শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
৯ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

শুক্রবার, ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: আজ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস       হার দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু বাংলাদেশের      কর্মবিরতি স্থগিত, একুশে ফেব্রুয়ারি চলবে মেট্রোরেল      জামায়াত আমিরের স্বেচ্ছায় কারাবরণের ঘোষণা      অনিশ্চিয়তায় না রেখে দ্রুত নির্বাচন দিন: মির্জা ফখরুল       দুই সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার      হৃদয়ের বীরত্বগাথা সেঞ্চুরিতে লড়াইয়ের পুঁজি পেল বাংলাদেশ      
খোলাকাগজ স্পেশাল
রাজনীতিতে নতুন বিভেদ
শিপার মাহমুদ
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:০৪ এএম  (ভিজিটর : ৯৭)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

আগে জাতীয় নাকি স্থানীয় নির্বাচন এ নিয়ে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে তীব্র মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপি ও তার মিত্রদের দাবি আগে জাতীয় নির্বাচন হতে হবে। অপরদিকে, জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলনসহ কিছু দল চাচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হোক। যদিও নির্বাচন কমিশন এখনো এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। 

তবে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, এ বিভেদ দেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে আরো গভীর করতে পারে। নির্বাচন সংক্রান্ত সংবিধান ও অতীত অভিজ্ঞতার আলোকে পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে দেখা যাচ্ছে এ বিষয়ে ঐকমত্য না হলে দেশে নতুন রাজনৈতিক অস্থিরতা তৈরির সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। 

এদিকে অতিরিক্ত চাপ থেকে মুক্তি পেতে জেলা প্রশাসকরাও (ডিসি) দ্রুততম সময়ের মধ্যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে জেলা প্রশাসক সম্মেলনে বক্তব্য শেষে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। আসিফ মাহমুদ বলেন, ‘দেশে এখন জনপ্রতিনিধিরা নেই। তাদের দায়িত্বগুলো বিভাগীয় কমিশনার এবং জেলা প্রশাসকরা পালন করছেন। সেই জায়গা থেকে তাদের যে সমস্যাগুলো তৈরি হচ্ছে, আজকের ডিসি সম্মেলনে আমরা সেগুলো শুনেছি এবং এগুলো এড্রেস করেছি।’ 

অপরদিকে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের যুগ্ম মহাসচিব ও ঢাকা মহানগর উত্তর সভাপতি প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা শেখ ফজলে বারী মাসউদ বলেছেন, ‘স্থানীয় সরকার কাঠামো ভেঙে পরেছে। চেয়ারম্যান, কাউন্সিলর, পৌর মেয়র ও সিটি মেয়র কোনটাই নাই। প্রশাসক বা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা শুধু রুটিন ওয়ার্ক করতে পারে। এর চেয়ে বেশি কোন কিছু করার সুযোগ তাদের নেই।’ স্থানীয় সরকার নির্বাচন দ্রুত না হওয়ায় প্রশাসকরা স্বৈরাচারী হয়ে উঠছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন ইসলামী আন্দোলনের  এই নেতা। 

ফজলে বারী মাসউদ আরো বলেন, ‘দুর্নীতির সূতিকাগার হলো স্থানীয় সরকার ব্যবস্থা। আর স্থানীয় সরকার কাঠামো দুর্বল হলে তো দেশ দুর্নীতির মহা আখড়ায় পরিণত হবে। লোকাল গভর্নমেন্টকে দুর্নীতি ও অনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে হলে জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন করতে হবে। কারণ স্থানীয় নির্বাচনের পূর্বে যদি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়, তাহলে নির্বাচিত সংসদ সদস্য তার অনুগতদের দিয়ে একটি নিজস্ব বলয় বা সেটাপ তৈরি করবেন। যাদেরকে দিয়ে পুরো পাঁচ বছর চাল, ডাল, তেল, গম, টিন চুরি করাবেন। কাজ না করে টিআর, কাবিখার বরাদ্দ উত্তোলন করবেন। এই সিস্টেমটাকে যদি এখনই সংস্কার করা না হয়, তাহলে আগামী প্রজন্ম পূর্ববর্তী রাজনীতিবিদ এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকেই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাবে।’

জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন এ বিষয়ে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার গণমাধ্যমকে বলেন, ‘জনগণের আকাক্সক্ষা স্থানীয় সরকার নির্বাচন আগে হোক। জনগণ চায় স্থানীয় সরকার সচল হোক। আমরাও চাই আগে স্থানীয় নির্বাচন হোক।’ তিনি বলেন, ‘বিশ্বের ৬০টি দেশে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব হারে (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন-পিআর) নির্বাচন ব্যবস্থা চালু রয়েছে। দেশে এ ব্যবস্থা চালুর সুপারিশ করা হয়েছে। পেশিশক্তির প্রভাবমুক্ত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য এ ব্যবস্থা দরকার বলে আমরা সুপারিশ করেছি।’

এর আগে জাতীয় নির্বাচন নাকি স্থানীয়, কোনটি আগে চান সে বিষয়ে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির (বিজেপি) চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ। এ সময় তিনি জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় সরকার নির্বাচন চান না জানিয়ে বলেন, ‘স্থানীয় নির্বাচন দিলে সাড়ে চার হাজার ইউনিয়ন পরিষদে মারামারির একটা সম্ভাবনা আছে। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে অনেক বেশি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। গ্রাউন্ড রিয়েলিটি আলাদা। আওয়ামী লীগ গ্রাউন্ড রিয়েলিটি মেনে নিবে না। এই সন্ত্রাস কোনোভাবে যাতে না হয়।’

অন্যদিকে জাতীয় নির্বাচন সবার আগে, তারপর স্থানীয় নির্বাচনের বিষয়ে বিএনপি নিজেদের অবস্থান পরিষ্কার করেছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘ জাতীয় নির্বাচনের আগে দেশবাসী স্থানীয় সরকারের নির্বাচন মেনে নেবে না। বিএনপিও তা কখনো হতে দেবে না।’ গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় যশোরে টাউন হল মাঠে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। একই প্রসঙ্গে আরো এক ধাপ এগিয়ে কথা বলেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। তিনি বলেছেন, ‘জাতীয় নির্বাচনের আগে স্থানীয় নির্বাচন বাংলার বুকে হতে দেওয়া হবে না।’ 

গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় বৈষম্যবিরোধীদের প্রতি ইঙ্গিত করে জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘অনেকেই বলেন দিল্লি-তুরস্কের মতো দল করবেন। যে আদলে এই দল করেন, আমাদের কোনো বাধা নেই। কারণ এ দেশে বহুদলীয় গণতন্ত্রের প্রবক্তা স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান। আমাদের নেতা তারেক রহমান বলেছেন দল করেন আর দলে আসেন, দেশের বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র হচ্ছে তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান, সরকারকে সহযোগিতা করেন।’ 

ফারুক বলেন, ‘একটি দল আছে, যারা স্বাধীনতাবিরোধী ছিল। তাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই, এই সরকারকে দোষারোপ করার জন্য কী টালবাহানা শুরু করেছেন? গণতন্ত্রের স্বপক্ষের শক্তি হচ্ছে বিএনপি; তারা এখনো রাস্তায়। জনগণের অধিকার আদায়ের জন্য বিএনপি আন্দোলন সংগ্রাম করে যাবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘কোনো টালবাহানা চলবে না। টালবাহানা করে মইনুদ্দিন-ফখরুদ্দিনের মতো দুই বছর ক্ষমতায় থাকতে চাইছেন। এসব চলবে না, নির্বাচন দিতে হবে। দেশের জনগণের অধিকারের জন্য আমরা বলছি দ্রুত নির্বাচন দরকার। তাই বারবার নির্বাচনের কথা বলছি।’

কেকে/এআর
আরও সংবাদ   বিষয়:  জামায়াতে ইসলামী   ইসলামী আন্দোলন   বিএনপি  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

আজ মহান শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস
অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগে নারীসহ গ্রেফতার ৪
শরীয়তপুরে ছাত্রদলের প্রাথমিক সদস্য ফরম বিতরণ কর্মসূচি
বিএনপির এক গ্রুপের মিছিলে অপর গ্রুপের হামলা, আহত ১০
হার দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরু বাংলাদেশের

সর্বাধিক পঠিত

দুই সচিবকে বাধ্যতামূলক অবসরে পাঠাল সরকার
অযত্ন অবহেলায় রৌমারীর প্রথম শহিদ মিনার
বিএনপির এক গ্রুপের মিছিলে অপর গ্রুপের হামলা, আহত ১০
কাপাসিয়ায় গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
রিসোর্টে অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে ছাত্র-জনতার বিক্ষোভ
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝