ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌরসভায় সহকারী প্রকৌশলী, সার্ভেয়ারসহ গুরুত্বপূর্ণ ১১১টি পদ শূন্য রয়েছে দীর্ঘদিন যাবত।বাঞ্ছারামপুর পৌরসভায় মোট পদের সংখ্যা ১১৪টি। তবে বর্তমানে মাত্র ১১জন কর্মকর্তা-কর্মচারী জোড়াতালি দিয়ে নিজস্ব জমি থাকা সত্বেও ভাড়াবাড়িতে চলছে ‘খ’ শ্রেণির বাঞ্ছারামপুর পৌরসভা।
বিশেষ করে অতি জরুরি ভিত্তিতে একজন সহকারী প্রকৌশলী জন্য থমকে আছে প্রায় ২ কোটি টাকার ৭ থেকে ৮টি টেন্ডার প্রক্রিয়া।
খুব শীঘ্রই যদি এই টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা না যায়, তাহলে দেশি-বিদেশি বরাদ্দকৃত এই টাকা ফিরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সূত্রে জানা গেছে। কারণ, টেন্ডার প্রক্রিয়ায় সহকারী প্রকৌশলীর সাক্ষরসহ অনুমোদন লাগে।
কয়েকশ ফাইল জমেছে বাড়ি নির্মাতাদের। অনুমোদন হচ্ছে না। করা যাচ্ছে না রাস্তা, ড্রেন নির্মাণ কাজ। এমনকি টেন্ডারও আহ্বান করা সম্ভব হচ্ছে না। এতে একদিকে যেমন ভোগান্তি পোহাচ্ছেন নাগরিকরা, তেমনি যে ১১ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী রয়েছে তাদের কাজ করতে রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে ।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী বদলি হয়ে যান প্রায় এক বছর আগে। সার্ভেয়ার ও উপ-সহকারী প্রকৌশলী বদলি হয়েছেন ৬ মাস আগে। সহকারী প্রকৌশলী ও শহর পরিকল্পনাবিদ নেই দীর্ঘদিন ধরে। প্রকৌশলী ও শহর পরিকল্পনাবিদ না থাকায় পৌর এলাকার বাড়ি নির্মাতারা প্ল্যান অনুমোদন নিতে পারছেন না। কয়েকশ ফাইল জমে আছে। রাস্তা, ড্রেনসহ উন্নয়ন কাজগুলোর টেন্ডার করা যাচ্ছে না।
মঙ্গলবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) পৌরসভার প্রশাসক ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) নজরুল ইসলাম এ ব্যাপারে জানান, আমি সর্বশেষ চলতি বছরের শুরুতে (গত ৯ জানুয়ারি) স্থানীয় সরকার বিভাগে প্রকৌশলীসহ বেশ কয়েকটি জরুরি শূণ্য পদের জন্য চাহিদা পত্র দিয়ে সেগুলো পূরণের জন্য আবেদন করি, কিন্তু আজও সেটি পূরণ করা হয়নি।
জানা গেছে, প্রায় ১ বছর আগে সহকারী প্রকৌশলী বদলি হয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত কাউকে পদায়ন করা হয়নি। বর্তমানে একজন উপ-সহকারী প্রকৌশলী ছাড়া পৌরসভায় কোনো প্রকৌশলী নেই। ফলে বিশ্বব্যাংক, বিএমডিএফ, ইউজিএফ-৩, এডিবিসহ পৌরসভার নিজস্ব অর্থায়নে যে কাজ করার কথা সব মুখ থুবড়ে পড়ে আছে।
তিনি বলেন, এ সব কাজ বন্ধ থাকায় জনমনে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। সরকারেরও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। কয়েকশ বিল্ডিং নির্মাণের ফাইল পড়ে আছে অনুমোদনের জন্য। প্রকৌশলী না থাকায় তাও করা যাচ্ছে না। এ অবস্থায় অনেক বিল্ডিং নির্মাতা অনুমোদন না নিয়েই কাজ শুরু করেছেন। এতে পৌরসভা রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। পাশাপাশি যথাযথ তদারকি না থাকায় জনজীবনের ঝুঁকিও বাড়ছে।
পৌরসভার কাগজপত্র পর্যালোচনা করে জানা গেছে, পৌরসভাটি ২০১৩ সালে প্রতিষ্ঠাকালে মাত্র ৩২ হাজার ১০৫ জন পৌর নাগরিক ছিলেন। দিনে দিনে বেড়েছে এর আয়তন, বেড়েছে এর জনসংখ্যাও। ‘খ’ শ্রেণির এ পৌরসভা বর্তমানে ১৬ দশমিক ৮ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে বিস্তৃতি লাভ করেছে। ৯টি ওয়ার্ডের প্রায় ৬০ হাজার মানুষ বসবাস করছেন এখানে।
কেকে/এএম