খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) ঘটনাটি একেবারেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের। তার সাথে শিবিরের কোন সম্পর্ক নেই। যারা এটিকে শিবিরের সাথে মেলাতে চাচ্ছেন তাদের হীন উদ্দেশ্য রয়েছে। বরং যারাই ‘শিবিরের ওপর দায় চাপিয়ে দাও’ রাজনীতি করেন এটি তাদেরই অপপ্রচার।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে খুলনা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির আয়োজিত সায়েন্স ফেস্ট পরিদর্শন ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তিনি মূলত খুলনা আসেন। খুলনা সফরকালে তিনি জুলাই আন্দোলনে আহতদের এবং শহীদ পরিবারের সদস্যদের সাথেও সাক্ষাৎ করেন। খুলনা সফরের অংশ হিসেবে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময়কালে মঙ্গলবার খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের(কুয়েট) উদ্ভুত পরিস্থিতি প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠলে তিনি সেটি নিয়েও খোলামেলা কথা বলেন।
বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেছেন, যে ছাত্র রাজীতির কারনে মানুষ খুন হতে হয়, মায়ের, ভাইয়ের, বোনের বুক খালি হতে হয় সে ছাত্র রাজনীতি আমরা চাইনা। বরং যে ছাত্র রাজনীতির মধ্যদিয়ে মেধার চর্চা, সেবামূলক প্রতিযোগিতা, রাজনৈতিক সচেতনতা, গঠণমূলক রাজনীতি এবং ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব তৈরি হবে আমরা সেই ছাত্র রাজনীতি চাই। এ প্রসঙ্গে তিনি বুয়েটের আবরার প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। বলেন, কুয়েটে সেই ছাত্র রাজনীতিকে লালকার্ড দেখানো হয়েছে যে ছাত্র রাজনীতি বুয়েটের আবরার ফাহাদকে হত্যা করেছে। বিগত ১৫ বছরে ক্যাম্পাসগুলোতে ছাত্রলীগ যে কালচার শুরু করেছিল তা’থেকে বের হয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনৈতিক চর্চা করতে হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ছাত্রশিবির সে কাজটিই করছে।
‘ছাত্রশিবির একটি গুপ্ত সংগঠন’ বলে ছাত্রদলের সংবাদ সম্মেলন থেকে যে মন্তব্য করা হয় সে প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিগত ১৫ বছর ধরে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের ১৩২টি শাখার প্রতিটিতেই প্রতি বছর জানুয়ারি মাসে সেটআপ সম্পন্ন হয়। পাল্টা প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ওই ১৫ বছরে ছাত্রদলের কোন কমিটি যথা সময়ে হয়েছে কি না? বরং আমরা দেখেছি বিভিন্ন স্থানে ছাত্রদলের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে গ্রæপিং লবিং হয়েছে। সুতরাং যারা নিজেদের সংগঠনকেই ঠিকমতো চালাতে পারে না তাদের মুখে অন্য সংগঠন নিয়ে এমন মন্তব্য কেবলই হাস্যকর’।
ছাত্রদলকে আমরা বন্ধু প্রতীম সংগঠন মনে করি’ উল্লেখ করে শিবির সভাপতি বলেন, ‘আসুন দোষারোপের রাজনীতি বন্ধ করে কার কতটুকু অর্জন তা জাতির সামনে তুলে ধরি। জাতি যদি আপনাদেরকে গ্রহণ করে তাহলে আমরা সাধুবাদ জানাবো। আর যদি আমাদেরকে গ্রহণ করে তাহলে ঐক্যবদ্ধভাবে পরবর্তী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিতে কাজ করবো।’
বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে তথা ছদ্মনামে ছাত্রশিবির বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করছে বলে ছাত্রদলের যে অভিযোগ সে প্রসঙ্গে শিবির সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা বিরোধী আন্দোলনের সময়তো এমন প্রশ্ন কেউ করেননি। তাহলে এখন কেন ?
ছাত্রশিবির গুপ্ত সংগঠন নয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, শিবির আগেও যেমন তাদের সাংগঠনিক কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে তেমনি ৫ আগষ্টের সরকার পতনের পরও আহতদের পাশে যাওয়া, শহীদ পরিবারের পাশে থাকা, ক্যাম্পাসে মেধার চর্চা করা ইত্যাদি কর্মকান্ড পরিচালনা করছে। তার খুলনা সফরও বিজ্ঞানভিত্তিক ক্যাম্পাস গড়ার অংশ এবং মেধাবী শিক্ষার্থী তৈরির মধ্যদিয়ে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার অংশ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
মতবিনিময় সভায় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, শিবিরের কেন্দ্রীয় স্কুল কার্যক্রম সম্পাদক মু. নোমান হোসেন নয়ন, খুলনা মহানগর সভাপতি আরাফাত হোসেন মিলন, সেক্রেটারি রাকিব হাসান, সাহিত্য সম্পাদক বেলাল হোসেন,সমাজসেবা সম্পাদক আব্দুর রশিদ, সরকারি আযম খান কমার্স কলেজ শাখার সভাপতি তারেখ হোসেন প্রমুখ।
কেকে/ এমএস