নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লায় রপ্তানিমুখী পোশাক কারখানা ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহাল ও হামলার অভিযোগে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা প্রায় চার ঘণ্টা সড়ক অবরোধ করেছেন।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ সংযোগ সড়ক অবরুদ্ধ করে রেখেছেন তারা। এতে তীব্র যানজটে ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকা-নারায়ণগঞ্জগামী যাত্রীরা সহ স্থানীয়রা।
শ্রমিকদের দাবি, ১৮ ফেব্রুয়ারি কারখানার ৯৫ জন শ্রমিককে বিনা কারণে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরদিন সকালে কারখানায় প্রবেশ করতে গেলে শ্রমিকদের ওপর স্টাফ ও বহিরাগতদের দিয়ে হামলা চালানো হয়। এতে কয়েকজন শ্রমিক আহত হন।
অবরোধকারী শ্রমিক কালাম বলেন, আমরা সকালে কারখানায় ঢুকতে গেলে আমাদের ওপর হামলা করা হয়। কয়েকজন শ্রমিক কাঁচের টুকরোর আঘাতে আহত হয়েছেন।
আরেক শ্রমিক মাহমুদা অভিযোগ করে বলেন, ‘এর আগেও শ্রমিকদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে এবং বহু শ্রমিককে ছাঁটাই করা হয়েছে। আমাদের আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল, সব ঠিক হবে। কিন্তু ফের ৯৫ জন শ্রমিককে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে এবং আজ আমাদের মারধর করা হয়েছে। যতক্ষণ পর্যন্ত ছাঁটাইকৃত শ্রমিকদের পুনর্বহাল করা না হবে, ততক্ষণ আমরা রাস্তায় থাকব।’
ছাঁটাই প্রসঙ্গে কারখানার বাইরে ঝুলিয়ে দেওয়া নোটিশে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ শ্রম আইন ২০০৬-এর ধারা ২৬ মোতাবেক সকল পাওনা পরিশোধ করে শ্রমিকদের চাকরিচ্যুত করা হবে। পরিচয়পত্র ফেরত দিলেই পাওনাদী গ্রহণ করা যাবে।
এদিকে, নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কয়েকজন জানায়, শ্রমিকরা ছাঁটাইয়ের প্রতিবাদ জানাতে এসে কারখানার ভেতরে ঢুকে ভাঙচুর চালান এবং স্টাফদের মারধর করেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেলে স্টাফরা পালিয়ে যান।
এর আগে ইউরোটেক্স নিটওয়্যার লিমিটেডের শ্রমিকরা গত ১০ ফেব্রুয়ারি বকেয়া বেতনের দাবিতে কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ করেন। ১৬ ফেব্রুয়ারি মালিকপক্ষ শ্রম আইনের ১৩(১) ধারা অনুযায়ী কারখানা বন্ধের নোটিশ দেয়। এরপর ১৭ ফেব্রুয়ারি শ্রমিকরা সাড়ে তিন ঘণ্টা চাষাড়া সড়ক অবরোধ করেন।
এদিকে অবরোধের সময় ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ শ্রমিকদের সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে মালিকপক্ষের সঙ্গে মীমাংসার প্রস্তাব দেয়। তবে শ্রমিকরা প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে দাবি জানান, মালিকপক্ষকে সড়কে এসে তাদের সঙ্গে কথা বলতে হবে। নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশ মালিকপক্ষকে সরাসরি শ্রমিকদের সামনে আনতে অস্বীকৃতি জানায়।
পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তবে এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে।
কেকে/ এমএস