চট্টগ্রামের রাউজানে হাসান (৩২) নামের এক যুবলীগ কর্মীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল মুখোশধারী দুর্বৃত্ত।
বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) রাত সাড়ে ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ক্যাম্পে পুলিশের উপপরিদর্শক মো. আলাউদ্দিন তালুকদার।
নিহত যুবলীগ কর্মী মো. হাসান রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডে আহমেদ হোসেন মেম্বারের বাড়ির মো. বজল আহমেদ ড্রাইভারের ছেলে। তার পৈতৃক বাড়ি বোয়ালখালী উপজেলায় কধুরখীল ইউনিয়নে হলেও ছোট থেকে তার নানার বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ায় বসবাস করতেন। সে এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আওয়ামী লীগের শাসনামলে হাসান যুবলীগ নেতা মোবারকের সহযোগী ছিলেন। ২০১৩ সালে মোবারককে একদল সন্ত্রাসী কুপিয়ে হত্যা করে। গত ৫ আগস্টের পর থেকে আওয়ামী লীগের অন্যান্য নেতাকর্মীর মতো হাসানও আত্মগোপনে ছিলেন। গত মঙ্গলবার রাতে হাসান বাড়িতে যান।
গত বুধবার সন্ধ্যায় তাকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। পরে চৌধুরীহাট বাজারের এক পাশে নিয়ে তাকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করা হয়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াপাড়া পথেরহাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় রাত ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক হাসানকে মৃত ঘোষণা করেন।
পুলিশ ও পরিবার সূত্রে জানা যায়, গত বুধবার বিকাল ৪টার দিকে নিহত মো. হাসান বাড়িতে অবস্থানকালে কয়েকজন মুখোশধারী দুর্বৃত্ত ঘরে প্রবেশ করে তাকে ধরে নিয়ে যায়। পরে তাকে মারধর করে পার্শ্ববর্তী রাত ১০টার পর খবর পেয়ে তিনি চৌধুরীহাট বাজারে গিয়ে দেখেন,একটি অটোরিকশায় তার স্বামী পড়ে আছেন। তার স্ত্রী ঝিনু আক্তারসহ স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিহতের ঝিনু আকতারের কাছে মামলার এ বিষয়ে চাইলে বলেন, ‘যে যাবার সে গেছে। নিজেরা নিরাপদে থাকতে চাই। তাই মামলা বা অভিযোগ নিয়ে কিছু বলতে চাই না।’ তিনি আরো বলেন, গত তিন বছর আগে হাসান রাজনীতি থেকে দূরে সরে যান।
উল্লেখ্য, গত ২৪ জানুয়ারি একই ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আসাদ আলী মাতব্বর পাড়ায় জুমার নামাজ আদায় ও বাবা-মায়ের করব জেয়ারত করতে আসার পথে চাকতাইয়ের শুটকি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গী আলম দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন। এই ঘটনার ১০ দিন পর তার ছেলে মো. মাকসুদ বাদী হয়ে ২৫/৩০ অজ্ঞাত আসামি করে মামলা দায়ের করেন।
এ বিষয়ে রাউজান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম ভূঁইয়া বলেন, যুবলীগের এক সন্ত্রাসীর সহযোগী ছিলেন হাসান। তাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল সন্ত্রাসী। হাসানের নামে মামলা আছে কি না, সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
কেকে/ এএস