রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫,
১১ ফাল্গুন ১৪৩১
বাংলা English

রবিবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫
শিরোনাম: হামাস মুক্তি দিলেও, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু      মাথায় লাল কাপড় বেঁধে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা      জামায়াত নেতা এটিএম আজহারের রিভিউ শুনানি মঙ্গলবার      গণপরিবহন নৈরাজ্যে ভুগছে ঢাকাবাসী      দুষ্কৃতকারীরা জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে: র‍্যাব      গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়ে বিভক্ত দায়িত্বশীলরা      ডেভিল হান্টের মধ্যেও সক্রিয় অপরাধীরা      
গ্রামবাংলা
কেউ শুনছেই না ঢোলভাঙ্গা নদীর কান্না!
বাঞ্ছারামপুরে ড্রেজিংয়ের অভাবে শুকিয়ে যাচ্ছে ঢোলভাঙ্গা নদী
ফয়সল আহমেদ খান, বাঞ্ছারামপুর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া)
প্রকাশ: বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৩:৫৮ পিএম  (ভিজিটর : ২৪৫)
 মৃতপ্রায় ঢোলভাঙ্গা নদী আজকে তোলা ছবি: খোলা কাগজ

মৃতপ্রায় ঢোলভাঙ্গা নদী আজকে তোলা ছবি: খোলা কাগজ

মেঘনার শাখা নদী তিতাস অববাহিকায় ঢোলভাঙ্গা নদীটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার জন্য ছিল অতীব গুরুত্বপূর্ণ। কী সামাজিকভাবে, কী অর্থনৈতিক-কৃষি, কী শিল্প বা পরিবহনের জন্য কিন্তু ঢোলভাঙ্গা নদীর গতিপথ বন্ধ হয়ে গেছে কেবল ড্রেজিংয়ের অভাবে। এ ছাড়া দূষণ ও দখলের কারণে হারিয়ে যাচ্ছে উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ নদীটি।
 
হারিয়ে যাচ্ছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার জেলার বাঞ্ছারামপুরের  একসময়ের খরস্রোতা প্রাণের ঢোলভাঙ্গা নদীটি। বর্তমানে এটি বদ্ধ জলাশয়ে পরিণত হয়েছে। বর্তমানে এই নদীর বেশির ভাগ স্থানে শুষ্ক মৌসুমে নৌকা চলাচলের মতো পানি থাকে না। কোথাও কোথাও একেবারে শুকিয়ে যায়।

নদ-নদী দেশের প্রাণ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ঢোলভাঙ্গা বন্ধ মানে নৌপথ বন্ধ। নৌপথ বন্ধ মানে ব্যবসায়ীরা মালামাল উচ্চ ভাড়ায় সড়ক পথে মালামাল আনছেন। যেটি আগে ছিল না।

উপজেলার পৌর এলাকার  প্রধান বাজারের সব বর্জ্য এখানে নিয়মিত ফেলায় বন্ধ হয়ে গেছে নদীর গতিপথ। দূষণের গন্ধে নাকে রুমাল চেপে পারি দিতে হয় উপজেলার সংযোগ সেতুর ওপর দিয়ে।

পৌর শহরের চক বাজারের প্রবীণ ব্যবসায়ী মুরতুজ মিয়া বলেন, ‘আগে বাজারের ব্যবসায়ীরা নৌপথে নারায়ণগঞ্জ-নরসিংদী থেকে চাল, ডাল-আটা ময়দা, তেল-নুন সব আনত। বন্ধ হওয়াতে বাড়তি খরচ যেয়ে বর্তায় সাধারণ মানুষের ঘাড়ে। নদীটি যদি রক্ষা করা না হয়, একদিন বাঞ্ছারামপুরবাসী হারানো ঢোলভাঙ্গার জন্য কাঁদবে’।

ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ


ব্রাহ্মবাড়িয়ার জেলার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার ঢোলভাঙ্গা নদী। পানি না থাকায় স্থানীয়ভাবে আমদানি করা বিভিন্ন জিনিস আটকে আছে। আটকে আছে যাত্রীবাহী নৌকাও। নদীর তীর দখল করে প্রভাবশালীরা একটু একটু করে দখল করছেন বলে অভিযোগ করেন স্থানীয় সমাজসেবী মোহাম্মদ উল্লাহ। তিনি বলেন, আমরা প্রয়োজনে প্রশাসনের কাছে ঢোলভাঙ্গা নদী খননের জন্য হাজার-হাজার মানুষের ফরিয়াদ লিখিতকারে জমা দিব।
 
এলাকাবাসী অভিযোগ করে জানান, আমাদের আশপাশের সব ময়লা-আবর্জনা ফেলার কোনো নির্দিষ্ট স্থান না থাকার কারণে বর্তমানে নদীতে ফেলতে হচ্ছে আমাদের সব বর্জ্য। তাই বর্তমানে আমাদের ময়লা-আবর্জনা ফেলার কারণে ঢোলভাঙ্গা নদীর অবস্থা দিনে দিনে অনেকটইা নোংরা হয়ে যচ্ছে।
ঢোলভাঙ্গা নদীতে যেন ময়লা-আবর্জনা আর ফেলতে না হয় তার জন্য পৌরসভার কাছে দাবি জানান স্থানীয় ব্যবসায়ীরা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর পৌরসভার ময়লা-আবর্জনা ফেলা হচ্ছে ঢোলভাঙ্গা নদীতে। এ অবস্থায় ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদী। বাড়ছে দূষণ। ছড়িয়ে পড়ছে রোগব্যাধি। দূষণে নদীর পানি ব্যবহারের অনুপোযোগী হয়ে পড়েছে। দেখা যায়, বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার প্রতাবগঞ্জ বাজারের মাংসপট্টি, পোলট্রি মুরগি বিক্রির দোকান এবং কাঁচা তরকারির দোকান রয়েছে। প্রতিদিন খোলা জায়গায় জবাই করা গরু-ছাগল, মুরগির রক্ত, বিষ্ঠা, পঁচা মাছ এবং তরকারি আবর্জনা যেখানে সেখানে ফেলে রাখা হয়।

বাংলাদেশ সরকারের জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব প্রকৌশলী আল আমীন বলেন, ‘বাঞ্ছারামপুর গ্রামে আমার জন্ম হওয়ায় কিছু দিন আগে তিতাস নদী যখন ড্রেজিং করা হয়  তখন সংশ্লিষ্ট প্রকল্প পরিচালকের সঙ্গে এই নদীটির খনন করা যায় কিনা এ বিষয়ে চেষ্টা‌ করেছিলাম।‌ দুর্ভাগ্যের বিষয় হলো, যখন এ বিষয়ে আলোচনা করেছিলাম ততদিনে তিতাস নদী খননের সংশোধিত ডিপিপি অনুমোদিত হয়ে যায় ফলে তিতাস নদী খননের  কাজটি সঙ্গে ঢোলভাঙ্গা নদী খননের কাজটির আর অগ্রগতি করতে পারিনি।‌ পরবর্তীতে কোনো একসময় যখন আবার গ্রামে যাই তখন লোক মুখে জানতে পারি ভেকু দিয়ে দুপাড়ের কিছু খনন হয়েছে বটে তবে নদীটির নাব্যতা ফিরে পায়নি।’

বিআইডব্লিউটিএ-এর নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আব্দুর রহমান বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) মুঠোফোনে এ প্রসঙ্গে বলেন, স্থানীয় এলাকাবাসী ও ইউএনও যদি নদী খননের জন্য চাহিদাপত্র দেয়, তা হলে আমরা বিষয়টি নিয়ে পদক্ষেপ নিব।’

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বলেন, ‘ঢোলভাঙ্গা নদীর ড্রেজিংয়ের বিষয়ে আমি ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডের  সঙ্গে কথা বলেছি। জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নদী খননের তালিকায় এটির নাম অন্তর্ভুক্ত আছে এবং খননের সুপারিশ পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে মর্মে সংশ্লিষ্ট দপ্তর হতে জানান। এ ছাড়া দখল ও দূষণ প্রতিরোধে অভিযান চলমান থাকবে।’


কেকে/এএস

আরও সংবাদ   বিষয়:  ঢোলভাঙ্গা   বাঞ্ছারামপুর   খরস্রোতা  
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

নওগাঁয় সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি
চকরিয়ায় বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত
হামাস মুক্তি দিলেও, ফিলিস্তিনিদের মুক্তি আটকে দিলেন নেতানিয়াহু
উলাইল প্রমথ চন্দ্র বিদ্যায়তনে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন
মাথায় লাল কাপড় বেঁধে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে কুয়েট শিক্ষার্থীরা

সর্বাধিক পঠিত

শাবি ক্যাম্পাসে কর্মীসভার অনুমতি না পাওয়াকে ষড়যন্ত্র বলছে ছাত্রদল
বাকৃ‌বি‌তে জন্ম নি‌রোধকসহ ৫ ছিনতাইকারী আটক
লোহাগাড়া প্রবাসী মানবিক ফাউন্ডেশনের ফ্রি চিকিৎসা সেবা
বৈষম্যবিরোধীদের নতুন সংগঠনের আত্মপ্রকাশ
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ডিজিটাল ইউনিভার্সিটির নাম পরিবর্তনের দাবিতে মানববন্ধন

গ্রামবাংলা- এর আরো খবর

সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝