েশ্বর চন্দ্র রায়সহ হাজার হাজার নেতাকর্মী প্রধান অতিথির শ্রবন করেন।
কেকে/ এমএস