মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫,
১৮ চৈত্র ১৪৩১
বাংলা English

মঙ্গলবার, ১ এপ্রিল ২০২৫
শিরোনাম: চীন সফর শেষে দেশে পৌঁছেছেন প্রধান উপদেষ্টা      চাঁদ দেখা গেছে, সৌদি আরবে ঈদ রোববার      দেশবাসীকে ঈদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন চরমোনাই পীর      ঈদের দিন বন্ধ থাকবে মেট্রোরেল      অস্ট্রেলিয়ায় ঈদুল ফিতরের তারিখ ঘোষণা      ঈদের ছুটিতে পর্যটক বরণে প্রস্তুত মৌলভীবাজার      রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে সহায়তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত চীনের      
খোলাকাগজ স্পেশাল
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের কৃতিত্ব নিয়ে বাহাস
খোলা কাগজ প্রতিবেদক
প্রকাশ: বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫, ৯:৪৪ এএম আপডেট: ২০.০২.২০২৫ ৯:৫০ এএম  (ভিজিটর : ১৩৫)
ছবি: খোলা কাগজ

ছবি: খোলা কাগজ

শিক্ষার্থীদের নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের আগেই শুরু হয়েছে কৃতিত্ব নিয়ে বিতর্ক। জুলাই অভ্যুত্থানের ইতিহাস ও নেতৃত্ব নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন মহলে চলছে তর্কবিতর্ক। মূলত বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, জাতীয় নাগরিক কমিটি ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে মতবিরোধ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। 

যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ ভূঁইয়া তার ভেরিফায়েড পেজে লেখেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করা যাবে না। তার সুরে সুর মিলিয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মুখ্য সংগঠক হান্নান মাসউদও আন্দোলনে নিজেদের ভূমিকা তুলে ধরেন। অন্যদিকে, ছাত্রশিবিরের পক্ষ থেকে বলা হয়, ক্যামেরার সামনে থাকলেই আন্দোলন করা যায় না, বরং বাস্তব মাঠপর্যায়ে সক্রিয়তার গুরুত্ব বেশি। 

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সাবেক নেতারা ফেসবুকে দাবি করেছেন যে গত বছরের ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকার উৎখাতের আন্দোলনে ‘প্রধান অংশীদার’ ছিলেন তারা। তবে বর্তমানে বিলুপ্ত গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির নেতারা বলছেন শিবিরের নেতাকর্মীরা অন্য সবার মতোই অভ্যুত্থানে অংশ নিয়েছিলেন। 

শিবিরের অনেক সাবেক ও বর্তমান নেতা ফেসবুকে লিখেছেন যে কীভাবে তারা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কারীদের আশ্রয় দিয়েছেন, দেশি ও বিদেশি যোগাযোগ সমন্বয় করেছেন, বিক্ষোভের পরিকল্পনা করেছেন এবং কর্মীদের মাঠে সংগঠিত করেছেন। এর জবাবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক আব্দুল কাদের লিখেছেন, সমন্বয়কেরাই ৯ দফা দাবি তৈরি করেছিলেন এবং শিবির কেবল তা প্রচার করেছে। 

জুলাইয়ের অভ্যুত্থানের অন্যতম সময়ন্বয়ক এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদও আলোচনায় যোগ দেন। ‘... জুলাই গণঅভ্যুত্থানের ইতিহাস বিকৃত করবেন না। এ প্রজন্মের রক্তের অর্জন জুলাই গণঅভ্যুত্থান নিয়ে মিথ্যাচার টলারেট করব না। সবকিছু নিয়ে চুপ থাকলেও এটা নিয়ে চুপ থাকা যায় না। ইতিহাস দখলের নোংরা খেলা বন্ধ করুন,’ ফেসবুকে লিখেছেন তিনি। 

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এ নিয়ে তর্কবিতর্কের মধ্যে শিবির সভাপতি জাহিদুল ইসলাম এ বিষয়ে বলেন, ‘সত্য ইতিহাস জানা জরুরি। তবে যারা ক্রেডিট ভাগাভাগি নিয়ে জাতীয় ঐক্য বিনষ্ট করার চেষ্টা করছেন, তৃতীয় পক্ষকে সুযোগ করে দিচ্ছেন, ভবিষ্যত প্রজন্ম আপনাদের ক্ষমা করবে না।’ 

আন্দোলনের সময় শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি এবং বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়কারী মো. আবু সাদিক কায়েম লিখেছেন, ‘অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজের দিকে ফোকাস না দিয়ে ক্ষমতার কেন্দ্রে থাকার জন্য যে বাদানুবাদ হচ্ছে, তা শহিদদের সঙ্গে তামাশা করার শামিল।’

২০২৩ সালের অক্টোবরে গঠিত ছাত্রশক্তি এবং প্রকাশ্যে সক্রিয় না থাকা শিবির এ অভ্যুত্থানের নেতৃত্বদানকারী বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক হিসেবে কাজ করেছে। আন্দোলনে জড়িত বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে গত বছরের ৮ সেপ্টেম্বর জাতীয় নাগরিক কমিটি নামে আরেকটি প্লাটফর্ম গঠন করা হয়। 

নাগরিক কমিটির ১৮৮ সদস্যের কেন্দ্রীয় কমিটিতে আছেন ছাত্রশক্তির নেতারা, শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার অন্তত তিন জন সাবেক সভাপতি, কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক সংগঠন, ছাত্র অধিকার পরিষদ, এবি পার্টি, ছাত্র ইউনিয়ন এবং ছাত্র ফেডারেশনের প্রতিনিধিরা। 

জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্থা শারমিন মনে করেন, অভ্যুত্থান যদি কোনো নির্দিষ্ট দল বা আদর্শ দ্বারা সংগঠিত হতো, তাহলে সংশ্লিষ্টরা সে দলের সঙ্গেই থাকতেন। কিন্তু নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের চিন্তা থেকেই বোঝা যায়, বিদ্যমান আদর্শ বা সংগঠনগুলোর সঙ্গে আর একসঙ্গে চলা সম্ভব হচ্ছে না।

ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘এই অভ্যুত্থানে কোনো একক ব্যক্তি মাস্টারমাইন্ড ছিলেন না। কারো একক কৃতিত্বও নেই। সবাই মিলে আন্দোলন সফল করেছেন, তাই সবাইকেই কৃতিত্ব দিতে হবে। আমরা চাই, সঠিক ইতিহাস উঠে আসুক, বিকৃত না হোক। তবে দুঃখজনকভাবে অতীতের মতো এবারও ইতিহাস বিকৃতির চেষ্টা চলছে।’ 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও অর্থনীতিবিদ রুশাদ ফরিদী মনে করেন, কৃতিত্ব নেওয়ার প্রতিযোগিতায় এখন কিছু নেতা নিজেদের অতীত ভূমিকা নিয়ে নতুন ব্যাখ্যা দিচ্ছেন, যা সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নাও হতে পারে। তবে সব পক্ষই এক বিষয়ে একমত ২০২৪ সালের আন্দোলনের ইতিহাস যেন বিকৃত না হয়।

তবে অনেকে বলছেন শেখ হাসিনা পালানোর পর, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সমন্বয়ক, হাসনাত আব্দুল্লাহ, সারজিস আলম আব্দুল কাদের পুরো আন্দোলনে ছাত্রশিবিরের ভূমিকা তুলে ধরেছেন। তাহলে এখন বিষয়টি নিয়ে নতুন করে বিতর্কের কিছু নেই। বরং, এখন কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ গড়ার সময়। সবাই যেন সেদিকে মনোযোগী হয়। 

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সংগঠন এবং এর নাগরিক প্ল্যাটফর্ম জাতীয় নাগরিক কমিটি এ মাসের শেষের দিকে একটি নতুন রাজনৈতিক দল ঘোষণা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। অভ্যন্তরীণ সূত্র জানিয়েছে নতুন দলের আহ্বায়ক কমিটির শীর্ষ পদ নিয়ে নাগরিক প্লাটফর্ম অন্তত তিনটি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়েছে।

উপদেষ্টা নাহিদ ইসলাম নতুন দলের আহ্বায়ক হচ্ছেন এটি প্রায় নিশ্চিত হলেও সদস্যসচিব পদ নিয়ে মতবিরোধ দেখা দিয়েছে। জাতীয় নাগরিক কমিটির সূত্র জানিয়েছে, উপদেষ্টা মাহফুজ আলম চান নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক নাসিরউদ্দিন পাটোয়ারী নতুন দলের শীর্ষ নেতৃত্বে থাকুন। 

অন্যদিকে নাগরিক কমিটিতে থাকা সাবেক শিবির কর্মীরা চান শিবিরের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সভাপতি এবং নাগরিক কমিটির নির্বাহী কমিটির সদস্য আলী আহসান জুনায়েদ নতুন দলের দ্বিতীয় শীর্ষ পদে আসুক। সূত্র জানিয়েছে, নীতিনির্ধারকরা সাবেক শিবির নেতাদের জায়গা দিতে এবং সম্ভাব্য ভাঙন এড়াতে সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এবং সিনিয়র সদস্যসচিব পদ তৈরির কথা ভাবছেন।

কেকে/এআর
মতামত লিখুন:

সর্বশেষ সংবাদ

ঈদের নামাজ শেষে জিলাপির টাকার হিসাব নিয়ে সংঘর্ষ
আপনার সন্তান সারাক্ষণ মোবাইলে মুখে গুঁজে?
‘দেবী মা সর্বদা সঙ্গে আছেন’
ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল পাকিস্তানের বালোচিস্তান
বিশ্ববাজারে সোনার দামে রেকর্ড

সর্বাধিক পঠিত

শৈশবের ঈদ বনাম আধুনিক ঈদ
ঈদের কেনাকাটার আনন্দে নতুন জুটি, আসছে ‘ঈদ শপিং’
মাদক সেবীদের পক্ষ নিয়ে সাংবাদিক পেটালেন যুবদল নেতা গেন্দা
লোহাগাড়ায় বাস সংঘর্ষে নিহত ৫
সাংবাদিক মন্জুর ক্যান্সার আক্রান্ত মায়ের পাশে এমপি প্রার্থী আইউবী
সম্পাদক ও প্রকাশক : আহসান হাবীব
বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয় : বসতি হরাইজন, ১৭-বি, বাড়ি-২১ সড়ক-১৭, বনানী, ঢাকা-১২১৩
ফোন : বার্তা-০২২২২২৭৬০৩৭, মফস্বল-০২২২২২৭৬০৩৬, বিজ্ঞাপন ও সার্কুলেশন-০২২২২২৭৬০২৯, ০১৭৮৭৬৯৭৮২৩, ০১৮৫৩৩২৮৫১০ (বিকাশ)
ই-মেইল: [email protected], [email protected]

© 2024 Kholakagoj
🔝
close