বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের ওপর সহিংসতা নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পের বক্তব্যের পেছনে ‘স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীর’ হাত থাকতে পারে বলে মনে করছে সরকার। এ অভিযোগের কোনো সারবত্তা নেই বলে বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকে মন্তব্য করা হয়েছে। সরকার বলছে, সংখ্যালঘু নির্যাতনের বিষয়ে ‘ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জন করা হয়েছে।’
শুক্রবার ফেসবুকে এক পোস্টে ট্রাম্পের বক্তব্যের দীর্ঘ জবাব দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি লিখেছেন, স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীগুলো সাময়িকভাবে বিজয়ী হতে পারে। কিন্তু দ্রুতই তারা এটা বুঝতে পারবে, তাদের বক্তব্যের কোনো সারবত্তা নেই। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে টাকা ঢেলে বক্তব্য ছড়িয়ে বা নিউইয়র্কের গণপরিবহন ব্যবস্থা ও ভ্যানে ব্যানার টাঙিয়ে তাদের কোনো কাজে আসবে না।
যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বৃহস্পতিবার এক্সে এক পোস্টে বলেন, ‘আমি বাংলাদেশে হিন্দু, খ্রিষ্টান ও অন্য সংখ্যালঘুদের ওপর বর্বরোচিত সহিংসতার তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। দেশটিতে দলবদ্ধভাবে তাদের ওপর হামলা ও লুটপাট চালানো হচ্ছে। বাংলাদেশ এখন পুরোপুরিভাবে একটি বিশৃঙ্খল অবস্থার মধ্যে রয়েছে।’ দৃশ্যত নির্বাচনে দেশটির হিন্দু ভোটারদের ভোট টানতে ট্রাম্প বিতর্কিত এ পোস্ট দিয়েছেন।
শফিকুল আলম বলেন, বাংলাদেশে যেসব ঘটনা ঘটছে, সে বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প কী ভাবছেন, তা অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি শিগগির মুক্তবিশ্বের নেতা হতে পারেন। তবে আমাদের কাজ হলো সবচেয়ে স্বচ্ছতার সঙ্গে এবং যথাসম্ভব খোলামেলাভাবে সত্যটা তুলে ধরা।
আলোচিত নেত্র নিউজকে বাংলাদেশের সবচেয়ে শ্রদ্ধাভাজন অনুসন্ধানী সংবাদমাধ্যম হিসেবে উল্লেখ করে শফিকুল আলম লিখেছেন, তারা একটি দারুণ সাংবাদিকতা করেছে। এর মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ব্যানারে পরিচালিত কিছু মিথ্যা প্রচারণাকে তুলে ধরেছে।
শফিকুল আলম লিখেছেন, ‘আমরা জানি, বিপ্লব নিয়ে বিশেষ করে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়কে লক্ষ্য করে সহিংসতা চালানোর বিষয়ে মিথ্যা বয়ান তৈরির ক্ষেত্রে এই গোষ্ঠীর ভাষ্যগুলো একটি বড় ভূমিকা রেখেছে। আমরা এটা অস্বীকার করছি না, কিছু ধর্মীয় সহিংসতা ঘটেনি। কিন্তু সেগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনা এবং সেগুলো নিয়ে ব্যাপকভাবে অতিরঞ্জন করা হয়েছে।’
শফিকুল আলম লিখেছেন, শুরু থেকেই ড. মুহাম্মদ ইউনূস সব বিদেশি সাংবাদিক, গবেষক ও বিশেষজ্ঞদের বাংলাদেশে আসার পক্ষে বলেছেন। ড. ইউনূস বলেছেন, তাদের নিজেদের মতো করে বাংলাদেশকে দেখতে ও বুঝতে দাও। কী কারণে আমরা আমাদের সমাজ, আমাদের জনগণ, আমাদের দেশ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী, তা তারা দেখুক।
কেকে/এমআই